অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা
যাঁরা বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমাতে চান, তাঁদের জন্য চমৎকার গন্তব্য হতে পারে অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করার পাশাপাশি খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, দেড় শতাধিক দেশের শিক্ষার্থীরা দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। বাংলাদেশেরও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন দেশটিতে।
অস্ট্রেলিয়ার অধিকাংশই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়
অস্ট্রেলিয়ায় বেশির ভাগই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। হাতে গোনা কিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে। কাজের সুযোগ বেশি থাকার কারণে বাংলাদেশ থেকে আগত শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই সিডনি, মেলবোর্ন, ক্যানবেরা ও পার্থের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা করেন। ভর্তি, বিশ্ববিদ্যালয়, পড়াশোনা, খরচসহ দরকারি সব তথ্য পাবেন অস্ট্রেলিয়া সরকার পরিচালিত এসব সাইটে- www.studyinaustralia.gov.au, www.aei.gov.au, bangladesh.idp.com ।
আবেদন ও ভর্তি প্রক্রিয়া
অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত বছরে সেশন শুরু হয় বছরে দু’বার- ফেব্রুয়ারি ও জুলাই/আগষ্ট-এ। সেশন শুরু হওয়ার আড়াই থেকে তিন মাস আগেই আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা ভালো। বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স ভেদে সাধারণত আইইএলটিএস-এ ৬.০ থেকে ৬.৫ স্কোর চাওয়া হয়। আবেদনের নিয়ম, নির্দেশনা এবং বিভিন্ন ফি সম্পর্কে জানা যাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে। ভর্তি আবেদনের পর কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে যোগ্য শিক্ষার্থীর ঠিকানায় অফার লেটার পাঠিয়ে থাকে। অফার লেটার হাতে পাওয়ার পর স্টুডেন্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজসহ আবেদন করতে হবে অস্ট্রেলিয়ান ভিসা অ্যাপলিকেশন সেন্টারের এ ঠিকানায়- ভিএফএস বাংলাদেশ, জেডএন টাওয়ার, দ্বিতীয় তলা, প্লট-২, রোড-৮, ব্লক এসডব্লিউ (১), গুলশান এভিনিউ, ঢাকা (ওয়েব: www.vfs-au.com.bd)। প্রসঙ্গত, সাধারনত ভিসা আবেদনের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসে আবেদন করতে হয়, তবে অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের ক্ষেত্রে তাদের অনুমোদিত ‘ভিসা আবেদন কেন্দ্র’তে আবেদন করতে হয়।
ভিসার আবেদনের সময় যে কাগজপত্র লাগবে
সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রেরিত অফার লেটার, পাসপোর্ট, আর্থিক সামর্থ্যের নিশ্চয়তাপত্র, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, জন্ম সনদ, সব পরীক্ষার সনদ ও নম্বরপত্র, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, আইইএলটিএস পরীক্ষার সনদপত্র এবং স্পনসর-সংক্রান্ত কাগজপত্র। স্টুডেন্ট ভিসা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভিজিট করুন অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট www.immi.gov.au।
খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ
বিদেশি শিক্ষার্থীরা প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ পেয়ে থাকে। অস্ট্রেলিয়ায় কাজের পারিশ্রমিক তুলনামূলকভাবে অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। খণ্ডকালীন কাজে অর্জিত অর্থ দিয়ে একজন শিক্ষার্থী অনায়াসে থাকা-খাওয়ার খরচ মেটাতে পারে। রেস্তোরাঁ, ক্লাব, দোকান, প্রেস, ডাটা-এন্ট্রির মতো কাজ করে সাধারণত ঘণ্টায় ১০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার উপার্জন করা যায়। উল্লেখ্য, এক অস্ট্রেলিয়ান ডলার প্রায় ৬৪ টাকার সমান।
শিক্ষার্থীদের জন্য অস্ট্রেলিয়া সরকারের বৃত্তি
পড়তে আসা বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতিবছরই বৃত্তি দিয়ে থাকে অস্ট্রেলিয়া সরকার। তা ছাড়া দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সংস্থা শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি দিয়ে থাকে। অস্ট্রেলিয়া সরকারের ‘অস্ট্রেলিয়ান এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট’ (এইউএসএইড) প্রতিবছরই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ‘অস্ট্রেলিয়ান ডেভেলপমেন্ট স্কলারশিপ’-এর আওতায় বৃত্তি দিয়ে থাকে। ‘সাউথ এশিয়া স্কলারশিপ প্রোগ্রাম’ শিরোনামে অস্ট্রেলিয়া সরকারের আরেকটি বৃত্তি প্রোগ্রাম রয়েছে। এ বৃত্তির আওতায় বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর উচ্চশিক্ষার সুযোগ পায়। বৃত্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন এ দুই ওয়েবে- www.ausaid.gov.au, www.southasiascholarship.org
অস্ট্রেলিয়ার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়
ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্ন (www.unimelb.edu.au)
ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ড (www.uq.edu.au)
ইউনিভার্সিটি অব সিডনি (www.usyd.edu.au)
মোনাশ ইউনিভার্সিটি (www.monash.edu.au)
ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস (www.unsw.edu.au)
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (www.anu.edu.au)
ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডিলেড (www.adelaide.edu.au)
গ্রন্থনা: হাবিবুর রহমান তারেক
সূত্র: কালের কণ্ঠ । শিরোনাম : পড়তে চান অস্ট্রেলিয়ায়? । তারিখ: ২৩ মার্চ ২০১০ *পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাটির অনেক তথ্য হালনাগাদ করা হয়েছে এ পোষ্টে