লেখাপড়া

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার প্রশ্ন কাঠামো ও মানবন্টন ২০২২

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার প্রশ্ন কাঠামো ও মানবন্টন ২০২২ প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলাভিত্তিক এই বৃত্তি পরীক্ষা। প্রাথমিক অধিদপ্তরের (DPE) বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলা, ইংরেজি, প্রাথমিক গণিত ও প্রাথমিক বিজ্ঞান – এই ৪টি বিষয়ে ২৫ করে মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

  • পরীক্ষায় শিক্ষার্থীকে প্রশ্নপত্র সম্বলিত বুকলেট সরবরাহ করা হবে। বুকলেটের নির্ধারিত জায়গায় টিক চিহ্ন এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে লিখে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। পৃথকভাবে উত্তরপত্র সরবরাহ করা হবে না।

  • প্রতি বিষয়ে ১৫টি বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১ নম্বর। প্রতি প্রশ্নের চারটি অপশনের মধ্যে সঠিক উত্তরটিতে টিক চিহ্ন দিতে হবে। সঠিক উত্তর নির্বাচনে একাধিক অপশনে টিক চিহ্ন দেওয়া যাবে না। একাধিক অপশনে টিক চিহ্ন দেওয়া হলে নির্ধারিত নম্বর দেওয়া হবে না।

  • বাংলা বিষয়ে ২টি অনুচ্ছেদ দেওয়া থাকবে। ২টি অনুচ্ছেদ থেকে ৪টি করে ৮টি বহু নির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে এবং অপর ৭টি বহু নির্বাচনী প্রশ্ন পুরো বই থেকে থাকবে। ১টি রচনামূলক প্রশ্ন থাকবে, যার মান ১০ নম্বর।

  • গণিত বিষয়ে পুরো বই থেকে ১৫টি বহু নির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে। ২টি সমস্যা সমাধানমূলক প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটির মান ৫ নম্বর করে মোট ১০ নম্বর।

  • ইংরেজি বিষয়ে পুরো বই থেকে ১৫টি বহু নির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে। ১টি বিষয়ে অনুচ্ছেদ লিখতে হবে, যার মান ১০ নম্বর।

  • প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়ে পুরো বই থেকে ১৫টি বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে। ২টি রচনামূলক প্রশ্ন থাকবে, প্রতিটির মান ৫ নম্বর করে মোট ১০ নম্বর।

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার তারিখ ও সময়

২০২২ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এই দিন সকাল ১০ থেকে ১২টা পর্যন্ত। ১২ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে সর্বশেষ এই তথ্য জানা গেছে।

এর আগে, ২০২২ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২৯ ডিসেম্বর হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত এই তারিখ এক দিন পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৯ ডিসেম্বর সারা দেশের ৫টি পৌরসভা ও ৬৬টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হওয়ায় প্রাথমিক পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করে ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া সব শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়।

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র

  • প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র (admit card) বিতরণ করা হবে ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে। আর ২১ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে।
  • প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ইতোমধ্যে দেশের সব উপজেলা বা থানা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে বৃত্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণের বিষয়ে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২২

পরীক্ষা :প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২২
পরীক্ষার বিষয় :বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান
মোট নম্বর :১০০ নম্বর
পরীক্ষার সময়কাল২ ঘণ্টা (১০টা থেকে ১২টা)
পরীক্ষার তারিখ :৩০ ডিসেম্বর ২০২২
পরীক্ষার ফলাফল :
Primary scholarship exam 2022

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২২ এর সিলেবাস, নম্বর বণ্টন ও নোটিশ [Primary scholarship 2022 syllabus, mark distributions and notice] নিয়ে এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার নম্বর বণ্টন ২০২২

৪টি বিষয়ে ২৫ করে মোট ১০০ নম্বরে দুই ঘণ্টার বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রতিটি বিষয় থেকে ১৫টি এমসিকিউ ও একটি রচনামূলক প্রশ্ন থাকবে। ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা।

বিষয়নম্বর
বাংলা ২৫
ইংরেজি২৫
গণিত২৫
বিজ্ঞান২৫
মোট নম্বর =১০০
প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার নম্বর বণ্টন ২০২২ – Primary scholarship mark distributions 2022

  • এ বছর প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা হবে ৪ বিষয়ে মোট ১০০ নম্বরের। এক দিনেই ২ ঘণ্টার এই বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা সদরে। প্রতিটি বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির বাছাই করা ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। অন্যরা এ সুযোগ পাবে না।

  • প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে হবে এ বৃত্তি পরীক্ষা। প্রতিটি বিষয়ে ২৫ নম্বর করে মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এক দিনেই ২ ঘণ্টায় হবে এ পরীক্ষা। বিদ্যালয়ের পরীক্ষায় যে ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী এগিয়ে থাকবে, তারাই এ বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার তারিখ ২০২২ ও অন্যান্য তথ্য

  • প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর ২০২২

  • এক সময় বাছাই করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে হতো প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা। সেটি বাদ দিয়ে ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য শুরু হয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা। এতে সব শিক্ষার্থীই বৃত্তি পাওয়ার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারত; যদিও পিইসি পরীক্ষা নিয়ে ছিল সমালোচনা।

  • করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা বিবেচনায় নিয়ে তিন বছর ধরে পিইসি পরীক্ষা হচ্ছে না। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে চালু হচ্ছে নতুন শিক্ষাক্রম। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণিতেও তা বাস্তবায়ন করা হবে, যেখানে প্রথাগত পরীক্ষাকে কম গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ধারাবাহিক মূল্যায়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় বছরের একেবারে শেষবেলায় এসে আকস্মিকভাবেই এ বছর সেই পুরোনো ব্যবস্থার মতো প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

  • বিষয়টি জানাজানি হয় ১ ডিসেম্বর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক নির্দেশনাপত্র পাঠানোর পর। ওই নির্দেশনাপত্রে বলা হয়েছে, ২৮ নভেম্বর এক আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় বর্তমানে প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রাথমিক বৃত্তি অব্যাহত থাকবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এ বৃত্তি পরীক্ষা নিতে হবে। প্রতিটি উপজেলা সদরে হবে এ পরীক্ষা। এ জন্য মোট শিক্ষার্থীর ১০ শতাংশ হিসাব করে কেন্দ্রের সংখ্যা নির্ধারণ করে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে তথ্য পাঠাতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়।

  • সার্বিক বিবেচনায় এ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন কোর কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক এম তারিক আহসান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুযায়ী শিক্ষায় পরিবর্তনের যে ধারা তৈরি হচ্ছে, সেখানে হঠাৎ সামষ্টিক পরীক্ষা নেওয়ার প্রচেষ্টা কখনোই ইতিবাচক চর্চা হতে পারে না, বরং ক্ষতির কারণ হতে পারে।

  • শিক্ষার্থীর একাডেমিক ও মানসিক বিকাশের দৃষ্টিকোণ থেকেও যদি দেখা হয়, তাহলেও এভাবে হুট করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা শিক্ষার্থীদের ওপর নানামুখী মানসিক ও শারীরিক চাপ পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আবার ১০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে বাছাই করে যদি এ ধরনের একটি বৃত্তি কার্যক্রম আবার চালু করা হয়, তাহলে এটি বৈষম্যমূলক হবে। তাই এটি নিয়ে আরেকটু ভাবার অবকাশ রয়েছে। তাঁর পরামর্শ হলো, এ ধরনের বৃত্তি পরীক্ষার ব্যবস্থা না করে শিক্ষার্থীরা যেসব কাজ করেছে, যেমন অ্যাসাইনমেন্ট, শ্রেণিভিত্তিক কার্যক্রমের ফলাফল ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে আপাতত মেধাবৃত্তি দেওয়া যেতে পারে।

পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে

২০২২ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ৩০ ডিসেম্বর হবে, তাই পঞ্চম শ্রেণির চলমান বার্ষিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) ১৯ ডিসেম্বর শেষ করে ২০ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখের মধ্যে উত্তরপত্র দেখার কাজ নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। আর পঞ্চম শ্রেণির মূল্যায়নের ফলাফল প্রকাশ করা হবে ২১ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখের মধ্যে। এ জন্য পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার উত্তরপত্র প্রতিদিন মূল্যায়ন করতে হবে।

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার প্রশ্নের কভার ২০২২

Primary scholarship exam question cover page 2022 - প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার প্রশ্নের কভার ২০২২ - প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ [কোন বিষয়ে কত নাম্বার]
Primary scholarship exam question cover page 2022

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশনা ২০২২ (নোটিশ)

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশনা ২০২২ (নোটিশ) - Primary scholarship exam question instructions 2022 notice
Primary scholarship exam question instructions 2022

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কারা অংশ নিতে পারে?

প্রতিটি বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির বাছাই করা ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। অন্যরা এ সুযোগ পাবে না।

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা কোথায় হবে?

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা সদরে।

Rate this post

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button