বিসিএস প্রস্তুতির রুটিন সাজাবেন যেভাবে

১. একটানা অনেক বেশি পড়ার চেষ্টা করবেন না :
যদি আপনি একটানা অনেক বেশি পড়ার চেষ্টা করেন, তাহলে আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন এবং আপনার পড়াটা খুব একটা বেশি কার্যকরী হবে না। পড়ার সময়টাকে আপনি ২৫/৩০ মিনিট অথবা ৪০/৪৫ মিনিটের ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নিন এবং ৫ মিনিটের হালকা ব্রেক নিন। ফলে আপনার মানসিক শক্তি বেড়ে যাবে এবং আপনি পুরোদ্যমে পড়া শুরু করতে পারবেন। এটি সফল ছাত্রদের পাঠাভ্যাস।

২. পড়াশোনার জন্য সময় নির্ধারণ করে নিন :
আপনার খাওয়া-দাওয়া, ঘুম ও ক্লাসের সময়সহ ছোট খাটো প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাজের সময় বাদ দিয়ে অবশিষ্ট সময় পড়াশোনার জন্য নির্ধারণ করুন। পড়াশোনার জন্য নির্ধারিত সময়ে বিবিধ ঝামেলা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন।

৩. প্রতিদিন একই সময়ে পড়ার চেষ্টা করুন :
প্রতিদিন একই সময়ে পড়ার অভ্যাস তৈরির জন্য একটি রুটিন তৈরি করে নিন। সে অনুযায়ী পড়াশোনা চালিয়ে যান এবং অন্তত তিন/চার মাস রুটিনমাফিক চলতে চেষ্টা করুন, দেখবেন তিন/চার মাস পর আপনার পড়াশোনার বড় একটা অংশই সম্পন্ন হয়ে গেছে। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস ফিরে আসবে এবং আপনি সফল হবেন। ফলাফল, সময়মত পড়ার জন্য আপনার দেহমন প্রস্তুত থাকবে।

৪. প্রতিটি নির্ধারিত সময়ের জন্য পড়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন :
ধরুন, এখন ২ ঘন্টা সময় আপনার পড়ার রুটিনে রয়েছে অর্থাৎ, এখন আপনি ১২০ মিনিট সময় পড়বেন। এবার ২৫ মিনিট পড়া + ৫ মিনিট ব্রেক মোট ৩০ মিনিট হিসেব করে ১২০ মিনিট সময়কে ৪ টি ভাগে ভাগ করে নিন। প্রতিটি সময় পর্বে আপনার টপিকস্-এর একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। যেমন: আপনি বিসিএস বাংলার সাহিত্য অংশ থেকে এই সময়ের জন্য ৫ পৃষ্ঠা পড়া শেষ করার টার্গেট নিন এবং শেষ করার চেষ্টা করুন। দেখবেন আপনার পড়াশোনার গতি আসবে এবং আপনার অগ্রগতি টের পাবেন।

৫. পরিকল্পনা হয়ে গেলে পড়া শুরু করে দিন :
ধরুন, রুটিন অনুযায়ী এখন আপনাকে গণিত পড়তে হবে। কিন্তু আপনার কাছে ‘গণিত’ কঠিন লাগে, বিরক্তিকর মনে হয়,পড়তে ইচ্ছে করছে না, তাই আপনি বিলম্ব করছেন। পড়াশোনায় বিলম্ব করাকে procrastination বলে। বাংলায় procrastination শব্দটির অর্থ হচ্ছে কালক্ষেপন, দীর্ঘসূত্রিতা । পরামর্শ হচ্ছে, খারাপ লাগাকে পাত্তা না দিয়ে রুটিন মত পড়া শুরু করুন, একসময় দেখবেন গণিতের উপর আপনার অনীহা দূর হয়ে গেছে। এভাবে যেকোন বিষয় নিয়ে পরিকল্পনা হয়ে যাওয়ার পর সেটি পড়া শুরু করে দিন।

৬. কঠিন পড়াগুলো খুঁজে বের করুন এবং সেগুলোতে শুরুতেই সময় দিন :
যেসব বিষয় আপনার কাছে কঠিন মনে হবে, আপনি সেই বিষয়গুলো খুঁজে বের করুন। শুরুতেই সেসব বিষয়ের উপর সময় দিন এবং আপনার মানসিক শক্তির সর্বোচ্চোটা প্রয়োগ করুন। দেখবেন, সঠিক সময়েই আপনার কাঠিন্যতা দূর হয়েছে।

৭. নিয়মিত প্রয়োজনীয় নোট নিন :
চাকুরি প্রস্তুতির জন্য পত্র-পত্রিকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে নিয়মিত নোট নিন। যা খাতায় লিখে রাখুন এবং নিয়মিত রিভাইজ দেওয়ার চেষ্টা করুন।

৮. পড়ার সময় ফেসবুক/ বন্ধুদের ফোন করা ইত্যাদি থেকে দূরে থাকেন :
পড়ার সময় ফেসবুক/ বন্ধুদের ফোন আপনাকে দুটি সমস্যায় ফেলবে। এক. আপনার মনোযোগ নষ্ট করবে এবং আপনি সহজেই আপনার পড়াশোনার পূর্বের মুডে ফিরে যেতে পারবেন না। দুই. এমন কোন বিষয় ফেসবুকে দেখবেন অথবা আপনার বন্ধুর সাথে শেয়ার করবেন, যা পড়াশোনা থেকে আপনার দৃষ্টিকে অন্য দিকে ধাবিত করবে। তাই এই সমস্যার সহজ সমাধান- পড়ার সময়ে আপনার ফোন অফ রাখুন , ফেসবুক থেকে দূরে থাকুন।

৯. কোন বিষয়ে সমস্যা সমাধানে অন্যের সহায়তা নিন :
যে বিষয়গুলো আপনার কাছে কঠিন মনে হবে, সেগুলো সমাধানে পিছবা না হয়ে বরং সে বিষয়ে দক্ষ এমন কারও সহায়তা নিন। মনে রাখবেন, “two heads may be better than one.”।

১০. রুটিন মাফিক রিভিশন দিন :
আমরা জানি স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন।’ তাই নিয়মিত যা পড়ছেন, সেগুলো রুটিন মাফিক নিয়মিত রিভিশন দিন। তা না হলে শেখা বিষয়টিও ভুলে যাবেন।
এই দশটি অভ্যাস আপনার পড়াশোনার দিগন্তকেই পাল্টে দিবে। তাই অভ্যাস হিসেবে আপনার ক্যারিয়ারে এই দশটি অভ্যাস নিশ্চিত করুন।

[ সংগৃহীত ]

Rate This Article

How would you rate this article?

Edu Daily 24
Edu Daily 24

Experienced writer with deep knowledge in their field.

Our Editorial Standards

We are committed to providing accurate, well-researched, and trustworthy content.

Fact-Checked

This article has been thoroughly fact-checked by our editorial team.

Expert Review

Reviewed by subject matter experts for accuracy and completeness.

Regularly Updated

We regularly update our content to ensure it remains current.

Unbiased Coverage

We strive to present balanced information.