বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি – ২য় পর্ব

সামনে ৪০তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা। এ পরীক্ষার বিষয় ছয়টি—বাংলা, ইংরেজি, গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা, সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বাংলাদেশ বিষয়াবলি এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি। এ পর্বে গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা এবং সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ের প্রস্তুতি নিয়ে লিখেছেন ৩৫তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের কর্মকর্তা রবিউল আলম লুইপা

গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা :
এ বিষয়টির দুটি অংশ—১. গাণিতিক যুক্তি, ২. মানসিক দক্ষতা।

১। গাণিতিক যুক্তি : ৩৫তম বিসিএস থেকে গাণিতিক যুক্তির প্রশ্নের ধারা অনেকটা বদলেছে, কঠিনও হয়েছে। আগে নন-সায়েন্সের শিক্ষার্থীরা গণিতে ৫০ পেত, এখন গণিতের শিক্ষার্থীদেরও ফুল মার্কস নিশ্চিত করতে বেগ পেতে হয়। এখন কম নম্বরের ছোট ছোট অঙ্ক আসায় প্রশ্নের সংখ্যাও বেড়েছে। বিগত প্রশ্ন বিশ্লেষণে গত কয়েকটি বিসিএসে পাটিগণিতের চেয়ে বীজগণিত এবং জ্যামিতির আধিক্য লক্ষ করা গেছে। পাটিগণিতের ঐকিক নিয়ম, শতকরা, সুদকষা, লাভ-ক্ষতি গাইড বইয়ের পাশাপাশি ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির সাধারণ গণিত বই থেকে দেখতে হবে। বীজগণিতের সাধারণ সূত্র, উৎপাদকে বিশ্লেষণ, একঘাত ও দ্বিঘাত সমীকরণ, সূচক লগারিদ গাইড বই ও নবম-দশম শ্রেণির সাধারণ গণিতের পাশাপাশি উচ্চতর গণিত বই; সেট, বিন্যাস, সমাবেশ, সম্ভাব্যতার জন্য গাইড বইয়ের পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিকের গণিত বই দেখতে পারেন। এ ছাড়া ত্রিকোণমিতি, বৃত্ত-ত্রিভুজ-ক্ষেত্রফল সম্পর্কিত উপপাদ্যগুলোও দখলে রাখতে হবে। প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য হলেও গণিত চর্চা করবেন।

২। মানসিক দক্ষতা : প্রিলিমিনারির মতো ‘মানসিক দক্ষতা’ এমসিকিউ পদ্ধতিতে হবে। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.৫০ নম্বর কাটা যাবে। প্রিলির মানসিক দক্ষতার প্রস্তুতি লিখিত পরীক্ষায় কাজে আসবে।
মানসিক দক্ষতার উত্তর করার সময় যে উত্তরগুলোর ব্যাপারে নিশ্চিত, সেগুলো আগে উত্তর করবেন। যেগুলোর উত্তর নিয়ে কনফিউশন বেশি, সেগুলো এড়িয়ে যান। Verbal Reasoning, Abstract Reasoning, Space Relation, Numerical Ability, Spelling and Language, Mechanical Reasoning অংশগুলো গাইড বইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ভারতীয় ওয়েবসাইট থেকেও চর্চা করতে পারেন।

সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি :
সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় নন-সায়েন্সের শিক্ষার্থীরা এ কথা ভেবে ভুল করেন—‘আমি বিজ্ঞানের ছাত্র না’। আর সায়েন্সের শিক্ষার্থীরা ভুল করেন এই ভেবে—‘আমি তো বিজ্ঞানের ছাত্র। না পড়লেও সব পারব’। আপনি যে বিভাগের শিক্ষার্থীই হোন না কেন, এই বয়সে চেষ্টা আর শ্রম দিয়ে কঠিন বিষয়গুলোও শেখা সম্ভব। সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে প্রয়োজনীয় চিত্রের চিহ্নিতকরণ, সংকেত উল্লেখ, কার্যকরণ চিত্রিত করলে আপনি অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকবেন। সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়টির তিনটি অংশ—১. সাধারণ বিজ্ঞান, ২. কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি, ৩. ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক টেকনোলজি।

১। সাধারণ বিজ্ঞান : সাধারণ বিজ্ঞানের Light, Our Resources, Atmosphere, Food and Nutrition, Disease and Healthcare অংশগুলো থেকে প্রতি বিসিএসেই প্রশ্ন থাকে। নন-সায়েন্সের শিক্ষার্থীরা চাইলে বিগত প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে কিছু কিছু অংশ বাদ দিতে পারেন। তবে পুরো সিলেবাসের সব টপিক একবার হলেও রিডিং পড়ে গেলে পরীক্ষায় অন্তত কিছু হলেও লিখে আসতে পারবেন। গাইড বইয়ের পাশাপাশি নবম-দশম শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, সাধারণ বিজ্ঞান এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন বই দেখতে পারেন।

২। কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি : এই অংশটি তুলনামূলক সহজ। Computer Organization, Input and Output device, Computer software, programming Language, Language translator, Computer virus, Computer networking, Internet service and protocol, Different type of transmission media, Satellite communication, E -commerce টপিকগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ; প্রতিবছরই এগুলো থেকে প্রশ্ন থাকে। এসব টপিকের জন্য গাইড বইয়ের পাশাপাশি একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির আইসিটি বইয়ের সহায়তা নিতে পারেন।

৩। ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক টেকনোলজি : এই অংশটি তুলনামূলক কঠিন। বিগত কয়েকটি বিসিএসে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক থেকে একেবারে মৌলিক প্রশ্ন করা হয়েছে। অনেক পরীক্ষার্থী এই অংশে পুরো উত্তর দিতে পারেননি। এই অংশের Voltage, Current, Ohm’s Law, Kirchoff’s voltage law, Generation of AC and DC voltages, Voltage stabilizers, Electronic components, Amplifiers and oscillators, Capacitors, Inductors টপিকগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য গাইড বইয়ের পাশাপাশি একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র বইয়ের সহায়তা নেবেন।

সূত্র : কালের কণ্ঠ । চাকরি আছে । ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

আগের পর্ব :
>> বিসিএস স্পেশাল-৪ : লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি ১ম পর্ব