জেনে রাখুন

মেট্রোরেলের টিকিট কিভাবে পাওয়া যাবে [কার্ড মূল্য]

মেট্রোরেলের টিকিট কিভাবে পাওয়া যাবে – এ ব্যাপারে জানার আগ্রহ অনেকেরই। বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল উদ্বোধনের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০২২। আর সাধারণ যাত্রী পরিবহন শুরু ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখ থেকে। যারা মেট্রোরেলে চড়তে চান, তারা নিজে নিজে টিকিট কেটে যথাযথ নিয়ম অনুযায়ী এই বিশেষ উড়াল ট্রেনে উঠতে হবে। এই ট্রেন চলবে বিশেষ উড়াল সড়ক দিয়ে। এর জ্বালানি তেল নয়, বিদ্যুৎ। শুরুতে মেট্রোরেল চলবে দিনে চার ঘণ্টা। সকাল ৮ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলার সময় ট্রেন মাঝপথে কোথাও থামবে না।

২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্তরায় মেট্রোরেল উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে মেট্রোরেলে চড়ে আগারগাঁওয়ে নামবেন। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানিয়েছে, শুরুতে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। পৌনে ১২ কিলোমিটারের এই পথ পাড়ি দিতে মেট্রোরেলের সময় লাগবে ১০ মিনিট ১০ সেকেন্ড।

২৮ ডিসেম্বর স্বপ্নের মেট্রোরেলের শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে চলছে শেষ মুহূর্তের নানা প্রস্তুতিমূলক কাজ। রেললাইনে পরীক্ষামূলকভাবে চলছে মেট্রোরেল। সম্প্রতি রাজধানীর মিরপুরের ১২ নম্বর এলাকায়

শুরুতে উত্তরা ও আগারগাঁও স্টেশন থেকে টিকিট (কার্ড) কাটা যাবে। এই পথের ভাড়া ৬০ টাকা।

প্রথম দিকে স্টেশনে দুই ধরনের কার্ড পাওয়া যাবে। স্থায়ী ও এক যাত্রার (সিঙ্গেল জার্নি) কার্ড।

শুরুতে মেট্রোরেল স্টেশন থেকেই এই কার্ড কিনতে হবে। পরে পর্যায়ক্রমে স্টেশনের বাইরে কার্ড বিক্রির জন্য কিছু প্রতিষ্ঠান নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

মেট্রোরেলের টিকিট কিভাবে পাওয়া যাবে / কার্ড মূল্য

১০ বছর মেয়াদি স্থায়ী কার্ড কিনতে হবে ২০০ টাকা দিয়ে। এই কার্ড দিয়ে যাতায়াতের জন্য প্রয়োজনমতো টাকা রিচার্জ করা যাবে।

স্থায়ী কার্ড পেতে নিবন্ধন করতে হবে। বৃহস্পতিবার ডিএমটিসিএলের ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের লিংক দেওয়া হবে। এদিন থেকে নিবন্ধন করা যাবে। নিবন্ধন করতে নিজের নাম, মাতা–পিতার নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা পাসপোর্ট নম্বর, মুঠোফোন নম্বর, ই-মেইল আইডি লাগবে।

এক যাত্রার (সিঙ্গেল জার্নি) কার্ডের জন্য নিবন্ধনের প্রয়োজন হবে না। স্টেশন থেকে এই কার্ড কিনে যাত্রা করা যাবে। ট্রেন থেকে নামার সময় কার্ড রেখে দেওয়া হবে।

স্টেশনের টিকিট অফিস মেশিন (টিওএম) থেকে বিক্রয়কর্মীর সহায়তায় কার্ড কেনা যাবে। এ ছাড়া ভেন্ডিং মেশিন থেকে যাত্রীরা নিজেরাই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।

সরকার মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করেছে ২০ টাকা। এরপর প্রতি দুই স্টেশন পর ১০ টাকা ভাড়া যোগ হবে। ২৯ ডিসেম্বর থেকে যাত্রীরা এককালীন ও দীর্ঘমেয়াদী (সিঙ্গেল-মাল্টিপল) ব্যবহারের কার্ড কিনতে পারবেন। এটি দিয়ে মেট্রোরেলে উঠে যাতায়াত করা যাবে।

মেট্রোরেল চলার সময় সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা

২৯ ডিসেম্বর ২০২২ মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর প্রথম দিকে মেট্রোরেল প্রতিদিন ৪ ঘণ্টা করে চালানো হবে। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। যাত্রীরা মেট্রোরেল ব্যবহারে অভ্যস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেট্রোরেল পরিচালনার সময় বাড়ানো হবে।

শুরুতে কোনো স্টপেজ ছাড়াই সরাসরি উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে ট্রেন।

এক নজরে ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প

  • প্রকল্পের নাম: ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন–৬
  • প্রকল্পের ধাপ বা প্যাকেজ–সংখ্যা: ৮
  • উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা: জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো–অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)
  • পরিচালনা সংস্থা: ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)
  • ডিএমটিসিএল গঠনের তারিখ: ৩ জুন ২০১৩
  • ডিএমটিসিএলের রূপকল্প: বাঁচবে সময়, বাঁচবে পরিবেশ, যানজট কমাবে মেট্রোরেল
  • প্রকল্পের বাজেট: ৩৩,৪৭১.৯৯ কোটি টাকা
  • প্রস্তাবিত পথের দৈর্ঘ্য (ভায়াডাক্ট): ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার
  • ভাড়া: সর্বনিম্ন ২০ টাকা, সর্বোচ্চ ১০০ টাকা
  • মেট্রোট্রেনের সংখ্যা: ২৪ সেট
  • প্রতিটি ট্রেনে কোচ–সংখ্যা: ৬
  • প্রতি ট্রেনের যাত্রী ধারণক্ষমতা: ২,৩০৮ জন (মাঝের ৪টি কোচের প্রতিটিতে সর্বোচ্চ ৩৯০ জন এবং ট্রেইলার কোচের প্রতিটিতে সর্বোচ্চ ৩৭৪ জন)
  • পরিচালনা–প্রযুক্তি: কমিউনিকেশন বেইজড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম (সিবিটিসি)
  • চলাচলের সময়: সকাল ৮টা থেকে শুরু (আপাতত)
  • প্রথম নারী চালক: মরিয়ম আফিজা
  • সর্বোচ্চ পরিকল্পিত গতি: ১০০ কিলোমিটার/ঘণ্টা
  • যাত্রী পরিবহন–ক্ষমতা: ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং দৈনিক ৫ লাখ
  • স্টেশন–সংখ্যা: ১৭ (উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর ১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, মতিঝিল ও কমলাপুর)
  • ট্রেনের বিদ্যুৎ–চাহিদা: একটি ট্রেন উত্তরা থেকে আগারগাঁও আসতে বিদ্যুৎ লাগবে ২ হাজার টাকার
  • বিদ্যুতের উৎস: জাতীয় গ্রিড (উপকেন্দ্র ৫টি : উত্তরা, পল্লবী, তালতলা, সোনারগাঁও হোটেল ও বাংলা একাডেমি এলাকা)
  • গেজ: স্ট্যান্ডার্ড গেজ (১,৪৩৫ মিলিমিটার)
  • নির্মাণকাজ উদ্বোধন: ২৬ জুন ২০১৬
  • মেট্রোরেল উদ্বোধন: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২
  • প্রকল্পের সমাপ্তি: ২০২৫ সাল (সম্ভাব্য)
Rate this post

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Check Also
Close
Back to top button