যু্ক্তরাজ্যে ঝুঁকির মুখে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা
যুক্তরাজ্যের লন্ডন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থী ভর্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটির সরকার। এর ফলে ইউরোপের বাইরের দেশের শিক্ষার্থী ভর্তি করার বৈধতা হারালো বিশ্ববিদ্যালয়টি। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনারত ইউরোপের বাইরের দেশের শিক্ষার্থীদের আগামী ৬০ দিনের মধ্যে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি স্থানান্তরণ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
যুক্তরাজ্যের অভিবাসন বিষয়ক কর্তৃপক্ষ ‘ইউকে বর্ডার এজেন্সি’ জানায়, এই সময়ের মধ্যে ভর্তি হতে ব্যর্থ হলে সেসব শিক্ষার্থীকে নিজ-নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
গার্ডিয়ানসহ যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, সরকারের এ সিদ্ধান্তের কারণে দুই হাজার ৭০০শিক্ষার্থীর পড়াশোনা ঝুঁকির মধ্যে পড়লো। এসব শিক্ষার্থীদের অনেকেই ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তি হয়ে যুক্তরাজ্যে পোঁছেছেন। বাকিরা ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশি ও ভারতীয়দের সংখ্যাই বেশি। এছাড়াও দেশ দুটির আরো প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থী পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলেও জানায় পত্রিকাটি। এসব শিক্ষার্থীরা লন্ডন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির অধীনে পরিচালনাকারী কলেজ বা ইনস্টিটিউটে নির্ধারিত কিছু ব্যাচেলর কোর্সে পড়াশোনা করছে।
সরকারের এ ঘোষণার পর বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের একাধিক সংগঠন সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুকে তাদের পড়াশোনা বন্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির অধীনে পরিচালিত ল্যামবেথ কলেজের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী কামরুল হাসান মাসুম বলেন, “দুই মাসের মধ্যে অন্য কোথাও ভর্তি হতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে তিন থেকে পাঁচ হাজার পাউন্ড ‘টিউশন ফি’ দিতে হবে। একবার লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি জমা দেওয়ার পর আবারও একই ফি দিয়ে পুনরায় ভর্তি হতে হবে সবার। অন্যদিকে খণ্ডকালীন আয়ের ক্ষেত্রও এখন কম। তাই এতো পাউন্ড খরচ করার সামর্থ্য খুব কম শিক্ষার্থীরই আছে।”
নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশিদের ভর্তি কার্যক্রমে অনিয়মকে দায়ী করেছে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাজ্যের অভিবাসনমন্ত্রী ডেমিয়েন গ্রিন জানান, নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্তের আগে ছয় মাস নিরীক্ষা করা হয়। নিরিক্ষায় বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়টির অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে কর্তৃপক্ষ। ভাষা দক্ষতার পরীক্ষা বা আইএলটিএস-এ ন্যূনতম স্কোরের শর্ত মানা হয়নি বলেও অভিযোগ করেন ডেমিয়েন গ্রিন।
তিনি আরও জানান, ভিসার মেয়াদ নেই- এমন অবৈধ শিক্ষার্থীদেরও পড়াশোনার সুযোগ দিয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক মার্ক বিকারটন জানান, সরকারের সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। এর বিরুদ্ধে তারা সম্ভাব্য আইনী পদক্ষেপ নেবেন।
সূত্র: পরিবর্তন.কম