রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তির বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) যন্ত্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের দুই ছাত্র রুবেল আহাম্মেদ ও মো. রাকিবুল ইসলাম অত্যাধুনিক গোয়েন্দা রোবট উদ্ভাবন করেছেন। প্রতিপক্ষের হামলা যেখানে অবশ্যম্ভাবী, সেই অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে শত্রু বাহিনীর ওপর হামলা করতে সক্ষম নতুন উদ্ভাবিত এই রোবট। শুধু তা-ই নয়, যুদ্ধক্ষেত্রের পারিপার্শ্বিক ছবি ও ভিডিওচিত্র রোবট নিয়ন্ত্রণকারীকে সরবরাহ করে প্রতিপক্ষের অবস্থান জেনে হামলা করতে সাহায্য করবে এ রোবট।
রুয়েট শিক্ষকদের উদ্যোগে উদ্ভাবিত এ প্রকল্পটি নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। রুয়েট ভিসি প্রফেসর ড. সিরাজুল করিম চৌধুরী ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন। রুবেল আহাম্মেদ ও মো. রাকিবুল ইসলাম জানান, ধরা যাক সামরিক অভিযান চলছে। অপরাধী ধরতে হবে। কিন্তু অভিযান খুবই বিপজ্জনক। যে কোনো সময় পাল্টা আক্রমণ হতে পারে। কিংবা চলছে বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার অভিযান। এরকম ঝুঁকিপূর্ণ অভিযান কিংবা যেখানে মানুষ যাওয়া অসম্ভব সেখানে অনায়াসে কাজ চালিয়ে নিতে পারবে এই রোবট। শুধু তা-ই নয়, অত্যধিক গরম বা মানুষের জন্য প্রতিকূল এরকম পরিস্থিতিতেও এই রোবট কাজ চালিয়ে নিতে পারে।
প্রকল্পটি তৈরির কাজে নিয়োজিত দলটি জানান, রোবটটিকে চালানোর জন্য ইন্টারনেট সংযোগের দরকার হবে। ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে রোবটটিকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। ইন্টারনেটে প্রবেশ করে একটি সফটওয়্যারের সাহায্যে প্রথমে একটি নিরাপত্তা কোডের মাধ্যমে রোবটটির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে হবে। এরপর রোবটটি থেকে একটি নিশ্চয়তামূলক বার্তা এলেই কাজ শেষ। রোবটটি চলা শুরু করবে। নিয়ন্ত্রণকারী দূরে অবস্থানকারী ব্যক্তির কাছে রোবটটির আশপাশের পরিবেশের জীবন্ত ভিডিও পাঠাতে থাকবে প্রতি মুহূর্তে। ভিডিওগুলো দেখে নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি সিদ্ধান্ত নেবে কখন কী করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম তথা জিপিএসের মাধ্যমে রোবটটি স্যাটেলাইটের সঙ্গে সংযোগ করতে পারবে। ফলে মানচিত্রের মাধ্যমেও রোবটটির অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যাবে। এরকম প্রযুক্তি বহির্বিশ্বে বিদ্যমান থাকলেও বাংলাদেশে এই প্রথম।
রুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক শাহজাদা মাহমুদুল হাসান জানান, এ প্রকল্পটিকে যদি বাণিজ্যিকভাবে উত্পাদন করা যায় তবে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন খাতে রোবটটিকে ব্যবহার করা যেতে পারে।
রুয়েট ভিসি ড. সিরাজুল করিম চৌধুরী বলেন, এটি আসলেই একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। সামরিক খাত থেকে শুরু করে বাংলাদেশে গ্যাস উত্তোলন, শিল্প ইত্যাদি জায়গায় রোবটটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।
তথ্য সূত্র: রুয়েটিয়ান ব্লগ
>> ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করে রাখুন : youtube.com/edudaily24