শবে বরাতের নামাজের নিয়ম, নিয়ত, দোয়া, ফজিলত ও করণীয়-বর্জনীয় [কত তারিখে ২০২৩]

শবে বরাতের নামাজের নিয়ম, নিয়ত, হাদিস, ফজিলত ও করণীয়-বর্জনীয় – এসব ব্যাপারে এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। ৭ মার্চ ২০২৩ তারিখ (মঙ্গলবার) দিনগত রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হবে। শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতেই হলো ‘শবে বরাত’। ফার্সি শব্দ শবে বরাতের মানে হলো- মুক্তির রজনী। শবে বরাতের আরবি হলো ‘লাইলাতুল বারকাত’। হাদিস শরিফে যাকে ‘নিসফ শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্য দিবসের রজনী বলা হয়েছে।

ইসলামি তমদ্দুন তথা মুসলিম কৃষ্টিতে যেসব দিবস ও রজনী বিখ্যাত, এর মধ্যে ৫টি রাত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই বিশেষ পাঁচটি রাত হলো- দুই ঈদের রাত, শবে মেরাজ, শবে বরাত ও শবে কদর। যাঁরা রাতের ইবাদতের গুরুত্ব অনুধাবন করেন, তাঁরা প্রতিটি রাতকে শবে বরাত বানিয়ে নেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হা-মিম! শপথ! উজ্জ্বল কিতাবের, নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি ছিলাম সতর্ককারী। যাতে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয় আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি। এ হলো আপনার প্রভুর দয়া, নিশ্চয় তিনি সব শোনেন ও সব জানেন।

পবিত্র শবে বরাত ২০২৩ এর তারিখ / শবে বরাত কবে ২০২৩

সভায় ১৪৪৪ হিজরি সনের পবিত্র শাবান মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়গুলো, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, আজ ২৯ রজব ১৪৪৪ হিজরি, ৮ ফাল্গুন ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র শাবান মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।

এমতাবস্থায়, আগামী ৯ ফাল্গুন ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ বুধবার থেকে ১৪৪৪ হিজরি সনের পবিত্র শাবান মাস গণনা শুরু হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৪ শাবান ১৪৪৪ হিজরি, ২২ ফাল্গুন ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ৭ মার্চ ২০২৩ খ্রি. মঙ্গলবার দিনগত রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হবে।

শবে বরাত অর্থ কি

শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতেই হলো ‘শবে বরাত’। ফার্সি শব্দ শবে বরাতের মানে হলো- মুক্তির রজনী। শবে বরাতের আরবি হলো ‘লাইলাতুল বারকাত’। হাদিস শরিফে যাকে ‘নিসফ শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্য দিবসের রজনী বলা হয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশ, পারস্যসহ পৃথিবীর অনেক দেশের ফারসি, উর্দু, বাংলা, হিন্দিসহ নানান ভাষায় যা ‘শবে বরাত’ নামেই অধিক পরিচিত।

শবে বরাতের নামাজের নিয়ম / শবে বরাতের নামাজ

ইসলামি তমদ্দুন তথা মুসলিম কৃষ্টিতে যেসব দিবস ও রজনী বিখ্যাত, এর মধ্যে পাঁচটি রাত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই বিশেষ পাঁচটি রাত হলো- দুই ঈদের রাত্রিদ্বয়, শবে মেরাজ, শবে বরাত ও শবে কদর। যাঁরা রাতের ইবাদতের গুরুত্ব অনুধাবন করেন, তাঁরা প্রতিটি রাতকে শবে বরাত বানিয়ে নেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হা-মিম! শপথ! উজ্জ্বল কিতাবের, নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি ছিলাম সতর্ককারী। যাতে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয় আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি। এ হলো আপনার প্রভুর দয়া, নিশ্চয় তিনি সব শোনেন ও সব জানেন।

তবু তারা সংশয়ে রঙ্গ করে। তবে অপেক্ষা করো সেদিনের, যেদিন আকাশ সুস্পষ্টভাবে ধূম্রাচ্ছন্ন হবে। [সুরা-৪৪ (৬৪) দুখান, রুকু: ১, আয়াত: ১-১০, পারা: ২৫, পৃষ্ঠা ৪৯৬-৪৯৭/১৪-১৫]। মুফাসসিরিনগণ বলেন, এখানে ‘লাইলাতুল মুবারাকা’ বা বরকতময় রজনী বলে শাবান মাসে পূর্ণিমা রাতকেই বোঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাজহারি, রুহুল মাআনি ও রুহুল বায়ান)। হজরত ইকরিমা (রা.) প্রমুখ কয়েকজন তফসিরবিদ থেকে বর্ণিত আছে, সুরা দুখানের দ্বিতীয় আয়াতে বরকতের রাত্রি বলে শবে বরাত বোঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাআরিফুল কোরআন)।

শবে বরাতের ফজিলত / শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস

হজরত আয়িশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ সেজদা করলেন যে আমার ধারণা হলো, তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন; আমি তখন উঠে তাঁর পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম, তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল; তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করে আমাকে লক্ষ করে বললেন, হে আয়িশা! তোমার কি এ আশঙ্কা হয়েছে? আমি উত্তরে বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)!

আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার আশঙ্কা হয়েছিল আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কি না? নবীজি (সা.) বললেন, তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলই ভালো জানেন। তখন নবীজি (সা.) বললেন, এটা হলো অর্ধশাবানের রাত; এ রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন; ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করে দেন, অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন। (শুআবুল ইমান, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৮২)।

হজরত আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবীজি (সা.) এ রাতে মদিনার কবরস্থান ‘জান্নাতুল বাকি’তে এসে মৃতদের জন্য দোয়া ও ইস্তিগফার করতেন। তিনি আরও বলেন, নবীজি (সা.) তাঁকে বলেছেন, এ রাতে বনি কালবের ভেড়া বকরির পশমের (সংখ্যার পরিমাণের) চেয়েও বেশিসংখ্যক গুণাহগারকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। (তিরমিজি শরিফ, হাদিস: ৭৩৯)।

শবে বরাতের নফল নামাজ ও ইবাদত : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন শাবানের মধ্য দিবস আসবে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করবে ও দিনে রোজা পালন করবে। (ইবনে মাজাহ)। ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নামাজ; সুতরাং নফল ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নফল নামাজ। প্রতিটি নফল ইবাদতের জন্য তাজা অজু বা নতুন অজু করা মোস্তাহাব। বিশেষ ইবাদতের জন্য গোসল করাও মোস্তাহাব। ইবাদতের জন্য দিন অপেক্ষা রাত শ্রেয়তর।

হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ১৪ শাবান দিবাগত রাত যখন আসে, তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলায় রোজা রাখো; কেননা, এদিন সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন এবং আহ্বান করেন; কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছ কি? আমি ক্ষমা করব; কোনো রিজিকপ্রার্থী আছ কি? আমি রিজিক দেব; আছ কি কোনো বিপদগ্রস্ত? আমি উদ্ধার করব। এভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে আহ্বান করতে থাকেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৩৮৪)।

শবে বরাতের নামাজের নিয়ত

নাওয়াইতুআন্ উছল্লিয়া লিল্লা-হি তাআ-লা- রাকআতাই ছালা-তি লাইলাতিল বারা-তিন্ -নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল্ কাবাতিশ্ শারীফাতি আল্লা-হু আকবার।

মধ্য শাবানের নফল রোজা : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন শাবানের মধ্য দিবস আসে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করো ও দিনে রোজা পালন করো। (সুনানে ইবনে মাজাহ)। এ ছাড়া প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ আইয়ামে বিজ-এর নফল রোজা তো রয়েছেই। যা আদি পিতা হজরত আদম (আ.) পালন করেছিলেন এবং আমাদের প্রিয় নবী (সা.)–ও পালন করতেন; যা মূলত সুন্নত।

সুতরাং তিনটি রোজা রাখলেও শবে বরাতের রোজা এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। বিখ্যাত মুহাদ্দিস ফকিহ হাফিজ ইবনে রজব (রা.) বলেন, এদিনের রোজা আইয়ামে বিজ, অর্থাৎ চান্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজার অন্তর্ভুক্ত। (লাতায়িফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা ১৫১)।

এ ছাড়া মাসের প্রথম তারিখ, মধ্য তারিখ ও শেষ তারিখ নফল রোজা গুরুত্বপূর্ণ; শবে কদরের রোজা এর আওতায়ও পড়ে। সওমে দাউদি বা হজরত দাউদ (আ.)-এর পদ্ধতিতে এক দিন পর এক দিন রোজা পালন করলেও সর্বোপরি প্রতিটি বিজোড় তারিখ রোজা হয়; এবং শবে কদরের রোজা এর শামিল হয়ে যায়।

সর্বোপরি রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসের পর রজব ও শাবান মাসে বেশি নফল নামাজ ও নফল রোজা পালন করতেন; শাবান মাসে কখনো ১০টি, কখনো ১৫টি, কখনো ২০টি নফল রোজা, কখনো আরও বেশি রাখতেন। এমনকি উম্মুহাতুল মোমেনিন বা মোমিন মাতাগণ বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এভাবে নফল রোজা রাখা শুরু করতেন মনে হতো তিনি আর কখনো রোজা ছাড়বেন না। (মুসলিম)।

শবে বরাতের নফল নামাজ

দুই রাকাত তহিয়াতুল অজুর নামাজ, নিয়ম- প্রতি রাকাতে আল হামদুলিল্লাহ (সূরা ফাতিহা) পড়ার পর, ১ বার আয়াতুল কুরসি এবং তিন বার ক্বুলহু আল্লাহ (সূরা এখলাছ)। ফজিলত: প্রতি ফোটা পানির বদলে সাতশত নেকী লিখা হবে।

দুই রাকাত নফল নামাজ, নিয়ম- ১ নম্বর নামাজের মত, প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর, ১ বার আয়াতুল কুরসি এবং ১৫ বার করে সূরা এখলাছ, অতঃপর সালাম ফিরানোর পর ১২ বার দুরূদ শরীফ। ফজিলত: রুজিতে বরকত, দুঃখ-কষ্ট হতে মুক্তি লাভ করবে, গুনাহ হতে মাগফিরাতের বকশিস পাওয়া যাবে।

৮ রাকাত নফল নামাজ দু’রাকাত করে পড়তে হবে, নিয়ম- প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর, সূরা এখলাছ ৫ বার করে। একই নিয়মে বাকি সব। ফজিলত: গুনাহ থেকে পাক হবে, দু’আ কবুল হবে এবং বেশি বেশি নেকী পাওয়া যাবে।

  • ১২ রাকাত নফল নামাজ দু’রাকাত করে, নিয়ম- প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর, ১০ বার সূরা এখলাছ এবং এই নিয়মে বাকি নামাজ শেষ করে, ১০ বার কালেমা তওহীদ, ১০ বার কলেমা তামজীদ এবং ১০ বার দুরূদ শরীফ।
  • ১৪ রাকাত নফল নামাজ দু’রাকাত করে, নিয়ম- প্রতি রাকাত সূরা ফাতিহার পর যে কোন একটি সূরা পড়ুন। ফজিলত: যে কোনো দু’আ চাইলে তা কবুল হবে।
  • চার রাকাত নফল নামাজ এক সালামে পড়তে হবে, নিয়ম- প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পর ৫০ বার সূরা এখলাছ শরীফ। ফজিলত: গুনাহ থেকে এমনভাবে পাক হবে যে সদ্য মায়ের গর্ভ হতে ভূমিষ্ঠ হয়েছে।
  • আট রাকাত নফল নামাজ এক সালামে, নিয়ম- প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ১১ বার সূরা এখলাছ শরীফ। ফজিলত: এর ফজিলতে সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, হযরতে সৈয়্যদাতুনা ফাতেমা রাদিআল্লাহু আনহা এরশাদ করেছেন, ‘আমি ওই নামাজ আদায় কারীর সাফায়াত করা ব্যতীত জান্নাতে কদম রাখব না।
  • রোজার ফজিলত হুজুর সালল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে শাবানে ১ দিন রোজা রেখেছে, তাকে আমার সাফায়াত হবে। আরো একটি হাদিস শরীফে আছে যে, হুজুর সালল্লাহু তালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি শাবানের ১৫ তারিখে রোজা রাখবে, তাকে জাহান্নামের আগুন ছোঁবে না। এছাড়াও পড়তে পারেন ‘সালাতুল তাসবীহ এর নামাজ। এই নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে।
  • রাসূলুল্লাহ সালল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় চাচা হযরত আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহুকে এই নামায শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে, এই নামাজ পড়লে আল্লাহ আয-যাওযাল আপনার আউয়াল আখেরের সগীরা কবীরা জানা অজানা সকল গুণাহ মাফ করে দেবেন।

শবে বরাতের নফল নামাজ :
১। দুই রকাত তহিয়াতুল অযুর নামায।
নিয়মঃ প্রতি রকাতে আল হামদুলিল্লাহ ( সূরা ফাতিহা) পড়ার পর , ১ বার আয়াতুল কুরসী এবং তিন বার ক্বুলহু আল্লাহ শরীফ ( সূরা এখলাছ) । ফযীলতঃ প্রতি ফোটা পানির বদলে সাতশত নেকী লিখা হবে।

২। দুই রকাত নফল নামায।
নিয়মঃ ১নং নামাযের মত, প্রতি রকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর, ১ বার আয়াতুল কুরসী এবং ১৫ বার করে সূরা এখলাছ শরীফ, অতপর সালাম ফিরানোর পর ১২ বার দুরূদ শরীফ। ফযীলতঃ রুজিতে রবকত, দুঃখ-কষ্ট হতে মুক্তি লাভ করবে, গুনাহ হতে মাগফিরাতের বখসিস পাওয়া যাবে।

৩। ৮ রকাত নফল নামায , দু রকাত করে পড়তে হবে।
নিয়মঃ প্রতি রকাতে সূরা ফাতিহার পর , সূরা এখলাছ ৫ বার করে। একই নিয়মে বাকি সব। ফযীলতঃ গুনাহ থেকে পাক হবে , দু’আ কবুল হবে এবং বেশী বেশী নেকী পাওয়া যাবে।

৪। ১২ রকাত নফল নামায , দু রকাত করে।
নিয়মঃ প্রতি রকাতে সূরা ফাতিহার পর, ১০ বার সূরা এখলাছ এবং এই নিয়মে বাকি নামায শেষ করে , ১০ বার কলমা তওহীদ, ১০ বার কলমা তামজীদ এবং ১০ বার দুরূদ শরীফ।

৫। ১৪ রকাত নফল নামায, দু রকাত করে।
নিয়মঃপ্রতি রকাত সূরা ফাতিহার পর যে কোন একটি সূরা পড়ুন। ফযীলতঃ যে কোন দু’আ চাইলে তা কবুল হবে।

৬। চার রকাত নফল নামায, ১ সালামে পড়তে হবে।
নিয়মঃ প্রতি রকাতে সূরা ফাতিহা পর ৫০ বার সূরা এখলাছ শরীফ। ফযীলতঃ গুনাহ থেকে এমনভাবে পাক হবে যে সদ্য মায়ের গর্ভ হতে ভুমিষ্ঠ হয়েছে।

৭। ৮ রকাত নফল নামায, ১ সালামে।
নিয়মঃ প্রতি রকাতে সূরা ফাতিহার পর ১১ বার সূরা এখলাছ শরীফ।

শবে বরাতে করণীয় ও বর্জনীয়

শবে বরাতে যা করা উচিত

  • (ক) নফল নামাজ [১] তাহিয়্যাতুল অজু, [২] দুখুলিল মাসজিদ, [৩] আউওয়াবিন, [৪] তাহাজ্জুদ, [৫] ছলাতুত তাসবিহ [৬] তাওবার নামাজ, [৭] ছলাতুল হাজাত, [৮] ছলাতুশ শোকর ও অন্যান্য নফল ইত্যাদি পড়া।
  • (খ) নামাজে কিরাআত ও রুকু-সেজদা দীর্ঘ করা।
  • (গ) পরের দিন নফল রোজা রাখা;
  • (ঘ) কোরআন শরিফ [১] সুরা দুখান ও [২] অন্যান্য ফজিলতের সুরাসমূহ তিলাওয়াত করা;
  • (ঙ) দরুদ শরিফ বেশি বেশি পড়া;
  • (চ) তাওবা-ইস্তিগফার অধিক পরিমাণে করা;
  • (ছ) দোয়া-কালাম, তাসবিহ তাহলিল, জিকির-আসকার ইত্যাদি করা;
  • (জ) কবর জিয়ারত করা;
  • (ঝ) নিজের জন্য, পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও সকল মোমিন মুসলমানের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা।

যা যা করা উচিত নয়

  • (১) আতশবাজি, পটকা ফোটানো
  • (২) ইবাদত-বন্দেগি বাদ দিয়ে বেহুদা ঘোরাফেরা করা
  • (৩) অনাকাঙ্ক্ষিত আনন্দ-উল্লাস করা
  • (৪) অযথা কথাবার্তা ও বেপরোয়া আচরণ করা
  • (৫) অন্য কারও ইবাদতের বা ঘুমের বিঘ্ন ঘটানো
  • (৭) হালুয়া-রুটি বা খাওয়া-দাওয়ার পেছনে বেশি সময় নষ্ট করে ইবাদত থেকে গাফিল থাকা।

শবে বরাত ও হালুয়া-রুটি!

শবে বরাতের সঙ্গে হালুয়া-রুটির একটি প্রচলন পরিলক্ষিত হয়। হালুয়া আরবি শব্দ, অর্থ হলো মিষ্টি বা মিষ্টান্ন। রাসুলুল্লাহ (সা.) মিষ্টি পছন্দ করতেন, এ কথা সুবিদিত; তিনি গোশত পছন্দ করতেন, তা-ও অবিদিত নয়। যা-ই হোক শবে বরাত হলো ইবাদতের রাত, দান-খয়রাত করা ও মানুষকে খাওয়ানো একপ্রকার ইবাদত; তবে এই দিন ও রাতকে হালুয়া-রুটিতে পরিণত করে ইবাদত থেকে গাফেল হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তেমনি হালুয়া-রুটির ওপর ফতোয়া প্রদানও প্রজ্ঞাপ্রসূত নয়।

5/5 - (2 votes)

 সাবস্ক্রাইব

 দরকারি খবরাখবর ও তথ্য সবার আগে পেতে আমাদের ফেসবুক পেজসহ অন্যান্য সোশ্যল প্লাটফর্মগুলোতে Follow/Subscribe করুন।

Like/Follow our Facebook page

Subscribe our Instagram channel

Follow our Google news page

Subscribe our Youtube channel

সর্বশেষ আপডেট পেতে Edu Daily 24 এর Facebook পেজ, Google news পেজ ও Youtube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব/ফলো করুন। নোটিফিকেশন পেতে APPও ইনস্টল করে রাখতে পারেন।

মন্তব্য করুন

You cannot copy content of this page