১৫ রমজান কি হবে ২০২৩, শুক্রবার বিকট আওয়াজ সম্পর্কে হাদিস কি বলে
১৫ রমজান কি হবে, বিকট আওয়াজ সম্পর্কে হাদিস কি বলে, এসব ব্যাপার নিয়ে কয়েক দিন ধরে বেশ আলোচনা ও জানার আগ্রহ চলছে অনলাইনে। বেশ কয়েকদিন ধরে সাধারণ মানুষের মাথায় শুধু একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে। ১৫ রমজান শুক্রবার পৃথিবীতে কি ঘটতে যাচ্ছে? বিশেষ করে বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশে এবারের রমজান শুক্রবার দিয়ে শুরু হওয়ায় এ বিভ্রান্তি আরও বেশি ছড়াচ্ছে।
১৫ রমজান কি হবে
বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশে এবারের রমজান শুক্রবার দিয়ে শুরু হওয়ায় এই বিষয়ে মানুষ আরো কৌতুহলী হচ্ছে। কিন্তু সৌদি আরবসহ অনেক দেশে শুক্রবার রোজা শুরু হয়নি এবং ১৫ রমজানও শুক্রবার নয়।
কেয়ামতের সবচেয়ে বড় আলামত হলো ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশ। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত ভবিষ্যদ্বাণীর আলোকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা-বিশ্বাস হলো শেষ জমানায় প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদির আবির্ভাব সত্য। ইমাম মাহদি নবি-পরিবার থেকেই হবেন। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘মাহদি আহলে বাইতের ফাতেমি বংশ থেকেই হবেন।’ (আবু দাউদ ৪২৮৪)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, ‘যদি কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার মাত্র একদিনও অবশিষ্ট থাকে তবুও আল্লাহ তাআলা ওই দিনকে দীর্ঘ করবেন এবং আমার বংশের এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করবেন। তার নাম আমার নামের সঙ্গে এবং তার পিতার নাম আমার পিতার নামের সঙ্গে মিলে যাবে।’ (আবু দাউদ ৪২৮২)
হজরত হোজাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, তার চেহারা হবে উজ্জ্বল তারকার ন্যায়।’ (কানজুল উম্মাল ৩৮৬৬৬)
হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ইমাম মাহদি প্রশস্ত ললাট এবং লম্বা ও সরু নাকের অধিকারী হবে।’ (আবু দাউদ ৪২৮৫)
কেয়ামত বা পৃথিবী ধ্বংস পূর্ব মুহূর্তের সে সময়টিতে পৃথিবীর পরিস্থিতি হবে ভয়ংকর। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেনম নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সেই মহান সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ, অবশ্যই মানুষের ওপর এমন একটি জামানা আসবে যখন হত্যাকারী বুঝতে পারবে না কী কারণে হত্যা করেছে এবং নিহত ব্যক্তিও বুঝতে পারবে না কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে।’ (মুসলিম ২৯০৮)
ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশের আলামতসংক্রান্ত একটি হাদিস এসেছে। কোনো এক জুমাবার হবে ১৫ রমজানে। সেদিন আকাশে বিকট আওয়াজ হবে। হাদিসটি ফিরোজ দায়লামি বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো এক রমজানে আওয়াজ আসবে’।
সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! রমজানের শুরুতে নাকি মাঝামাঝি সময়ে? নাকি শেষ দিকে?’ নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘না, বরং রমজানের মাঝামাঝি সময়ে। ঠিক মধ্য রমজানের রাতে। শুক্রবার রাতে আকাশ থেকে একটি শব্দ আসবে। সেই শব্দের প্রচণ্ডতায় ৭০ হাজার মানুষ বেহুশ হয়ে যাবে আর ৭০ হাজার বধির হয়ে যাবে।’
বিজ্ঞ হাদিস বিশারদগণ হাদিসের এ বর্ণনাটিকে অত্যন্ত দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিকট আওয়াজ সম্পর্কে হাদিস কি বলে
হাদিসের এক বর্ণনায় বলা হয়েছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো এক রমজানে আওয়াজ আসবে’। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, রমজানের শুরুতে নাকি মাঝামাঝি সময়ে? নাকি শেষ দিকে?’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘না, বরং রমজানের মাঝামাঝি সময়ে। ঠিক মধ্য রমজানের রাতে। শুক্রবার রাতে আকাশ থেকে একটি শব্দ আসবে। সেই বিকট শব্দের কারণে ৭০ হাজার মানুষ বেহুঁশ হয়ে যাবে আর ৭০ হাজার বধির হয়ে যাবে।’ (আল মুজামুল কাবির)
শায়খ আব্দুল আজিজ বিন বাজ (রহ.) বলেন, আমার কাছে খবর এসেছে, কিছু অজ্ঞ লোক এই বক্তব্যটিকে নবীজি (সা.)-এর বক্তব্য বলে চালিয়ে দিয়ে মিথ্যা হাদিস সংবলিব লিফলেট বিলি করছে। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, এর আগেও ১৫ রমজান নিয়ে এ রকম মিথ্যা ছড়ানোর ঘটনা পৃথিবীতে ঘটেছিল, যা কোনো সচেতন মুসলিম কোনোভাবেই করতে পারে না। কারণ নবীজি (সা.)-এর বক্তব্য বলে মিথ্যা হাদিস ছড়িয়ে দেওয়া জাহান্নামে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। নবীজি (সা.) এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।
হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘আলী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, তোমরা আমার ওপর মিথ্যারোপ করো না। কারণ আমার ওপর যে মিথ্যারোপ করবে সে জাহান্নামে যাবে।’ (বুখারি, হাদিস : ১০৬)