৪১তম বিসিএস প্রার্থীদের জন্য যা যা করণীয় ও বর্জনীয়
© গাজী মিজানুর রহমান
অবশেষে প্রকাশিত হলো বহুল কাঙ্ক্ষিত ৪১তম বিসিএস সার্কুলার। বিসিএসে ২ হাজার ১৬৬ জনকে নেওয়া হবে। ৫ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে এই বিসিএসের জন্য আবেদন করতে পারবে বিসিএস পরীক্ষার্থীরা। আবেদন করা যাবে ২০২০ সালের জানুয়ারির ৪ তারিখ পর্যন্ত।
প্রার্থীর বয়স ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর থেকে গণনা করা হবে। অর্থাৎ কোনো সাধারণ প্রার্থীর বয়সের ক্ষেত্রে তার জন্ম তারিখ থেকে ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর পর্যন্ত ৩০ বছর বা তারও কম হলে সে আবেদন করতে পারবে। আবার মুক্তিযোদ্ধা কোটার প্রার্থীর ক্ষেত্রে ৩২ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করতে পারবে।
এই বিসিএসে সবচেয়ে বেশি নেওয়া হবে শিক্ষা ক্যাডারে। শিক্ষা ক্যাডারে সর্বমোট ৯০৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে বিসিএস সাধারণ শিক্ষায় ৮৯২ জন প্রভাষক, কারিগরি শিক্ষা বিভাগে ১০ জন প্রভাষক নেওয়া হবে। শিক্ষার পর বেশি নিয়োগ দেয়া হবে প্রশাসন ক্যাডারে। প্রশাসনে মোট ৩২৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। অন্যদিকে
পুলিশে ক্যাডারে নিয়োগ দেয়া হবে ১০০ জন। পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫ জন, সহকারী কর কমিশনার (ট্যাক্স ক্যাডার) ৬০ জন, কাস্টমস ক্যাডারের সহকারী কমিশনার (শুল্ক ও আবগারি) ২৩ জন, আনসার ক্যাডারে ২৩ জন, অর্থ মন্ত্রণালয়ে সহকারী মহা হিসাবরক্ষক (নিরীক্ষা ও হিসাব) ২৫ জন ও সহকারী নিবন্ধক ৮ জন নেওয়া হবে।
বিসিএসের আবেদনের আবেদনের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে সতর্কতা থাকতে হবে-
১। নিজের নাম, পিতার নাম, মাতার নামের বানান যেন কোনোভাবেই ভুল না হয় এবং সেটা যেন সার্টিফিকেট অনুযায়ী যায়। (কারোর সার্টিফিকেট ও ন্যাশনাল আইডি কার্ডে দুই যায়গায় দুরকম হলে সার্টিফিকেট অনুযায়ী দিবেন। আইডি কার্ড পরে ঠিক করে নিবেন।)
২। স্থানী ঠিকানা নিজের জন্মস্থান তথা জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী দিবেন।
৩। বর্তমান ঠিকানার ক্ষেত্রে আপনি বর্তমানে যেখানে অবস্থান করছেন সেটা দিতে পারেন। তবে বর্তমান ঠিকানার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন আপনি এখানে নিয়োগের আগ পর্যন্ত থাকবেন কিনা। পিএসসি থেকে কোনো চিঠি আসলে সেটা গ্রহণ করতে পারবেন কিনা, বা সেই চিঠির সংবাদ পাবেন কিনা। পুলিশ বা গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন আসলে কেউ শত্রুতাপূর্ণ কোনো মন্তব্য বা রিপোর্ট দিবে কিনা সেই বিষয়টি মাথায় রাখবেন। আমার মতে, সম্ভব হলে স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা দুটিই এক হলেই ভালো।
৪। শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে জিপিএ/সিজিপিএ অন্তত দুইবার চেক করে দিবেন, যেন কোনভাবে ভুল না হয়। সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম/বোর্ড তো দেখবেনই।
৫। ক্যাডার চয়েজের ক্ষেত্রে আপনার যে ক্যাডারটি বেশি পছন্দ সেটিই আগে দিবেন। এরপর যে ক্যাডারের পদসংখ্যা বেশি সেটি দেয়া ভালো বলে আমি মনে করি।
ক্যাডার চয়েজের ক্ষেত্রে একটা বিষয় মনে রাখবেন, আপনি চাইলে শুধু একটি ক্যাডারও চয়েজ দিতে পারেন, আবার চাইলে সার্কুলারে উল্লেখিত সবগুলো সাধারণ ক্যাডার চয়েজে দিতে পারেন। এতে কোনো সমস্যা নেই।
৬। সর্বশেষ আবেদনটি ফাইনালি সাবমিট করার আগে আরো দুইবার চেক করে নিবেন, সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা।
আবেদন শেষ করে Applicant’s Copy এর অন্তত ২ কপি প্রিন্ট করে রাখবেন। এবং সম্ভব হলে নিজের ইমেইল আইডিতে রেখে দিবেন। টাকা জমা দেয়ার পর Admit Card পাবেন। সেটাও ২ কপি প্রিন্ট করে রেখে দিবেন এবং সম্ভব হলে কম্পিউটারে নিজের নামে Applicant’s Copy ও Admit Card একটি ফোল্ডারে রেখে দিবেন সেভ করে।
৭। ভবিষ্যতে যেন User ID ও Password হারিয়ে গেলে বিড়ম্বনার না পড়েন, সেজন্য কোনো ডাইরি বা খাতায় লিখে রাখুন।
- মনে রাখবেন, আপনার একটি অসর্তকতা আর ভুলে জন্য পড়তে হতে পারে অনেক বড় বিড়ম্বনায়। হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে আপনার স্বপ্নের বিসিএস!
ইনশাআল্লাহ, আগামী পর্বে জানাবে ‘৪১তম বিসিএস প্রস্তুতি কিভাবে নিলে পাশ করতে পারবেন’
© গাজী মিজানুর রহমান
- ৩৫তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার।
- সাবেক সিনিয়র অফিসার, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড।
- সাবেক সহকারী শিক্ষক, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (৩৪তম বিসিএস নন-ক্যাডার)
- সাবেক প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক: বিসিএস টেকনিক (বিসিএস স্পেশাল প্রাইভেট প্রোগ্রাম)
- লেখক : বিসিএস প্রিলিমিনারি অ্যানালাইসিস (বাংলাদেশের প্রথম সাজেশনভিত্তিক বিসিএস প্রিলির পূর্ণাঙ্গ বই); প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ অ্যানালাইসিস (বাংলাদেশের প্রথম সাজেশনভিত্তিক প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ বই)
শিক্ষা ও ক্যারিয়ার বিষয়ে নিয়মিত আপডেট পেতে
পেজে লাইক দিয়ে রাখুন