হাবিবুর রহমান তারেক •
‘শিক্ষাবিরতি’ কিংবা ‘বয়স’−কোনো ব্যাপারই না! অথচ অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্টুডেন্ট ভিসা রিফিউজ হয় এ দুটি কারণেই। পত্রিকার পাতা খুললেই চোখে পড়ে বিভিন্ন ভিসা এজেন্সি ও কনসালটেন্সি ফার্মের নানান বিজ্ঞাপন। ‘সাত দিনে ভিসার গ্যারান্টি’, ‘আগে ভিসা পরে টাকা’, ‘খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ’−এ ধরনের চমকপ্রদ অনেক কথা বিজ্ঞাপনে লেখা থাকলেও আদতে তা ফাঁকা বুলি। বিদেশে উচ্চশিক্ষায় যেতে চান এমন শিক্ষার্থীদের কাছে ভুল তথ্য দিয়ে বা সঠিক তথ্য গোপন করে প্রতারণা করছে বিভিন্ন কনসালটেন্সি ফার্ম।
তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী শামীম জানান, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষার বিষয়ে সহযোগিতা পেতে কাকরাইলের কনসালটেন্সি ফার্ম লিংকার্স ইন্টারন্যাশনালে যান। ফার্মটি আবেদন ফি বাবদ ১৫ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা জমা দেওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ায় ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা নেই জানিয়ে সাইপ্রাসে আবেদন করার পরামর্শ দিয়ে আরো ১০ হাজার টাকা দাবি করে। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে তারা কোনো কথা বলেননি।
সুইডেনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র কামরুল হাসানের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করে ধানমণ্ডির একটি কনসালটেন্সি ফার্ম। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ঘেঁটে কোনো স্কলারশিপের তথ্য না পেয়ে পাসপোর্ট, কাগজপত্র ও টাকা ফেরত চাইলে তারা মারমুখী আচরণ করে।
প্রতিবছরই বাংলাদেশ থেকে লক্ষাধিক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার আশায় পাড়ি জমালেও এর চেয়ে বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থী এভাবেই প্রতারিত হচ্ছে।
কী করছে কনসালটেন্সি ফার্মগুলো
শিক্ষার্থীর যোগ্যতা অনুযায়ী কোন দেশে পড়তে যাবেন, বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন, আবেদন, ভর্তি, আবাসন, ভিসা তথ্যসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, যেমন_পাসপোর্ট, ব্যাংক সলভেন্সি ইত্যাদি প্রস্তুত এবং সে দেশে থাকার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেওয়াই মূলত একটি কনসালটেন্সি ফার্মের কাজ। সরেজমিনে পরামর্শ নিতে গিয়ে দেখা গেছে, কোনো কোনো ফার্ম ফাইল ওপেনিং কিংবা নাম নিবন্ধন ছাড়া বিস্তারিত কোনো তথ্যই দিতে চাচ্ছে না, আবার কেউ কেউ অছাত্রদেরও বিদেশে ছাত্র ভিসায় পাঠানোর গ্যারান্টি দিচ্ছে। স্টুডেন্ট ভিসা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অস্বচ্ছ ধারণার সুযোগে ফার্মগুলো ভুল তথ্য দিয়ে বিভিন্ন ফির অজুহাতে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। শুধু কাউন্সেলিং সেবা দিয়েই অনেক ফার্ম দাবি করছে ৩০ হাজার টাকা।
নেই সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা
বিদেশে শ্রমিক প্রেরণকারী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর নিবন্ধন বাধ্যতামূলক হলেও স্টুডেন্ট কনসালটেন্সি ফার্মগুলোর নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। সিটি করপোরেশন থেকে শুধু একটি ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করেই কার্যক্রম শুরু করে এসব প্রতিষ্ঠান। কিছু অসাধু বিদেশি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে তারা চালিয়ে যাচ্ছে ‘লোক ঠকানো’ কার্যক্রম।
যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ‘টিয়ার ফোর’ ভিসা পদ্ধতি প্রণয়নের পর গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ৩৫ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছে। এর আগে ও পরে দেশটিতে উচ্চশিক্ষার্থে পাড়ি জমিয়েছে আরো কয়েক লাখ শিক্ষার্থী। কাজের সংস্থান না হওয়ায় দেশটিতে বেশির ভাগ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ।
স্পন্সর, ভিসা গ্যারান্টি ও নিশ্চিত স্কোর
ভুয়া অভিভাবক বানিয়ে ‘স্পন্সর’ অর্থাৎ ‘ব্যাংক সলভেন্সি’ সাপোর্ট দিচ্ছে অনেক কনসালটেন্সি ফার্ম। মাহফুজ হাসান মাসুম ও শাহরিয়ার নামের দুজন শিক্ষার্থী জানান, শ্যামলীর ইউরোপা নামের একটি ফার্ম তাদেরকে ১০ লাখ টাকার ব্যাংক সলভেন্সির কাগজপত্রের ব্যবস্থা করে দেয়। এর বিনিময়ে প্রতিষ্ঠানটি আদায় করে ২০ হাজার টাকা।
প্রতিষ্ঠানটির সহকারী পরিচালক ফিরোজ আহমেদ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ব্যাংক সলভেন্সির ব্যাপারে আমরা তথ্য সহযোগিতা করি মাত্র।’ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে সাইপ্রাস, সুইডেন ও মালয়েশিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসার নিশ্চয়তা দিয়ে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে কিছু কনসালটেন্সি ফার্ম। ফিউচার অ্যাড কনসালটেন্সির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, কয়েকটি দূতাবাসের কর্মকর্তারা ভিসা প্রাপ্তিতে সহযোগিতা করে থাকেন।
ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত শিক্ষা মেলায় চোখে পড়ল ‘নিশ্চিত আইইএলটিএস স্কোর’ লেখা গুলশানের ইনোভেটিভ নামের একটি কনসালটেন্সি ফার্মের লিফলেট ও বুকলেট। ছাত্র পরিচয়ে ফার্মটির পরিচালক শরিফ আহমেদ খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘স্কোর তোলার দায়িত্ব আমাদের, ভর্তির সিদ্ধান্ত আপনার।’
কিভাবে তিনি অন্যের স্কোর তুলবেন, সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে বলেন, ‘আগে ভর্তি হোন তারপর নিজেই দেখবেন।’ বারবার প্রশ্ন করা হলেও তাঁর ‘নিশ্চিত স্কোর’ রহস্যের কোনো কিনারা পাওয়া যায়নি!
স্টুডেন্ট ভিসার নামে আদম ব্যবসা
তুলনামূলক সহজ নিয়ম ও ভিসা প্রক্রিয়ায় জটিলতা নেই_এমন সব দেশকেই ব্যবসার ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সি। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত হাসান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক হাসান আরিফ বলেন, ”২০০৮ সালে মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য ইস্যুকৃত কলিং ভিসা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিলে নড়েচড়ে বসে এ দেশি কিছু এজেন্সি। মালয়েশিয়ায় প্রতিষ্ঠিত এবং আদম ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত অর্ধশত বাংলাদেশি নাগরিক বেছে নেয় আদম আমদানির(!) বিকল্প ‘স্টুডেন্ট ভিসা প্রকল্প’।”
তিনি আরো জানান, সিলেংগর প্রদেশের ক্লাং, পেটালিং জায়া, শাহ আলম, সানওয়ে এলাকায় এ প্রকল্পের আওতায় গড়ে উঠেছে কিছু ক্ষণস্থায়ী(!) কলেজ। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে শুরু করা হয় ভর্তি কার্যক্রম। কলেজ কর্তৃপক্ষ ‘অফার লেটার’ পাঠালেই ভিসা জটিলতা থাকে না। আর এ সুযোগ নিচ্ছে বাংলাদেশি অসাধু এজেন্সিগুলো। মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠান পগুক তেগাক সিন্দিরিয়ান বারহাডের পরিচালক হাজি আসাদ এবং মোহাম্মদ রানার (বাংলাদেশি) যোগসাজশে গত বছর প্রতারিত হয়েছে অর্ধশত বাংলাদেশি। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এ তথ্য।
মালয়েশিয়ার দৈনিক দ্য স্টার, দ্য মালয় মেইল, বেরিতা হারিয়ানসহ বিভিন্ন পত্রিকায় ছাত্র ভর্তির নামে প্রতারণার খবর প্রকাশিত হয়েছে বেশ কয়েকবার।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় সে দেশের সরকার গত দুই বছরে অনুমোদন বাতিলসহ বেশ কিছু কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। এসব কলেজে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীরা পালিয়ে বিভিন্ন স্থানে কাজ করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে কারাভোগও করতে হচ্ছে অনেককে।
বিভিন্ন ফির নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়
ফাইল ওপেনিং, কাউন্সেলিং, অ্যাডমিশন সার্ভিস চার্জ, ভিসা প্রসেসিং, টিউশন ফি ট্রান্সফার, স্পন্সর সাপোর্ট, পার্টটাইম জব প্লেসমেন্ট এবং ফাউন্ডেশন কোর্সের নাম করে কনসালটেন্সি ফার্মগুলো হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। ছোট ছোট ফার্মগুলোর পাশাপাশি তুলনামূলক বড় ফার্মগুলোর বিরুদ্ধেও রয়েছে অতিরিক্ত ফি আদায়, তথ্য গোপনসহ বিভিন্ন অভিযোগ।
গত জানুয়ারিতে কাজী নাহিদ আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী ভিসা ওয়ার্ল্ডের মাধ্যমে স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাজ্যের সেন্ট এগনেজ কলেজে ভর্তি হন। টেলিফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ ফার্মটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ফির অজুহাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ করেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে সাইপ্রাস থেকে তথ্য গোপনের অভিযোগ করেন সায়েম নামের আরেক শিক্ষার্থী।
তিনি জানান, ভিসা ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষ বলেছিল, দেশটিতে পার্টটাইম চাকরি এবং দেশটি থেকে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে যাওয়ার সুযোগ আছে। তাদের কথায় সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ করে হোটেল ম্যানেজমেন্ট কোর্সে ভর্তি হয়ে সাইপ্রাস আসার পর দেখি অসংখ্য বাংলাদেশি বেকার, পার্টটাইম চাকরির কোনো সুযোগ নেই।
ভিসা ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের কর্মকর্তা মেহেদি সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘পার্টটাইম চাকরি নির্ভর করে শিক্ষার্থীর যোগ্যতার ওপর।’ তিনি দাবি করেন, অনেকেই দেশটিতে পার্টটাইম জব করে নিজেদের পড়াশোনা ও থাকা-খাওয়ার খরচ জোগাচ্ছে।
কালো তালিকাভুক্ত কলেজে ভর্তি
গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাজ্য সরকারের ‘ইউকে বর্ডার এজেন্সি’ (ইউকেবিএ) সে দেশের ৫৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন বাতিল করে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট আসনের চেয়ে বেশিসংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ছিল। অনুমোদন বাতিলের পরও থেমে নেই এসব কলেজের বাংলাদেশে অবস্থিত অফিসের কার্যক্রম। লন্ডনের ‘আইকন কলেজ অব টেকনোলজি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’ ইউকেবিএর কালো তালিকাভুক্ত কলেজ হলেও চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ অফিসের ভর্তি কার্যক্রম।
রাজধানীর গ্রিন রোডে অবস্থিত এ কলেজের আঞ্চলিক অফিসের কর্মকর্তা কামাল হোসেন দাবি করেন, ‘আগে কালো তালিকাভুক্ত ছিল এখন আবার সব ঠিক(!) হয়ে গেছে।’ ইউকেবিএর ওয়েবসাইটে খোঁজ নিয়ে তাঁর বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
কালো তালিকাভুক্ত এমন আরো ডজনখানেক কলেজের ‘আঞ্চলিক অফিস’ ভর্তি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, যাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হলবর্ন কলেজ, নিউ ক্যাসল কলেজ, নর্থ লন্ডন কলেজ অব বিজনেস স্টাডিজ, ইউকে কলেজ অব বিজনেস অ্যান্ড কম্পিউটিং, উইলিয়াম কলেজ, উইলসন কলেজ, ওয়েস্ট লন্ডন বিজনেস কলেজ।
গুলশানের একটি কনসালটেন্সি ফার্ম নাম প্রকাশ না করে জানায়, অধিকাংশ শিক্ষার্থীই পড়াশোনা নয়; বরং কাজ করতে বিদেশে যায়। এজেন্সিরা এসব শিক্ষার্থীকেই মূলত টার্গেট করে এবং সঠিক তথ্য গোপন করে আদায় করে মোটা অঙ্কের টাকা।
প্রতারণা এড়াতে পারেন যেভাবে
কনসালটেন্সি ফার্মের দ্বারস্থ না হয়েও শিক্ষার্থী নিজেই উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়ার ধাপগুলো সম্পন্ন করতে পারবেন। আর তা সম্ভব না হলে একটু সতর্ক হলেই এসব ফার্মের প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
* যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ফোন, ফ্যাক্স বা অনলাইনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন।
* বিদেশি মানসম্পন্ন অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের অনুমোদিত এজেন্ট ও কনসালটেন্সি ফার্ম বাংলাদেশে রয়েছে। তা ছাড়া ইউকে, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার উল্লেখযোগ্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের রিজিওনাল অফিস বাংলাদেশে রয়েছে। তাদের সাহায্য নিতে পারেন।
* যদি কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো এজেন্সি না থাকে সে ক্ষেত্রে অনলাইন থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে প্রথম সারির দু-একটি কনসালটেন্সি ফার্মের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। অনলাইন থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সঙ্গে সেসব ফার্ম থেকে দেওয়া তথ্য মিলিয়ে নিতে পারেন।
* অধিকাংশ কনসালটেন্সি ফার্মই ভুয়া ব্যাংক সলভেন্সি অর্থাৎ স্পন্সর সংক্রান্ত কাগজপত্র ব্যবস্থা করার বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে পার পেয়ে গেলেও এ কারণে আইনি ঝামেলাসহ ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই এ জটিলতায় না যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
* ভর্তির আগে খোঁজ নিতে হবে কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের অনুমোদিত কি না। নতুন প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি না হওয়াই ভালো।
* যদি কোনো কনসালটেন্সি ফার্মকে ভর্তির জন্য কাগজপত্র ও ফি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, সে ক্ষেত্রে আগে থেকেই নিশ্চিত হয়ে নিন, পরবর্তীতে আর কী কী খাতে ফি দিতে হবে।
* বেশির ভাগ দেশে শিক্ষাবিরতি থাকলে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। মালয়েশিয়াসহ কিছু দেশ এ ক্ষেত্রে বিষয় ও কলেজভেদে সুযোগ দিয়ে থাকে। তাই কোনো ফার্ম যদি বলে ‘শিক্ষাবিরতি থাকলেও আবেদন করতে পারবেন’ তাহলে সতর্ক থাকবেন।
* বেশির ভাগ মানসম্মত প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে আইইএলটিএস বা টোফেল লাগে। যদিও কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সনদ ছাড়াও ভর্তি হওয়া যায়। এ ব্যাপারে ভালোভাবে জেনে নিন।
* টাকা লেনদেনের সময় নিজের কাছে লেনদেনের প্রমাণ রাখুন।
সূত্র: কালের কন্ঠ । সিলেবাসে নেই । তারিখ: ১১ মে, ২০১০