কোচিং না করেও বিসিএস প্রিলি পাশ করা সম্ভব?


এডু ডেইলি ২৪ প্রকাশ: জুলাই ৪, ২০২০, ১২:১৭ অপরাহ্ন / আপডেট: সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪, ১:১১ অপরাহ্ন /
কোচিং না করেও বিসিএস প্রিলি পাশ করা সম্ভব?

আপনার কোনো সহপাঠী বা ফ্রেন্ড বিসিএস প্রিলির জন্য অনেক আগ থেকেই কোচিং করছে, আর আপনি এখনো ভর্তি হননি বলে চিন্তিত? সে কোচিং করে সব পড়া শেষ করে ফেলেছে বা সে বিসিএস প্রিলি পাশ করে ফেলবে, আর আপনি ফেল করবেন?
আসলে কিন্তু আপনি যা ভাবছেন, বিষয়টা তেমন নয়। কোচিং না করেও বিসিএস প্রিলি পাশ করা সম্ভব।

বিসিএস পাশ করার জন্য কোচিং করা জরুরি কিনা সেটা অনেকটা নির্ভর করছে প্রার্থীর ওপর। বিসিএস কোচিং করলেই কেউ পাশ করে ফেলবে, আর কোচিং না করলে ফেল করে ফেলবে, বিষয়টি তেমনও নয়।

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যদি-
১. আপনার বাসায় ভালো পড়াশোনা হয়।
২. যদি আপনি বাসায় পড়ে নিজে নিজে বিসিএসের টপিকগুলো বুঝতে পারেন।
তাহলে আপনার কোচিং করার দরকার নেই।

আর যদি আপনার বাসায় ভালোভাবে পড়াশোনা না হয় কিংবা নিজে নিজে পড়ে বুঝতে না পারেন তাহলে আপনার বিসিএস কেন্দ্রিক কোনো ভালো কোচিং বা বিসিএস প্রাইভেট প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারেন।
তবে এই ক্ষেত্রে আপনাকে খেয়াল রাখতে তবে এই ক্ষেত্রে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে-
১। কোচিং বা প্রাইভেট প্রোগ্রামের মান কেমন।
২। সেখানে যারা পড়াচ্ছেন বা যারা ক্লাস নিচ্ছেন তারা নিজেরা বিসিএস ক্যাডার কিনা।

অন্তত এই দুটি বিষয়ের উপর ভালোভাবে লক্ষ্য রাখবেন। কেননা, যে ব্যক্তি নিজে বিসিএস ক্যাডার না বা বিসিএস ক্যাডার হতে পারেনি কিংবা নিজে জীবনে কোনোদিন বিসিএস প্রিলি পাশ করতে পারেননি সেই ব্যক্তি বিসিএস সম্পর্কে কতটুকু জ্ঞান রাখেন বা বিসিএস এর উপর কতটুকু ভালো পড়াবেন তা যুক্তিতর্ক সাপেক্ষ (তবে দুই-এক ব্যতিক্রমও আছেন, যারা বিসিএস ক্যাডার বা হয়েও অনেক সময় ভালো পড়ান। তবে সেটা সংখ্যায় নগণ্য।)

আমি মনে করি, কেউ বাসায় পড়ুক বা কোচিং করুক কিংবা স্পেশাল প্রাইভেট প্রোগ্রামে পড়ুক। তাকে নিজেই বুঝতে কোথায় সে বেশি উপকৃত হচ্ছে এবং তার দুর্বল পয়েন্টগুলো বের করা। আর দুর্বল পয়েন্টগুলো দূর করে স্ট্রিং হওয়ার চেষ্টা করা। আসলে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতির সবচেয়ে ইফেক্টিভ ব্যাপার হলো গ্রুপ স্টাডি করতে আমি মনে করি, কেউ বাসায় পড়ুক বা কোচিং করুক কিংবা স্পেশাল প্রাইভেট প্রোগ্রামে পড়ুক। তাকে নিজেই বুঝতে কোথায় সে বেশি উপকৃত হচ্ছে এবং তার দুর্বল পয়েন্টগুলো বের করা। আর দুর্বল পয়েন্টগুলো দূর করে স্ট্রিং হওয়ার চেষ্টা করা। আসলে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতির সবচেয়ে ইফেক্টিভ ব্যাপার হলো গ্রুপ স্টাডি করতে পারলে।
এই জন্য এমন একটা গ্রুপ তৈরি করা, যেখানে কেউ একজন ইংলিশে এক্সপার্ট থাকবেন, কেউ ম্যাথে কেউ বাংলায়, কেউ সাধারণ জ্ঞানে।
সব কথার মূল কথা হলো, আপনি কোচিং করুন আর প্রাইভেট পড়ুন, যা-ই করুন না কেন, আপনার পড়াটা আপনাকে পড়তে হবে। কোচিং বলি আর প্রাইভেট প্রোগ্রাম বলি সবাই আপনাকে পথ দেখাবে মানে গাইডলাইন দিবে, ভালো করার টেকনিক শিখিয়ে দিবে। তবে, ভালো আপনাকেই করতে হবে এবং ভালো করার জন্য যা যা করা দরকার তাও আপনাকে করতে হবে। কোনো, কোচিং বা প্রাইভেট প্রোগ্রাম আপনাকে পাশ করিয়ে দিতে পারবে না! আর এটাই বাস্তব সত্য। এবার আপনি মানতেও পারেন নাও মানতে পারেন। সেটা আপনার বিষয়।

কেউ কোচিং করলেই বিসিএস ক্যাডার হয়ে যাবে আর কেউ কোচিং না করলে বিসিএস ক্যাডার হতে পারবে না; বিষয়টা কিন্তু এমন নয়। তাই আপনার কোনো ঢাকা কিংবা অন্য কোথাও কোচিং করছে, কিন্তু আপনি করতে পারছেন না। সে বিসিএস ক্যাডার হয়ে যাবে, আপনি হতে পারবেন না এমনটি ভাবার কোনো দরকার নেই। মানুষ অসুস্থ হলেই সুস্থতার জন্য ডাক্তারের কাছে, সুস্থ মানুষ তার সুস্থার জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়ার বিশেষ কোনো প্রয়োজন নেই। তারপরও কেউ গেলে সেটা নিতান্তই বিলাসিতা ছাড়া আর কিছু নয়!

তাই বলি, আপনি যদি বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ভালো মানের বই সংগ্রহ করে বাসায় ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারেন নিজে বুঝে বুঝে, আপনিও ভালো করতে পারবেন।

যাদের হাতে সময় কম বা চাকরিজীবী কিংবা এত বেশি বই পড়তে পারেন না তারা “BCS Preliminary Analysis” বইটি পড়লে অনেক বেশি উপকৃত হবেন। কেননা এই এক বইয়ে বিসিএস সব বিষয় অর্থাৎ ১২টি বিষয় একসাথে গুছানো আকারে পাবেন। এই বইয়ে কোনো অপ্রয়োজনীয় তথ্য নেই; শুধু পরীক্ষায় আসার মতো Important টপিকগুলো গুছিয়ে দেয়া আছে।

প্রিলির জন্য ২০০তে ১৮০-১৯০ পাওয়া লাগে না; যে কোনো প্রশ্নে ১২০ নম্বর পেলেই আপনি সেইফ বলা চলে!

অল্প সময়ে শুধু “BCS Preliminary Analysis” বইটি + প্রিলি প্রশ্নব্যাংক + “BCS Real Model Test” বইটি এবং আপডেট থাকার জন্য “কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স”; এই বইগুলো বুঝে বুঝে পড়তে পারলে ইনশাল্লাহ শর্টকাটে বিসিএস প্রিলি করা সম্ভব। কিন্তু বেশি বেশি জানার জন্য বেশি বেশি পড়ার বিকল্প নেই। সময় হাতে থাকলে অবশ্যই প্রিলির অন্যান্য বই পড়া উচিত।

একটি কথা মনে রাখবেন, “কম পড়বেন কিন্তু Important বিষয়গুলো গুছিয়ে পড়বেন।

Gazi-mizanur-rahman-35th-bcs-cadre-education
গাজী মিজানুর রহমান – ৩৫তম বিসিএস ক্যাডার

© গাজী মিজানুর রহমান

  • ৩৫তম বিসিএস ক্যাডার (টানা ৬ বার বিসিএস প্রিলিতে উত্তীর্ণ)
  • সাবেক সিনিয়র অফিসার (পূবালী ব্যাংক লিমিটেড)
  • সাবেক সহকারী শিক্ষক, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (৩৪তম বিসিএস নন-ক্যাডার)
  • প্রতিষ্ঠাতা : BCS টেকনিক (বিসিএস স্পেশাল প্রাইভেট প্রোগ্রাম)
  • লেখক : BCS Preliminary Analysis (বাংলাদেশের প্রথম সাজেশনভিত্তিক বিসিএস প্রিলির পূর্ণাঙ্গ বই)
  • লেখক : প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ Analysis (বাংলাদেশের প্রথম সাজেশনভিত্তিক প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ বই)
  • লেখক : শিক্ষক নিবন্ধন Analysis (বাংলাদেশের প্রথম সাজেশনভিত্তিক শিক্ষক নিবন্ধন বই)
Rate this post