বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি : কিভাবে শুরু করবেন?
কাট মার্কস নিয়ে ময়নাতদন্ত রেজাল্টের আগের দিন পর্যন্ত চলতেই থাকবে। যারা প্রিলিমিনারি পাস করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী, তারা সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই লিখিতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিন। কারণ রেজাল্টের পর লিখিত প্রস্তুতির জন্য সময় পাবেন খুব কম। লিখিত পরীক্ষায় ভাল নম্বর অর্জন করতে পারলে আপনি যে ক্যাডার হওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন, এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। যাই হোক, লিখিত নিয়ে কিছু বিষয় শেয়ার করছি আশা করি একটু হলেও উপকৃত হবেন।
১. ৩৫-৪০তম বিসিএসের প্রশ্নগুলো বেশ কয়েকবার দেখুন।এতে অাপনি প্রশ্নের প্যাটার্ন সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়ে যাবেন।প্রশ্ন সংগ্রহে না থাকলে লাইব্রেরি থেকে বিগত বছরের বিসিএস লিখিত পরীক্ষাসমূহের প্রশ্নব্যাংক কিনে নিন।এখানে অাপনি বিগত বিসিএসসমূহের সব প্রশ্ন একত্রে পেয়ে যাবেন।
২. বাড়তি বই না কিনে যেকোন ভাল প্রকাশনীর একসেট বই কিনুন।
৩. রিটেনের জন্য যত বেশি বই কিনবেন ততবেশি ধরা খাবেন। কারণ অল্পসময়ে সব পড়তে গিয়ে শেষে আর কোনটাই পড়া হয় না। তাই অন্যের কথায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত বই কেনা থেকে অন্তত এসময়টাতে বিরত থাকুন। যে কয়টা বই কিনবেন, তা খুব ভাল করে পড়বেন। আপনার দরকার ক্যাডার হওয়া, বিসিএস বিশেষজ্ঞ হওয়া না!
৪. এখন থেকেই ফ্রি হ্যান্ড রাইটিং ও অনুবাদ চর্চা শুরু করে দিন। প্রতিদিন ফ্রি হ্যান্ড রাইটিং চর্চা আপনার লেখার কোয়ালিটিকে অনেক বাড়িয়ে দিবে।
৫. অনুবাদ চর্চার সময় আক্ষরিক অনুবাদ না করে ভাবানুবাদ করতে চেষ্টা করুন।অনুবাদ চর্চা প্রথমদিকে একটু বিরক্তিকর ও কঠিন মনে হলেও নিয়মিত চর্চা করতে থাকলে দেখবেন যেকোন বিষয়ে অনুবাদ করার পারঙ্গমতা আপনার মধ্যে চলে আসছে।
৬. প্রতিদিন অন্তত দশটি Appropriate preposition ও ১০টি ইংরেজি শব্দের অর্থ শেখার চেষ্টা করুন। অনুবাদের সময় এটা অনেক কাজে দিবে।
৭. যারা বিজ্ঞানে একটু দুর্বল তারা ইউটিউবে বিজ্ঞানের বেসিক বিষয়ের উপর টিউটোরিয়াল ভিডিওগুলো দেখুন। ইউটিউবে বিসিএসের সিলেবাসের সাথে রিলেটেড অসংখ্য ভিডিও রয়েছে।এগুলো আপনার বিজ্ঞানের বেসিক বৃদ্ধিতে বেশ সহায়তা করবে বলে আমার বিশ্বাস ।
৮. প্রতিদিন পত্রিকা পড়ার অভ্যাস না থাকলে এখন থেকেই পড়ার চেষ্টা করুন। পত্রিকা পড়ার সময় শুধু বিসিএসের সাথে রিলেটেড সম্পাদকীয়, অর্থনীতি, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, জলবায়ু পরিবর্তন, নতুন প্রণীত আইন, আন্তর্জাতিক, বিভিন্ন দেশের সাথে সমঝোতা স্মারক, চুক্তি,বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনের গৃহীত সিদ্ধান্ত প্রভৃতি বিষয়গুলো পড়ুন। দুনিয়ার সব খবর রাখতে গেলে আপনার অযথা সময় নষ্ট হবে।
৯. ডাটা, উদ্ধৃতির জন্য একটি হ্যান্ডনোট করুন। পত্রিকা পড়া কিংবা গাইডবই পড়ার সময় যেসব ডাটা ও উদ্ধৃতি আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হবে তা হ্যান্ডনোটে লিখে রাখুন। হ্যান্ডনোট করার সুবিধা হলো একসাথে গোছানো থাকলে ডাটা, উদ্ধৃতি সহজে মনে থাকে ও পরীক্ষার খাতায় লেখা সহজ হয়।
১০. বিগত বছরের ও পরীক্ষায় আসার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নসমূহ নিয়ে নিজের জন্য একটি প্রশ্নব্যাংক তৈরি করুন। প্রতিটি বিষয়ের প্রশ্নব্যাংকের জন্য আলাদা খাতা সংরক্ষণ করুন।
বিসিএস লিখিতের জন্য প্রচুর তথ্য মনে রাখতে হয়। এই অল্পসময়ে অসংখ্য তথ্য মনে রাখাটাও খুব কষ্টের। প্রত্যেকেই এজন্য কিছু ইউনিক সিস্টেম ফলো করে। বিভিন্ন বিষয়ের তথ্যসমূহ মনে রাখতে আপনি নিজেই নিজের জন্য কিছু কৌশল খুঁজে বের করুন।
লেখক : দিদার নূর, এএসপি, বাংলাদেশ পুলিশ (৩৭তম বিসিএস)