মালয়েশিয়া ভিসা কবে খুলবে, যেসব কাজে লোক নেবে
মালয়েশিয়া ভিসা কবে খুলবে, এ নিয়ে অনেকেই অপেক্ষায় ছিলেন এতো দিন। অবশেষে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়া ভিসা খুলেছে দীর্ঘ তিন বছর পর।
১৯ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে দেশটির সঙ্গে কর্মী পাঠানো সংক্রান্ত সমঝোতা চুক্তি সই হয় বাংলাদেশের। এখন থেকে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো বৃক্ষরোপণ, বাগান, কৃষি, উৎপাদন, পরিষেবা, খনি ও খনন, নির্মাণ ও গৃহকর্মীর কাজে কর্মী নিয়োগ দিতে পারবে।
মালয়েশিয়া ভিসা কবে খুলবে ২০২১
১৯ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানী বা কর্মী পাঠানোর ব্যাপারে বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ ও মালয়েশিয়ার পক্ষে দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান সমঝোতা চুক্তি সাক্ষর করেন। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা শুরু হলো। অর্থাৎ এর মাধ্যমে মালয়েশিয়ার ভিসা খুলে গেলো।
মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান বলেন, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পরপরই বাংলাদেশি কর্মী নেওয়া শুরু হবে। এই শ্রমিকদের জন্য বাগান, কৃষি, উৎপাদন, পরিষেবা, খনি ও খনন, নির্মাণ এবং গৃহপরিচারকসহ বিভিন্ন খাত উন্মুক্ত থাকবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মানুসারে মালয়েশিয়ায় যেতে ইচ্ছুকদের সে দেশে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হতে পারে।
জানা গেছে, নানা অভিযোগ তুলে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল মালয়েশিয়া। এরপর দীর্ঘ ৭ বছর বন্ধ থাকার পর মালয়েশিয়া সরকার তাদের পাঁচটি খাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বয়ে ‘জিটুজি প্লাস’ পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে রাজি হওয়ার পর ২০১৬ সালে ঢাকায় দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। এরপর আবারো বন্ধ হয়ে যায় ভিসা প্রক্রিয়া। অবশেষে ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে আবারো কলিং ভিসার সুযোগ তৈরি হলো।
মালয়েশিয়া কাজের বেতন কত
জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সর্বনিম্ন মাসিক মজুরি/বেতন ১,২০০ রিঙ্গিত। যা বাংলাদেশি ২৪,৪২০ টাকার সমান (১ রিঙ্গিত ২০.১ টাকার সমান, রেট কম-বেশি হয়)। তবে দেশটিতে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের যথাযথ বেতন দেয় না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি এক বিবৃতিতে ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারারস (এফএমএম) জানায়, শিল্পখাতে ২০২২ সাল নাগাদ তাদের ৬ লাখের বেশি শ্রমিক লাগবে। রপ্তানীভিত্তিক কোম্পানিগুলোতে এই শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি।
৭-৮ লোকের বিদেশে কর্মসংস্থান হবে!
করোনা সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার সঙ্গে সঙ্গে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম চার মাসেই আড়াই লক্ষাধিক কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে। এর মধ্যে গত নভেম্বর মাসে ১ লাখ ২ হাজার ৮৬৩ জন কর্মী বিদেশে গেছেন। বিদেশ গমনের এই ধারা অব্যাহত থাকলে এ অর্থবছরে সাত থেকে আট লাখ লোকের বিদেশে বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থান হতে পারে।
এছাড়া, গ্রিসের সঙ্গে একটি আগ্রহপত্র স্বাক্ষর করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী। একইভাবে আলবেনিয়া, মাল্টা ও বসনিয়ার সঙ্গেও কর্মী পাঠানোর জন্য চুক্তি স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে। নতুন শ্রমবাজার হিসেবে কম্বোডিয়া, উজবেকিস্তান, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, ক্রোয়েশিয়াসহ আফ্রিকা মহাদেশের কয়েকটি দেশ এবং জাপান, সেনেগাল, বুরুন্ডি, সেশেলস, মালয়েশিয়ার সারওয়াকে কর্মী পাঠানো শুরু হয়েছে।