হাফ পাস নিয়ে বৈঠক, শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি
হাফ পাস নিয়ে বৈঠক করেছে সরকার ও পরিবহন মালিকরা। এদিকে, নিরাপদ সড়ক ও হাফ পাস নিয়ে ৯ দফা দাবি জানিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গাড়ি চাপায় নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনা ও বাসে হাফ ভাড়ার দেয়ায় শিক্ষার্থীদের হয়রানির প্রতিবাদে ২৫ নভেম্বর ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান, বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা।
সরকারের সঙ্গে পরিবহন মালিকদের বৈঠক
বাসে হাফ পাস চালুর বিষয়ে সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির বৈঠক হয়েছে ২৫ নভেম্বর। বৈঠকে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হলেও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আপাতত মালিকরা হাফ পাসে রাজি নন বলে জানিয়েছেন।
বৈঠকে বাস মালিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বেসরকারি বাসে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে না। যানজটে সড়কে ট্রিপ কমে গেছে। টায়ারসহ বাসের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের দাম বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় ঢাকাসহ বিভিন্ন মহানগরে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস চালু করা হলে বাসমালিকদের লোকসান গুনতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে বাসে হাফ পাসের বিষয়ে তাদের একটি প্রস্তাব সরকারের কাছে তুলে ধরবে।
বিআরটিসি বাসের ভাড়ায় ছাড়
সরকারি মালিকানাধীন বিআরটিসি বাসের ভাড়ায় শিক্ষার্থীদের ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে শিগগির ঘোষণা দেবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শিক্ষার্থীদের ‘হাফ ভাড়া’র দাবির বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) অডিটোরিয়ামে বৈঠক হয় সচিবদের। এতে এ সিদ্ধান্ত হয়।
শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি
ঢাকার ফার্মগেটে সরকারের কাছে ৯ দফা দাবি ঘোষণা করে ২৫ নভেম্বর বিকালে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করে ফিরে গেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ২৬ নভেম্বরের মধ্যে দাবি মানা না হলে ২৭ নভেম্বর সকাল ১১টা থেকে আবারো আন্দোলন শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
১. নাঈমসহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সব শিক্ষার্থীর ঘটনায় মামলার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে করা,
২. নাঈমসহ দুর্ঘটনায় নিহত সব শিক্ষার্থীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান,
৩. দুর্ঘটনায় আহত সব যাত্রী ও পরিবহনশ্রমিকের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা,
৪. ঢাকাসহ সারা দেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথে ভাড়ায় শিক্ষার্থীদের হাফ পাস প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে নিশ্চিত করা,
৫. বৈধ-অবৈধ যানবাহনের চালকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈধতার আওতায় আনা ও বিআরটিএর সব কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করা,
৬. সারা দেশে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা স্বয়ংক্রিয় ও আধুনিক এবং পরিকল্পিত নগরায়ণ নিশ্চিত করা,
৭. গণপরিবহনে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও সহিংসতা বন্ধ করা,
৮. জনসাধারণের জন্য ফুটপাত, ফুটওভারব্রিজসহ নিরাপদ চলাচল ব্যবস্থা নিশ্চিত করা,
৯. পরিকল্পিত বাস স্টপেজ ও পার্কিং নির্মাণ এবং এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা।