| |

এসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করুন ৫ মিনিটে

আপনার পাকস্থলী যদি একবার অতিরিক্র এসিড নিঃসরণ শুরু করে তাহলে আপনি কিছুতেই শান্ত থাকতে পারবেন না। বুক জ্বলা ও এসিডিক অনুভূতি আপনার দৈনন্দিন কাজে হস্তক্ষেপ করবে এবং আপনি আরো বেশি অস্থির হয়ে পড়বেন। এসিডিটির এই রকম সমস্যা থেকে খুব দ্রুত মুক্তি পাওয়ার কিছু উপায় জেনে নিই চলুন।

১। ঠান্ডা দুধ : এটি পরীক্ষিত ও প্রমাণিত যে, ঠান্ডা দুধ সবচেয়ে দ্রুত ও সবচেয়ে সহজে আপনার পেটের জ্বালাপোড়া প্রশমিত করতে পারে। দুধ ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ আর এই ক্যালসিয়াম অতিরিক্ত এসিড শোষণ করে এবং এসিডের উৎপাদনকে বাঁধা দেয়। ঠান্ডা দুধ জ্বালাপোড়া কমতেও সাহায্য করে। আপনার এসিডিটির সমস্যা শুরু হলে এক গ্লাস ঠান্ডা দুধ পান করুন চিনি ছাড়া। এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে দুধের সাথে ১ চামচ ঘি যোগ করতে পারেন।

২। এলাচি : এলাচি পাকস্থলীর ভেতরের আবরণকে প্রশমিত করতে এবং অতিরিক্ত এসিড নিঃসরণ কমাতে পারে। এলাচিতে প্রতিরক্ষামূলক উপাদান আছে বলে ইউনানী ঔষধে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন ধরণের গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল সমস্যার সমাধানের জন্য। ২টি এলাচি গুঁড়া করে ১ গ্লাস পানিতে দিয়ে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিন এবং ঠান্ডা হলে এটি পান করুন।

৩। মধু : মধু সাধারণত ঠান্ডা ও গলা ব্যথা দূর করতে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এটি এসিডিটির সমস্যা দূর করতেও চমৎকার কাজ করে। ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ এ প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানা যায় যে, মধু আঠালো ও ঘন বলে খাদ্যনালীতে দীর্ঘক্ষণ থাকে পারে যা খাদ্যনালীর ভেতরের মিউকাস মেমব্রেনের উপরে একটি আস্তরের মত লেগে থাকে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয় মধুর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান এসিড রিফ্লাক্স হতে বাঁধা দেয়। আপনি যদি এসিডিটির সমস্যা অনুভব করেন তাহলে সাথে সাথে ১ চামচ মধু খেয়ে নিন। এটি ৫ মিনিটের কম সময়ে আপনাকে এসিডিটি থেকে মুক্তি দেবে এবং আপনি ভালো অনুভব করবেন।

৪। ডাবের পানি : খুব দ্রুত এসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এক গ্লাস ডাবের পানি পান করুন। ডাবের পানি ক্ষারীয় বলে এটি পাকস্থলীর এসিডিক pH কে নিষ্ক্রিয় করে যার ফলে দ্রুত নিরাময় লাভ করা যায়। এছাড়াও এটি পাকস্থলীতে মিউকাস উৎপন্ন হতে সাহায্য করে। যার ফলে অতিরিক্ত এসিডের উৎপাদন বন্ধ হয়।

৫। লেবুর রস : একটি লেবুর রস বের করে নিন। পারলে এই রসটুকু পান করে ফেলুন। আর নাহলে এক কাপের একচতুর্থাংশ পরিমাণ পানিতে মিশিয়ে পান করুন। লেবুর রসে ভিটামিন সি থাকে যা বুক জ্বালাপোড়া কমতে সাহায্য করে।

৬। জিরা : ১ গ্লাস পানিতে সামান্য জিরা দিয়ে ফুটিয়ে নিন।ঠান্ডা হলে পান করুন। এছাড়াও জিরা মুখে নিয়ে চিবাতে পারেন। জিরাতে গ্যাস্ট্রোপ্রোটেক্টিভ উপাদান আছে তাই এটি পেটের যন্ত্রণা কমাতে পারে এবং এসিডিটির সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি দিতে পারে। এছাড়াও জিরা গ্যাস্ট্রিক আলসার প্রতিরোধ করতে পারে।

৭। বেকিং সোডা : সোডিয়াম বাইকার্বোনেট বা বেকিং সোডা পাকস্থলীর pH এর স্তরের ভারসাম্য রক্ষা করে দ্রুত এসিডিটির সমস্যা কমাতে পারে। এজন্য ১ গ্লাস পানিতে ১ চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে পান করুন। একদিনে ৩ চামচের বেশি বেকিং সোডা খাওয়া উচিৎ নয়।
তাৎক্ষণিকভাবে এসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এই প্রতিকার গুলোর যেকোনটি প্রয়োগ করে দেখুন।

সূত্র : সাবেরা খাতুন, প্রিয়.কম / মে ২০১৬