শিক্ষা বার্তা

পলিটেকনিকে ভর্তির নীতিমালা বাতিলের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা

শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ঘোষিত পলিটেকনিকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সব বয়সী প্রার্থীদের ভর্তির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার-ছাত্র-শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। তারা কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে ‘এক পেশে ও বিতর্কিত’ উল্লেখ করে এই ভর্তি নীতিমালা বাতিল করে ২০১৯ সালের নীতিমালা অনুযায়ী ভর্তি কার্যক্রম শুরুর দাবি জানান।

গত ১৭ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনী মিলনায়তনে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স সার্ভিস এসোসিয়েশন সমন্বয় পরিষদ, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদ, বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ কারিগরি ছাত্র পরিষদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আগস্ট মাসব্যাপী দেশের সকল পলিটেকনিক ও বিভিন্ন সার্ভিস সংস্থায় বিভিন্ন কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপরও অযৌক্তিক ভর্তি নীতিমালা প্রত্যাহার না করা হলে ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ সকাল সাড়ে ১০ টায় ৫টি সংগঠনের উদ্যোগে সারাদেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে প্রতিবাদ সমাবেশ ও পরবর্তী বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে জানিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়- অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক ভর্তি নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে সমগ্র ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা ব্যবস্থায় চরম অস্থিরতা সৃষ্টি হবে, যা কারিগরি শিক্ষায় সরকারের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনকে বাধাগ্রস্থ করবে। ১৫/২০ বছর পূর্বে এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিষয়গুলো অনুধাবন করতে পারবে না। এদের অধিকাংশই ১/২ বছরের মধ্যে ঝরে যাবে। সিটগুলো শূন্য হবে, ড্রপ আউটের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি বয়সের ব্যাপক পার্থক্যের কারণে শ্রেণীকক্ষের ভারসাম্য নষ্ট হবে, খুন-চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের কারণে সামাজিক ও প্রশাসনিক সমস্যা দেখা দেবে। রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয়ে বেশি বয়স্কদের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ালে রাষ্ট্র তথা জনগণের অর্থের অপচয় হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে একপেশে ভর্তি নীতিমালা প্রত্যাহার করে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা ব্যবস্থার মূল সংকট নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অধিকতর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানানো হয়। পলিটেকনিকে বিদ্যমান শিক্ষক, ল্যাব, ওয়ার্কসপের সংকট রেখে যে কোন বয়সের শিক্ষার্থীদের জন্য ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা কোর্স উন্মুক্তকরণের সিদ্ধান্ত মানবসম্পদ উন্নয়নে সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্থ হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। বিতর্কিত ভর্তি নীতিমালাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংকট দেশের প্রকৌশল ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা ব্যবস্থায় যে অস্থিরতা তৈরি করেছে, তা দেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে না বলে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় বয়স্কদের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে অধ্যয়নের সুযোগ দিতে চাইলে বিকল্প হিসেবে ২-৩টি ইনস্টিটিউটে সান্ধ্যকালিন কোর্স পরিচালনার বিষয়ে সরকার বিবেচনা করতে পারে।

বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স সার্ভিস এসোসিয়েশন সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক মোঃ ফজলুর রহমান খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এম জহিরুল ইসলাম। সাংবাদিদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স সার্ভিস এসোসিয়েশন সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব মোঃ সিরাজুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি মোঃ খবির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আব্দুল মোতালেব, বাংলাদেশ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি সিদ্দিক আহমেদ, বাংলাদেশ কারিগরি ছাত্র পরিষদের সভাপতি মোঃ মেহেদি হাসান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইফুল আলম মোল্লা প্রমুখ।

এডু ডেইলি ২৪