বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা : আগে বাংলাদেশ ও আশেপাশের অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের কোনো নাম দেওয়া হত না। কিন্তু ২০০০ সাল থেকে ঝড়ের নামকরণের জন্য নিয়ম বানানো হয়। তাতে ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন ও ইউনাইডেট নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়ার সদস্য দেশগুলি ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া শুরু করে। সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আছে ভারত, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড। সব দেশের কাছ থেকে ঝড়ের নাম চাওয়া হয়৷ তার থেকে দেশ প্রতি ৮টি করে নাম বাছাই করে মোট ৬৪টি ঝড়ের নামকরণ করা হয়।
মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বিবেচনা করে এই তালিকার ক্রম সাজানো হয়েছে :
১২-১৩ নভেম্বর, ১৯৭০
মৃতের সংখ্যা: সরকারি হিসাবে ৩ লাখ। বেসরকারি হিসাবে ৫ লাখ।
গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ এবং প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড় এটি। সাধারণত ১৯৭০ সালের এই ঝড় ‘ভোলা সাইক্লোন’ নামে পরিচিত। এটি ছিল সিম্পসন স্কেলে ‘ক্যাটাগরি ৩’ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়। বঙ্গোপসাগরে এই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছিল ৮ নভেম্বর। ধীরে ধীরে এটি শক্তিশালী হয় এবং উত্তর দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। ১১ নভেম্বর এটির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার বা ১১৫ মাইল। জলোচ্ছ্বাসের সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল প্রায় ১০.৬ মিটার। এই গতিতেই এটি উপকূলে আঘাত করে। এই ঝড়ের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চল ও দ্বীপগুলো প্লাবিত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় চট্টগ্রাম, বরগুনা, খেপুপাড়া, পটুয়াখালী, চর বোরহানউদ্দিন, চর তজুমদ্দিন, মাইজদী ও হরিণঘাটায়। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ছিল ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলা। তজুমদ্দিনের তখনকার জনসংখ্যা ১ লাখ ৬৭ হাজারের মধ্যে ৭৭ হাজার জন প্রাণ হারায় সে ঝড়ে।
ভোলা সাইক্লোনে মৃত মানুষের সংখ্যা নিয়ে পরস্পরবিরোধী মত পাওয়া যায়। সরকারি হিসাবমতে, এই সাইক্লোনে মারা যায় প্রায় ৩ লাখ মানুষ। আর বেসরকারি মতে এ সংখ্যা আনুমানিক ৫ লাখ। এ ছাড়া ভোলা সাইক্লোনে ৩৮ হাজার সমুদ্রনির্ভর মৎস্যজীবী এবং ৭৭ হাজার অভ্যন্তরীণ মৎস্যজীবী মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মোট ২০ হাজারের বেশি মাছ ধরার নৌকা ধ্বংস হয়। ১০ লাখের বেশি গবাদিপশুর মৃত্যু, প্রায় ৪ লাখ ঘরবাড়ি এবং ৩ হাজার ৫০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
১৫৮২ সাল
মৃতের সংখ্যা: ২ লাখ
আইন-ই-আকবরি, রিয়াস-উস-সালাতিন এবং বিভিন্ন প্রাচীন নথিপত্রের সূত্র উল্লেখ করে সার্ক প্রকাশিত (১৯৯৮) একটি গবেষণা জানাচ্ছে, ১৫৮২ সালে বাকেরগঞ্জ অঞ্চলে একটি প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সংঘটিত হয়েছিল। এই ঘূর্ণিঝড়ের বিস্তারিত তথ্য জানা যায় না।
৩১ অক্টোবর-১ নভেম্বর, ১৮৭৬
মৃতের সংখ্যা: ২ লাখ
বর্তমান বরিশাল জেলার একটি উপজেলা হিসেবে পরিচিত হলেও বাকেরগঞ্জ ছিল ব্রিটিশ আমলের একটি জেলা। এই বাকেরগঞ্জ এবং সংলগ্ন অঞ্চলে ১৮৭৬ সালে একটি প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সংঘটিত হয়েছিল। বাংলাপিডিয়া এই ঝড়ের তারিখ উল্লেখ করেছে ৩১ অক্টোবর এবং সার্ক (১৯৯৮) প্রকাশিত একটি গবেষণায় এই ঝড়ের তারিখ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ১ নভেম্বর। মানুষ ও গবাদিপশুর মৃত্যুর হার, ফসল এবং অন্যান্য সম্পদহানির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনা করে এই ঝড়কে বলা হয় ‘গ্রেট বাকেরগঞ্জ সাইক্লোন’।
২৫-৩০ এপ্রিল, ১৯৯১
মৃতের সংখ্যা: প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার
১৯৯১ সালের ২২ এপ্রিল মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে একটি গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। ২৪ এপ্রিল নিম্নচাপটি ০২বি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয় এবং উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে থাকে। অগ্রসর হওয়ার সময় এটি আরও শক্তিশালী হয়। ২৮ ও ২৯ এপ্রিল এটির তীব্রতা বৃদ্ধি পায় এবং এর গতিবেগ পৌঁছায় ঘণ্টায় ১৬০ মাইলে। ২৯ এপ্রিল রাতে এটি চট্টগ্রামের উপকূলবর্তী অঞ্চলে ঘণ্টায় ১৫৫ মাইল বেগে আঘাত করে। স্থলভাগে আক্রমণের পর এর গতিবেগ ধীরে ধীরে কমতে থাকে এবং ৩০ এপ্রিল এটি বিলুপ্ত হয়। এই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাংলাদেশের ১৯টি জেলার ১০২টি উপজেলা। তবে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুতুবদিয়া, খেপুপাড়া, ভোলা, টেকনাফ। ১৯৯১ সালের এই ঝড়ে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৮২ জন মৃত্যুবরণ করে এবং প্রায় সমপরিমাণ মানুষ আহত হয়।
জুন, ১৮২২
মৃতের সংখ্যা: ৫০ হাজার
ঘূর্ণিঝড়টি সংঘটিত হয়েছিল ১৮২২ সালের জুন মাসে। বরিশাল-বাকেরগঞ্জ অঞ্চলে হয়ে যাওয়া এ ঘূর্ণিঝড়ে ৫০ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়। এ ছাড়া প্রায় ১ লাখ গবাদিপশু মারা যায় এ ঝড়ে।
মৃতের সংখ্যা: ৩০ হাজার
বরিশাল-বাকেরগঞ্জের উপকূলীয় অঞ্চলে একটি ঘূর্ণিঝড়ে ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল বলে জানা যায়। এ ঝড়ে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা ছিল ১৩ দশমিক ৩ মিটার বা ৪৩ ফুট।
৩১ অক্টোবর, ১৮৩১
মৃতের সংখ্যা: ২২ হাজার
এ ঝড়ে ভারতের ওডিশা উপকূলও প্লাবিত হয়। জলোচ্ছ্বাসে সৃষ্টি হওয়া ঢেউয়ের সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ১৫ ফুট। বাংলা ও ভারতের উপকূলবর্তী এলাকায় এ ঝড়ে মৃত্যুবরণ করে ২২ হাজার মানুষ। এ ছাড়া এতে ৫০ হাজার গবাদিপশুর মৃত্যু রেকর্ড করা হয়।
২৮-২৯ মে, ১৯৬৩
মৃতের সংখ্যা: সরকারি হিসাবে ১১ হাজার ৫২০। বেসরকারি হিসাবে ২২ হাজার
এ ঘূর্ণিঝড় সংঘটিত হয়েছিল চট্টগ্রাম, সন্দ্বীপ এবং নোয়াখালী জেলায়। এর উৎপত্তি হয়েছিল উত্তর আন্দামান সাগরে। এটি ২৮ মে রাতে সীতাকুণ্ড দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এর সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ রেকর্ড করা হয় ঘণ্টায় ১৬৭ কিলোমিটার। ঢেউয়ের সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ২০ ফুট।
৯-১২ মে, ১৯৬৫
মৃতের সংখ্যা: ১৯ হাজার ২৭৯
এ ঝড় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়ে ১১ মে মধ্যরাতে বরিশাল ও নোয়াখালী দিয়ে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করে। এ ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬১ কিলোমিটার। জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা ছিল ১২ ফুট। এতে বরিশাল, নোয়াখালী, খুলনা, যশোর, ফরিদপুর, ঢাকা এবং চট্টগ্রাম অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
১৪-৩০ নভেম্বর, ১৯৮৮
মৃতের সংখ্যা: ১১ হাজার ৬৮৩ জন
এ ঝড় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়ে খুলনার কাছে রায়মঙ্গল নদের কাছ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এটি যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, খুলনা, বরিশালের বিভিন্ন চর এবং উপকূলবর্তী দ্বীপগুলোর ওপর দিয়ে বয়ে যায়। বাতাসের বেগ ছিল সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১৬২ কিলোমিটার। জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা ছিল সাড়ে ১৪ ফুট।
৫-৯ মে, ১৯৬১
মৃতের সংখ্যা: ১১ হাজার ৪৬৮
এ ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল মূলত ঢাকা, কুমিল্লা ও সংলগ্ন এলাকায়। এ ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬১ কিলোমিটার। এটি মেঘনার পশ্চিম মোহনা অতিক্রম করে সকাল নয়টায়। এ ঝড়ে ঢাকা শহরের বেশির ভাগ কাঁচা ঘর ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
২২-২৫ মে, ১৯৮৫
মৃতের সংখ্যা: ১১ হাজার ৬৯
এই ঘূর্ণিঝড় সংঘটিত হয় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী এবং উপকূলবর্তী দ্বীপ সন্দ্বীপ, হাতিয়া এবং উড়িরচরে। বাতাসের গতিবেগ ছিল চট্টগ্রামে ঘণ্টায় ১৫৪ কিলোমিটার, সন্দ্বীপে ১৩৯ কিলোমিটার, কক্সবাজারে ১০৪ কিলোমিটার। সেই সঙ্গে ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস সংঘটিত হয়। এতে ১১ হাজার ৬৯ জন নিহত হয় এবং ৯৪ হাজার ৩৭৯টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও মোট ১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩টি পশুসম্পদ বিনষ্ট হয়। মোট ৭৪ কিলোমিটার সড়ক ও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
১৫ নভেম্বর, ২০০৭
মৃতের সংখ্যা: ১০ হাজার (রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি)
সরকারি হিসাব: ৬ হাজার
বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সিডর। এটি ০৬বি টাইপ ঘূর্ণিঝড়। এ ঝড়ে বাতাসের বেগ ছিল ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার। এ কারণে সাফির-সিম্পসন স্কেল অনুযায়ী এটি ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় হিসেবে চিহ্নিত। খুলনা-বরিশাল উপকূলীয় এলাকা লন্ডভন্ড করে দেওয়া ঘূর্ণিঝড়টির সময় জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা ছিল ১৫ থেকে ২০ ফুট।
৩০-৩১ অক্টোবর, ১৯৬০
মৃতের সংখ্যা: ৫,১৪৯
চট্টগ্রামে এ ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৯৩ কিলোমিটার। তবে চট্টগ্রামের বহির্নোঙরে থাকা এস এস বালি নামে সুইডেনের একটি জাহাজ প্রতি ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ২০৯ কিলোমিটার রেকর্ড করেছিল বলে জানা যায়। ৩১ তারিখ এই ঝড় বরিশাল অতিক্রম করে ১৪৮ কিলোমিটার গতিবেগে। এ ঝড়ের কারণে সৃষ্ট ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল ২২ ফুট।
২২-২৬ মে, ১৯৪১
মৃতের সংখ্যা: ৫,০০০
ভোলা, বরিশাল ও নোয়াখালীর ওপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল এ ঘূর্ণিঝড়। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ভোলা অঞ্চল। এ ঝড়ে সৃষ্টি হওয়া জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা ছিল ১০-১২ ফুট।
সূত্র: ১. দ্য ইমপ্যাক্ট অব ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস অন দ্য কোস্টাল রিজিয়ন অব সার্ক কান্ট্রিজ অ্যান্ড দেয়ার ইনফ্লুয়েন্স ইন দ্য রিজিয়ন, সার্ক মেটেরোলজিক্যাল রিসার্চ সেন্টার (এসএমআরসি), ১৯৯৮, আগারগাঁও, ঢাকা।
বাংলাদেশ, তার ব্যতিক্রমী ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বারংবার ক্রান্তীয় বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপে পড়ছে। বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকের ফানেল আকৃতির ফলস্রুতিতে যখনই ঘূর্ণিঝড় রূপ নেয় জলোচ্ছ্বাস ও ভুমিধসের কারণ হয়ে দাড়ায় যার ভুক্তভুগি হয় তীরভূমিতে অবস্থানকারী হাজার হাজার মানুষ। বাংলাদেশের উপর আঘাতহানা কিছু ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়, বিশ্ব-ইতিহাসে বিধ্বংসী প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের (উচ্চ হতাহতের দিক থেকে) পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত। এরমধ্যে শুধু ১৯৭০ ভোলা ঘূর্ণিঝড় এককভাবে ৩-৫ লক্ষ জীবনহানির দাবীদার।
সিরিয়াল নং | তারিখ/বছর | সংকটের প্রকার | প্রাসঙ্গিক তথ্য | তথ্যসূত্র/ সূত্র তালিকা |
---|---|---|---|---|
১ | ১৫৮২ খৃষ্টাব্দ (দিন ও মাস অজানা) | তীব্র ঘূর্ণিঝড় প্রবল হারিকেন বাতাসসহ | উপকূল: ঘূর্ণিঝড়টি বাকেরগঞ্জ এর উপর দিয়ে অতিক্রম করে। (সরকার বালা).ক্ষয়ক্ষতি: মানুষ মারাযায় – ২ লক্ষঝড়ের আঘাতের ক্ষতির মাত্রা লিপিবদ্ধ হয়।বাংলাপিডিয়া অনুসারে, পাঁচ ঘণ্টা ব্যাপি হারিকেন ও বজ্রপাত বাকেরগঞ্জ (বর্তমান বরিশাল জেলা) এবং পটুয়াখালী এর উপকূলবর্তী বাড়িঘর এবং নৌকা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়[৩] | আইন-ই-আকবরিরিয়াজ-উজ-সালাতিনবাংলার জেলা গেজেটিয়ার, ২৪ পরগনা-এলএসএস অ’ম্যালে, আইসিএস, ১৯১৪, প্রকাশনা- দ্যা বেঙ্গল এসওসি শাখা। |
২ | ১৫৮৫ (দিন ও মাস অজানা) | অজানা | ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় মেঘনা নদীর মোহনা মুখের বাকেরগঞ্জের (বর্তমান বরিশাল) পূর্বদিক আঘাত হানে, ফসলের ব্যপক ক্ষতি করে।ক্ষয়ক্ষতি: অজানা | বাংলাপিডিয়া[৩] |
৩ | ১৬৯৯ (দিন ও মাস অজানা) | তীব্র ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: ঘূর্ণিঝড় সুন্দরবন উপকূলের উপর দিয়ে বয়ে যায়।ক্ষয়ক্ষতি: মানুষ নিহত হয়= ১ জন অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | দৈনিক ইত্তেফাক, ৫ মে ১৯৯১. |
৪ | ১৭৬০ (দিন ও মাস অজানা) | তীব্র ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: ঘূর্ণিঝড় সুন্দরবন উপকূলের উপর দিয়ে বয়ে যায়।ক্ষয়ক্ষতি: জানাযায়নি. সম্পূর্ণ এলাকাই প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | দৈনিক ইত্তেফাক, ৫ মে ১৯৯১. |
৫ | ১৭৬৫ (দিন ও মাস অজানা) | তীব্র ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: ঘূর্ণিঝড় চট্টগ্রাম উপকূলের উপর দিয়ে বয়ে যায়।ক্ষয়ক্ষতি: জানাযায়নি. সম্পূর্ণ এলাকাই প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | দৈনিক ইত্তেফাক, ৫ মে ১৯৯১. |
৬ | ১৭৬৭ (দিন ও মাস অজানা) | তীব্র ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: ঘূর্ণিঝড় বাকেরগঞ্জ (বর্তমান বরিশাল) উপকূলের উপর দিয়ে বয়ে যায়।ঢেউ এর উচ্চতা: ১৩.০৩ মিটার (৪৩ ফিট)ক্ষয়ক্ষতি: মানুষ মারা যায়= ৩০,০০০। অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | দৈনিক ইত্তেফাক, ৫ মে ১৯৯১. |
৭ | মে-জুন, ১৭৯৭ (সঠিক তারিখ জানা যায়নি) | তীব্র ঘূর্ণিঝড় প্রবল হারিকেন বাতাসসহ | উপকূল: ঘূর্ণিঝড় চট্টগ্রাম উপকূলের উপর দিয়ে বয়ে যায়।ক্ষয়ক্ষতি: আক্রান্ত এলাকার প্রতিটি বাড়ি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। চট্টগ্রাম বন্দরে দুইটা জাহাজ ডুবে যায়। অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরবাংলাপিডিয়া[৩] |
৮ | জুন ১৮২২ (সঠিক তারিখ জানা যায়নি) | তীব্র ঘূর্ণিঝড় প্রবল হারিকেন বাতাসসহ | উপকূল: ঘূর্ণিঝড় বাকেরগঞ্জ (বর্তমান বরিশাল) উপকূলের উপর দিয়ে বয়ে যায়, সারকার বালা।ক্ষয়ক্ষতি: মানুষ মারা যায়:= ৫০,০০০গবাদি পশু মারাযায় = ১০০,০০০।ঝড়ের ধাক্কা পূর্বের সব পরিসংখ্যানের মাত্রাকে মুছে দিয়েছিল। অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | এশিয়াটিক জার্নাল এসওসি অব বেঙ্গল, ভলিউম. ৪৬, পার্ট II, পৃষ্টা ৩৩২- এইচ.এফ. ব্লান্ডফোর্ড।বুইস্টস ১ম ক্যাটালগ ট্রান্স. বম্বে জিও. সো. ভলিউম. XII. পরিশিষ্ট এ।সেলরস হর্ন বুক ফর দ্যা ল অব স্ট্রমস. পরিশিষ্ট এ. – হেনরি পিডিংটন. |
৯ | ২ জুন ১৮২৩ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: ঘূর্ণিঝড় চট্টগ্রাম উপকূলের উপর দিয়ে বয়ে যায়।অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | আন্তর্জাতিকভাবে উন্নয়নের স্বার্থে আমেরিকান পররাষ্ট্র দুর্যোগ সহায়তা সংস্থার জন্যে তৈরি ১৯৭৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা, বঙ্গোপসাগরের প্রলয়ঙ্করী ঝড়সমূহ, ওয়াশিংটন ডিসি ২০৫২৩- এফ হ্যন্ডারসন। |
১০ | ৮ জুন ১৮২৪ | প্রবল ঝড় (তীব্র ঘূর্ণিঝড়) | উপকূল: ঘূর্ণিঝড় চট্টগ্রাম উপকূলের উপর দিয়ে বয়ে যায়।অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | আন্তর্জাতিকভাবে উন্নয়নের স্বার্থে আমেরিকান পররাষ্ট্র দুর্যোগ সহায়তা সংস্থার জন্যে তৈরি ১৯৭৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা, বঙ্গোপসাগরের প্রলয়ঙ্করী ঝড়সমূহ, ওয়াশিংটন ডিসি ২০৫২৩- এফ হ্যন্ডারসন। |
১১ | ৩১ অক্টোবর ১৮৩১ | তীব্র ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: ঘূর্ণিঝড় বরিশাল উপকূলের উপর দিয়ে বয়ে যায় (বালেশ্বর-উড়িষ্যা উপকূল ঘেঁসে)ঢেউ এর উচ্চতা: ২.১২-৪.৫৫ মিটার (৭-১৫ ফিট)ক্ষয়ক্ষতি: মানুষ মারাযায় = ২২,০০০ (বাংলাদেশ ও ভারত উপকূল বরাবর) গবাদি পশু মারাযায় ৫০,০০০ থেকে বেশি।অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরবেঙ্গল ডিসট্রিক্ট গেঁজেটার (বালেশ্বর)- এল.এস.এস. ও’ম্যালি, আইসিএস |
১২ | ৩–৫ জুন ১৮৩৯ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে বয়ে যায় (বাংলাদেশের কূল ঘেঁসে)অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | আন্তর্জাতিকভাবে উন্নয়নের স্বার্থে আমেরিকান পররাষ্ট্র দুর্যোগ সহায়তা সংস্থার জন্যে তৈরি ১৯৭৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা, বঙ্গোপসাগরের প্রলয়ঙ্করী ঝড়সমূহ, ওয়াশিংটন ডিসি ২০৫২৩- এফ হ্যন্ডারসন। |
১৩ | ১৯-২১ সেপ্টেম্বর ১৮৩৯ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: ঝড়টি সুন্দরবন উপকূলের উত্তর পাস দিয়ে বয়ে যায়, কোলকাতা ও বরিশাল এর মাঝদিয়ে।অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | আন্তর্জাতিকভাবে উন্নয়নের স্বার্থে আমেরিকান পররাষ্ট্র দুর্যোগ সহায়তা সংস্থার জন্যে তৈরি ১৯৭৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা, বঙ্গোপসাগরের প্রলয়ঙ্করী ঝড়সমূহ, ওয়াশিংটন ডিসি ২০৫২৩- এফ হ্যন্ডারসন। |
১৪ | ১১ মে ১৮৪৪ | ঘূর্ণিঝড় (ঝড়ো বাতাস) | উপকূল: নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম উপকূল দিয়ে অতিক্রম করে।অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | আন্তর্জাতিকভাবে উন্নয়নের স্বার্থে আমেরিকান পররাষ্ট্র দুর্যোগ সহায়তা সংস্থার জন্যে তৈরি ১৯৭৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা, বঙ্গোপসাগরের প্রলয়ঙ্করী ঝড়সমূহ, ওয়াশিংটন ডিসি ২০৫২৩- এফ হ্যন্ডারসন। |
১৫ | ১২–১৩ মে ১৮৪৯ | ঘূর্ণিঝড় (ঝড়ো বাতাস) | উপকূল: ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম উপকূলের উপর দিয়ে অতিক্রম করে।অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | আন্তর্জাতিকভাবে উন্নয়নের স্বার্থে আমেরিকান পররাষ্ট্র দুর্যোগ সহায়তা সংস্থার জন্যে তৈরি ১৯৭৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা, বঙ্গোপসাগরের প্রলয়ঙ্করী ঝড়সমূহ, ওয়াশিংটন ডিসি ২০৫২৩- এফ হ্যন্ডারসন। |
১৬ | ২৩–২৮এপ্রিল ১৮৫০ | ঘূর্ণিঝড় | উৎপত্তি: উৎপত্তিস্থল পশ্চিম নিকবর।উপকূল: এটি উত্তরদিক থেকে বাংলা হয়ে পশ্চিম নিকবরে সরে যায়।অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | আন্তর্জাতিকভাবে উন্নয়নের স্বার্থে আমেরিকান পররাষ্ট্র দুর্যোগ সহায়তা সংস্থার জন্যে তৈরি ১৯৭৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা, বঙ্গোপসাগরের প্রলয়ঙ্করী ঝড়সমূহ, ওয়াশিংটন ডিসি ২০৫২৩- এফ হ্যন্ডারসন। |
১৭ | ১২–১৫ মে ১৮৫২ | ঘূর্ণিঝড় | উৎপত্তি: উৎপত্তিস্থল ১৫°উত্তর।উপকূল: এটি উত্তর দিকে সরে এসে সুন্দরবনের উপর দিয়ে অতিক্রম করে, কেন্দ্র প্রবাহিত হয় ৩৯ মাইল (৬৩ কিমি) পূর্ব কোলকাতাঅপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | আন্তর্জাতিকভাবে উন্নয়নের স্বার্থে আমেরিকান পররাষ্ট্র দুর্যোগ সহায়তা সংস্থার জন্যে তৈরি ১৯৭৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা, বঙ্গোপসাগরের প্রলয়ঙ্করী ঝড়সমূহ, ওয়াশিংটন ডিসি ২০৫২৩- এফ হ্যন্ডারসন। |
১৮ | ১৩–১৭ মে ১৮৬৯ | ঘূর্ণিঝড় | ঝড়টি কেপ নিগ্রেস থেকে উত্তর-পশ্চিমদিকে সরে বাংলার দিকে এগিয়ে যায় এবং বাংলার উপকূলের উপর দিয়ে বয়ে যায়।অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | আন্তর্জাতিকভাবে উন্নয়নের স্বার্থে আমেরিকান পররাষ্ট্র দুর্যোগ সহায়তা সংস্থার জন্যে তৈরি ১৯৭৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা, বঙ্গোপসাগরের প্রলয়ঙ্করী ঝড়সমূহ, ওয়াশিংটন ডিসি ২০৫২৩- এফ হ্যন্ডারসন। |
১৯ | ৫–১০ জুন ১৮৬৯ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: উত্তর উপসাগর থেকে উৎপত্তি হয়ে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলার উপর দিয়ে বয়ে যায়।অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | আন্তর্জাতিকভাবে উন্নয়নের স্বার্থে আমেরিকান পররাষ্ট্র দুর্যোগ সহায়তা সংস্থার জন্যে তৈরি ১৯৭৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা, বঙ্গোপসাগরের প্রলয়ঙ্করী ঝড়সমূহ, ওয়াশিংটন ডিসি ২০৫২৩- এফ হ্যন্ডারসন। |
২০ | অক্টোবর ১৮৭২ (সঠিক তারিখ অজানা) | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে।অপর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। | আন্তর্জাতিকভাবে উন্নয়নের স্বার্থে আমেরিকান পররাষ্ট্র দুর্যোগ সহায়তা সংস্থার জন্যে তৈরি ১৯৭৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা, বঙ্গোপসাগরের প্রলয়ঙ্করী ঝড়সমূহ, ওয়াশিংটন ডিসি ২০৫২৩- এফ হ্যন্ডারসন।বাংলাপিডিয়া[৩] |
২১ | ২৯ অক্টোবর – ১ নভেম্বের ১৮৭৬(দ্যা গ্রেট বাকেরগঞ্জ ১৮৭৬) | তীব্র ঘূর্ণিঝড় প্রবল হারিকেন বাতাসসহ। | উপকূল: ঘূর্ণিঝড়টি মেঘনা নদীর মোহনার নিকটে বাকেরগঞ্জ উপকূলের উপর দিয়ে অতিক্রম করে।বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ : ২২০ কিমি/ঘণ্টা (১১৯ নটস)ঢেউয়ের উচ্চতা: ৩-১৩.৬ মিটার (১০–৪৫ ফিট)বাংলাপিডিয়া অনুসারে, ঘূর্ণিঝড়টির সাথে দমকা হাওয়া ও জলোচ্ছ্বাস ১২.২ মিটার (৪০ ফিট) চট্টগ্রাম, বরিশাল ও নোয়াখালির নিকটবর্তী মেঘনা নদীর মোহনায় আঘাত হানে। [৩] ক্ষয়ক্ষতি: প্রায় ২ লক্ষ মারা যায়। ঘূর্ণিঝড়টির ফলশ্রুতিতে মহামারী, দুর্ভিক্ষ ও প্রচুর সম্পদের ক্ষতি হয়। | আন্তর্জাতিকভাবে উন্নয়নের স্বার্থে আমেরিকান পররাষ্ট্র দুর্যোগ সহায়তা সংস্থার জন্যে তৈরি ১৯৭৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা, বঙ্গোপসাগরের প্রলয়ঙ্করী ঝড়সমূহ, ওয়াশিংটন ডিসি ২০৫২৩- এফ হ্যন্ডারসন।বিএমডিহারিকেনস, স্ট্রমস এন্ড টর্নেডোস- ডি.ভি. নালিভকিন, ১৯৮২, পৃষ্টা. ৬৮।জার্নাল অব এশিয়াটিক সোসাইটি ভলিউম. XL VI- এইচ.এফ. ব্লান্ডফোর্ড পৃষ্টা. ৩৩৮।ট্রাকস অব স্ট্রমস এন্ড ডিপ্রেশনস ইন দ্যা বে অব বেঙ্গল এন্ড দ্যা এরাবিয়ান শী, ১৮৭৭–১৯৭০, আইএমডি, ১৯৭৯।বাংলাপিডিয়া[৩] |
২২ | ২৪ অক্টোবর ১৮৯৭ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: চট্টগ্রামের নিকটবর্তী দ্বীপ কুতুবদিয়া।ক্ষয়ক্ষতি: ১৪,০০০ জন । পরবর্তীতে কলেরা মহামারী আকার ধারণ করে এবং ১৮,০০০ জন মারা যায়। | — |
২৩ | মে ১৮৯৮ (সঠিক তারিখ অজানা) | জলোচ্ছ্বাসের সাথে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় | উপকূল:টেকনাফক্ষয়ক্ষতি: অজানা | — |
২৪ | নভেম্বর ১৯০৪ (সঠিক তারিখ অজানা) | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: সোনাদিয়াক্ষয়ক্ষতি: ১৪৩ জন মারা যায় এবং প্রচুর মাছধরা নৌকা বিধ্বস্ত হয়। | — |
২৫ | ১৬ অক্টোবর ১৯০৯ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল:খুলনাক্ষয়ক্ষতি: ৬৯৮ জন মানুষ ও ৭০,৬৫৪ গবাদি পশু মারা যায়। | — |
২৬ | অক্টোবর ১৯৭৩ (সঠিক তারিখ অজানা) | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: মুক্তাগাছা উপজেলা (ময়মনসিংহ)ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় ভুপৃষ্টে আঘাত হানে গ্রাম তছনছ করে দেয়। ক্ষয়ক্ষতি: ৫০০ জন মানুষ মারা যায়। | — |
২৭ | ২৪ সেপ্টেম্বর ১৯১৭ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: খুলনাক্ষয়ক্ষতি: মানুষ ৪৩২ জন এবং গবাদি পশু ২৮,০২৯। | — |
২৮ | মে ১৯৪১ (সঠিক তারিখ অজানা) | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: মেঘনা নদীর পূর্ব মোহনাক্ষয়ক্ষতি: অজানা। | — |
২৯ | অক্টোবর, ১৯৪২ (সঠিক তারিখ অজানা) | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল:সুন্দরবনক্ষয়ক্ষতি: অজানা। | — |
৩০ | ১৭–১৯ মে ১৯৪৮ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী এর মধ্যের ব-দ্বীপ।ক্ষয়ক্ষতি: আনুমানিক মানুষ ১,২০০ জন এবং গবাদিপশু ২০,০০০। | — |
৩১ | ১৬–১৯ মে ১৯৫৮ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: বরিশাল ও নোয়াখালীর পূর্বপার্শ্বের পূর্ব-পশ্চিম মেঘনা নদীর মোহনা।ক্ষয়ক্ষতি: মানুষ ৮৭০ জন এবং ১৪,৫০০ গবাদি পশু। একইসাথে ক্ষেতের ফসল বিনষ্ট হয়। | — |
৩২ | ২১–২৪ অক্টোবর ১৯৫৮ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: চট্টগ্রামক্ষয়ক্ষতি: আনুমানিক ১ লক্ষ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। | — |
৩৩ | ৯–১০ অক্টোবর ১৯৬০ | তীব্র ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: মেঘনা নদীর পূর্ব মোহনা, নোয়াখালী, বাকেরগঞ্জ, ফরিদপুর এবং পটুয়াখালী।বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ: ২০১ কিমি/ঘণ্টা সর্বোচ্চ জলোচ্ছ্বাস: ৩.০৫ মিটার ক্ষয়ক্ষতি: মানুষ ৩,০০০ জন। ৬২,৭২৫টি বাড়ি ভেঙ্গে পড়ে, ৯৪,০০০ একর(৩৮০ km২) জমির ফসল বিনষ্ট হয়। | — |
৩৪ | ৩০–৩১ অক্টোবর ১৯৬০ | তীব্র ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বাকেরগঞ্জ, ফরিদপুর, পটুয়াখালী এবং মেঘনা মোহনার পূর্ব পাড়।বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ: ২১০ কিমি/ঘণ্টা জলোচ্ছ্বাস: ৪.৫-৬.১ মিটার ক্ষয়ক্ষতি: প্রায় ১০,০০০ মানুষ, ২৭,৭৯৩ গবাদি পশু, ৫,৬৮,১৬১ বাড়ি (এর ৭০% বাড়ি শুধু হাতিয়ায়) ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। দুইটা বড় সমুদ্রগামী জাহাজ তীরের উপরে উঠে আসে, এবং কর্ণফুলী নদীতে ৫-৭ নৌযান নিমজ্জিত হয়। | — |
৩৫ | ৯ মে ১৯৬১ | তীব্র ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: বাগেরহাট এবং খুলনাসর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ: ১৬১ কিমি/ঘণ্টা জোয়ারের উচ্চতা: ২.৪৪-৩.০৫ মিটার ক্ষয়ক্ষতি: মারা যায় ১১,৪৬৮ জন অধিবাসী (অধিকাংশই চর অ্যালেক্সান্ডার), ২৫,০০০ গবাদিপশু। নোয়াখালী হতে হরিনারায়ানপুর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ ভেঙ্গে পড়ে। | — |
৩৬ | ২৬–৩০ অক্টোবর ১৯৬২ | তীব্র ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: ফেনিসর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ: ১৬১ কিমি/ঘণ্টা জোয়ারের উচ্চতা: ২.৫০-৩.০০ মিটার ক্ষয়ক্ষতি: প্রায় ১,০০০ জন মানুষ এবং প্রচুর গৃহপালিত প্রাণী। | — |
৩৭ | ২৮–২৯ মে ১৯৬৩ | তীব্র ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার এবং সন্দ্বীপ, কুতুবদিয়া, হাতিয়া এবং মহেশখালীর উপকূলীয় অঞ্চল সমূহ। সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ: ২০৩ কিমি/ঘণ্টা (১৬৪ কিমি/ঘণ্টা at কক্সবাজার) জোয়ারের উচ্চতা: ৪.৩-৫.২ মিটার ক্ষয়ক্ষতি: ১১,৫২০ জন অধিবাসী ও গবাদি পশু ৩২,৬১৭ মারা যায় এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় ৩৭৬,৩৩২ টি বাড়ি, ৪,৭৮৭টি নৌকা ক্ষেতে ফসল। | — |
৩৮ | ১১–১২ মে ১৯৬৫ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: বরিশাল এবং বাকেরগঞ্জ।সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ: ১৬২ কিমি/ঘণ্টা জোয়ারের উচ্চতা: ৩.৭ মিটার ক্ষয়ক্ষতি: ১,২৭৯ জন অধিবাসী (বরিশালেই, ১৬,৪৫৬ জনের মধ্যে). | — |
৩৯ | ১৪–১৫ ডিসেম্বর ১৯৬৫ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: কক্সবাজার ও পটুয়াখালীর নিকটবর্তী।সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ: ২১০ কিমি/ঘণ্টা কক্সবাজারে। জোয়ারের উচ্চতা: ৪.৭-৬.১ মিটার ক্ষয়ক্ষতি: ৮৭৩ জন অধিবাসী মারা যায় ও ৪০,০০০ লবণ খামার নষ্ট হয়। | — |
৪০ | ১ অক্টোবর ১৯৬৬ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: সন্দ্বীপ, বাকেগঞ্জ, খুলনা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী এবং কুমিল্লা।জোয়ারের উচ্চতা: ৪.৭-৯.১ মিটার সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ: ১৪৬ কিমি/ঘণ্টা। ক্ষয়ক্ষতি: মানুষ ১.৫ মিলিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও ৮৫০ মারা যায় এবং গবাদিপশু ৬৫,০০০ মারা যায়। | — |
৪১ | ৭-১৩ নভেম্বর: ১৯৭০ ভোলা ঘূর্ণিঝড় | তীব্র ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: সমগ্র বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান)চটগ্রাম, বরগুনা, খেপুপাড়া, পটুয়াখালী, চর বোরহানুদ্দিনের উত্তর পাশ, চর তাজুমুদ্দিন এবং মাইজদি ও হরিণঘাটা এর দক্ষিণ পাশ সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারী হিসাব অনুসারে মৃত্যুর সংখ্যা ৫ লক্ষ কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি ধারণা করা হয়। ক্ষতির মধ্যে আনুমানিক ২০,০০০ মাছ ধরা নৌকা, শস্য ও সম্পদ। গবাদিপশু মৃত্যু প্রায় ১০ লক্ষে, বাড়িঘর ৪ লক্ষ এবং ৩,৫০০ শিক্ষাকেন্দ্র বিধ্বস্ত হয়। সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ: ২২২ কিমি/ঘণ্টা। জোয়ারের উচ্চতা: ১০.৬ মিটার | — |
৪২ | ৫–৬ নভেম্বর ১৯৭১ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলক্ষয়ক্ষতি: অজানা | — |
৪৩ | ২৮–৩০ নভেম্বের ১৯৭১ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: সুন্দরবন এর নিকটবর্তীসর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ: ৯৭–১১৩ কিমি/ঘণ্টা। জোয়ারের উচ্চতা: ১ মিটার প্রভাব :খুলনা শহরের নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়। | — |
৪৪ | ৬–৯ ডিসেম্বর ১৯৭৩ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: সুন্দরবন এর নিকটবর্তীপটুয়াখালী ও তার নিকটবর্তী এলাকা সমূহ প্রবল জলোচ্ছ্বাসে নিমজ্জিত হয়। | — |
৪৫ | ১৩–১৫ অগাস্ট ১৯৭৪ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল:খুলনাসর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ: ৮০.৫ কিমি/ঘণ্টা ক্ষয়ক্ষতি: ৬০০ জন অধিবাসী। | — |
৪৬ | ২৪–২৮ নভেম্বের ১৯৭৪ | ঘূর্ণিঝড় | উপকূল: কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের নিকটবর্তী।সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ: ১৬১ কিমি/ঘণ্টা জোয়ারের উচ্চতা: ২.৮-৫.২ মিটার ক্ষয়ক্ষতি: ২০০ জন, ১০০০ গবাদি পশু ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। | — |
এটা বাংলাদেশ এর অথবা বলাযায় সাধারণভাবে ভারতের বিভক্তির আগের ঐতিহাসিক ভাবে চিহ্নিত বাংলার ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের একটি আংশিক তালিকা। কিছু সন ও তারিখ সামান্য ত্রুটি থাকতে পারে, এখানে অধিকাংশ তথ্য বাংলাপিডিয়া থেকে নেওয়া। [৩]
সূত্র : প্রথম আলো ও উইকিপিডিয়া