জার্মানি স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৩ : আবেদন, খরচ, ডকুমেন্টস সংক্রান্ত জিজ্ঞাসার উত্তর [Germany student visa]

জার্মানি স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৩ আবেদন, খরচ, ডকুমেন্টস সংক্রান্ত জিজ্ঞাসার উত্তর : Germany-তে উচ্চশিক্ষা বা স্টুডেন্ট ভিসায় আসতে চান, এমন প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি জানতে চান এমন বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর এখানে দেওয়া হলো-

জার্মান স্টুডেন্ট ভিসা রিজেক্ট হওয়ার কারণ

  • আপনার প্রোফাইল যদি আপনার প্রস্তাবিত পড়াশুনার শহর বা রাজ্যের প্রয়োজনের সাথে না যায়
  • দুর্বল আর্থিক সামর্থ্য
  • খারাপ একাডেমিক রেজাল্ট
  • প্রস্তুতির অভাব
  • অপর্যাপ্ত ভাষা দক্ষতা

জার্মানি স্টুডেন্ট ভিসা : পরামর্শ ও ফ্যাক্ট

  • প্রয়োজন থাকার কারনেই সাধারণত ওই শহর বা রাজ্য উক্ত বিষয়ে পড়াশুনার সরকার ফান্ড খরচ করেন!
  • সব শহরে যে এটাকে প্রাধান্য দেয় তেমনটি নিশ্চিত করে বলা বেশ কঠিন কারন কিছু কিছু জায়গা তারা বিদেশী শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য দেয় পড়াশুনা শেষে নিজে দেশে ফিরে গিয়ে জার্মান ভাষা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সেতুবন্ধন তোলার তোলার জন্য।
  • কিছু কিছু জায়গায় বিদেশী শিক্ষার্থীদের দেখা হয় বিভিন্ন ভাষা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি প্রতিনিধি হিসাবে এবং এর মাধ্যমে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের উপযোগী করে গড়ে তোলার অংশ হিসাবে।
  • কিছু কিছু জায়গায় দেশী-বিদেশী শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য দেওয়া হয় স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা বেবস্থার আন্তর্জাতিক মানের করার অংশ হিসাবে।
  • কিছু কিছু জায়গায় দেশী-বিদেশী শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করা হয় সেখানকার অর্থনীতিক, ভাষা, শিক্ষা ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধি অংশ হিসাবে।

জার্মানি স্টুডেন্ট ভিসা ৩ ক্যাটাগরির

  • . Students visa (Fix term Language course): এই ভিসায় সাধারন ৩/৬ মাসের হয়ে থাকে। কোনভাবেই আপনি এই ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর জার্মানিতে থাকতে পারবেন না। কারন আপনি ভিসার মেয়াদ বাড়াতে পারবেন না । ফিক্স করে দেয়া । এই ভিসাতে কোন কাজের অনুমতি নেই।
  • . Students Applicant Visa: যারা প্রথমে ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স করে পড়ে ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হবেন বলে জার্মানিতে আসতে চান তাদের জন্য । উদ্দেশ্য জার্মান ভাষা শিখে জার্মান ইউনিভার্সিটি তে স্টাডি করবেন । জার্মান ভাষায় B2 সম্পূর্ণ করে (European Framwork Level 2), একটা পরিক্ষা দিয়ে উপযুক্ত নম্বর পেলেই মেইন কোর্স শুরু করতে পারবেন। এই ভিসাতেও আপনি কোন কাজের অনুমতি পাবেন না।
  • ৩. Student Visa (Direct admission to University): এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যারা সরাসরি ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হয়ে আসে । আপনি এই ভিসায় আসলে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন । কাজের ক্ষেত্রে ও কোন সমস্যা হবে না। তাই সবাইকে অনুরোধ করবো যথাসাধ্য চেষ্টা করেন যেন সরাসরি ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হয়ে আসতে পারেন ।

জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন ও দরকারি তথ্য

জার্মানির শিক্ষার মান খুবই উন্নত। বিশেষ করে দেশটি প্রযুক্তির জন্য সারা বিশ্বে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। তাইতো জার্মানিকে বলা হয় “ Land of Ideas or Land of Engineers ”। জার্মানিতে অনেক বিশ্ববিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।

  • এখানে প্রায় ৯০% বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা করতে কোন প্রকার টিউশন ফি দিতে হয় না।
  • তবে সেমিস্টার ফি বাবদ প্রতি সেমিস্টারে ১৫০ — ৪০০ ইউরো এর মত লাগে।
  • বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার মাধ্যম জার্মান, তবে অনেক প্রোগ্রাম ইংরেজি মাধ্যমেও পড়ানো হয়।
  • বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত বছরে ২ বার আবেদন করা যায়।
  • একটি সামার যার সময়সীমা ( ১ ডিসেম্বর — ১৫ জানুয়ারী ) এবং অন্যটি উইন্টার, সময়সীমা ( মে — ১৫ জুলাই )।
  • ভাষার যোগ্যতা হিসেবে IELTS 6 or German Language B1 অথবা দুটাই লাগে। তবে IELTS 6.5 (Each module 6 minimum) থাকলে আপনি ভিসার ক্ষেত্রে SAFE ZONE এ থাকবেন।
  • কোন কোন ইউনিভার্সিটি/সাবজেক্ট এর জন্য GRE ও লাগে।
  • আর এক বছরের থাকা — খাওয়া খরচ বাবদ আপনাকে ৮৬৪০ ইউরো ব্লক একাউন্টে রাখতে হবে (ডয়েচ ব্যাংকই আমার জানামতে Best), আর ব্লক একাউন্টটা করতে হবে জার্মানিতে।
  • ব্লক একাউন্ট মানে হচ্ছে আপনি টাকা টা চাইলেই একাউন্ট থেকে উঠাতে পারবেন না। তবে ভিসা পেলে আপনি জার্মানিতে গিয়ে প্রতি মাসে ৭২০ ইউরো করে ব্লক একাউন্ট থেকে ১ বছরে পুরো টাকা (৮৬৪০ ইউরো) তুলতে বা দেশে পাঠাতে পারবেন। (বিঃদ্রঃ- এইটা স্টেট/সিটি অনুসারে পরিবর্তিত হতে পারে) ।
  • জার্মানিতে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা HSC পাশের পর সরাসরি ব্যাচেলর প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারবেনা।
  • তবে HSC পাশের পর বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২ বছর (ডিপ্লোমা পাশকৃতদের ক্ষেত্রে ১ বছর) পড়ার পর সরাসরি ব্যাচেলরে ভর্তি হতে পারবে । আরও নির্দিষ্ট করে বললে আপনাকে বাংলাদেশে কোন ইউনিভার্সিটিতে আপনার ব্যাচেলর কোর্সের ৫০% ক্রেডিট শেষ করতে হবে। (যেমন : ব্যাচেলরের ফুল কোর্সের ক্রেডিট যদি ১৫০ হয় তাহলে ৭৫ ক্রেডিট সম্পন্ন করতে হবে।)
  • আর কেউ যদি HSC এর পরই জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে চায় তাহলে তাকে জার্মানিতে গিয়ে প্রথমে স্টুডেন্ট কলিগ (Studienkolleg) করতে হবে। তারপর তাকে একটা Entrance Exam দিতে হবে, উপযুক্ত নম্বর পেলেই কেবল ব্যাচেলর শুরু করতে পারবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য আপনার সকল একাডেমিক ডকুমেন্টস শিক্ষা বোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রনালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এবং জার্মান এমব্যাসি — ঢাকা থেকে সত্তয়ন করতে হবে। অথবা নোটারি করলেও হয়।

পার্ট টাইম জব ও স্থায়ী বসবাস (PR) তথ্য

থাকা-খাওয়ার খরচ মাসে সাধারণত (৪০০-৭০০) ইউরো পর্যন্ত। বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য বছরে ১২০ পূর্ণ দিবস বা ২৪০ অর্ধ-দিবস পার্ট টাইম কাজের অনুমতি আছে। তবে Semester Break or Summer Vacation এ ফুল টাইম কাজ করা যায়। জার্মান ভাষা ভাল জানা থাকলে পার্ট টাইম কাজ করে খুব সহজেই নিজের খরচ ও সেমিস্টার ফি চালানো যায়।পড়াশোনা শেষে আপনি ১.৫ বছরের জব সার্চ ভিসা পাবেন। জার্মানিতে একটানা বৈধভাবে ৫ বছর থাকার পর স্থায়ীভাবে বসবাসের (পিআর) জন্যে আবেদন করতে পারবেন এবং ৮ বছর পর নাগরিকত্বের জন্যে আবেদন করতে পারবেন।

জার্মানি স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৩ / Germany student visa নিয়ে FAQ

১. ভাই আমি জার্মানীতে ব্যাচেলর করতে চাই, কিভাবে যেতে পারি?

উত্তর: ব্যাচেলরে করতে হলে আপনাকে HSC এর পরে জার্মানী স্বীকৃত বাংলাদেশের যে কোন প্রাইভেট/পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ বছর পড়তে হবে, এবং মোট কোর্সের ২৫% শেষ করতে হবে।

২. জার্মানীতে স্বীকৃত বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয় কোন গুলো সেটা কিভাবে বুঝবো?

উত্তর: anabin university list bangladesh লিখে গুগল করেন। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে H++ থাকবে, সেগুলো জার্মান স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়। এই লিস্টের ১ টায় পড়লেই হবে।

৩. ভাই, ১ বছর কমপ্লিট করার জন্য নর্থসাউথে পড়বো নাকি ন্যাশনাল ইউনিতে পড়বো?

উত্তর: যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লে আপনি সিজিপিএ বেশী তুলতে পারবেন, টাকা কম লাগবে সেটায় পড়বেন। তবে সেইফ জোনে থাকতে ভাল বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়া উচিত। কারন জীবনের সবকিছুই অনিশ্চিত। দেখা গেলো, কোন কারনে আপনার ব্যাচেলরে/মাস্টার্সে আসা হলো না, তখন দেশের চাকরির বাজারে আপনার যেন সাফারার না হতে হয়, সেদিক চিন্তা করে হলেও কোয়ালিটি আছে এমন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া উচিত।

৪. ভাই, IELTS পয়েন্টে কত লাগবে?

উত্তর: IELTS 6 লাগবে। কিছুক্ষেত্রে MOI/5.5 দিয়েও অফারলেটার পাওয়া যায়। তবে সাম্প্রতি এম্বাসি রিকয়ারমেন্ট 6 করেছে। ভিসা পেতে আপনার IELTS 6 থাকাটা বাধ্যতামূলক।

৫. ভাই, Medium of Instruction (MOI) সার্টিফিকেট কি?

উত্তর: Medium of Instruction (MOI) মিডিয়ায় ইন্সট্রাকশন সার্টিফিকেট হচ্ছে আপনার বাচেলর/বিএসসি/বিবিএ পড়াশোনার মাধ্যম যে ইংরেজীতে ছিলো সেটার প্রত্যয়ন/প্রমানপত্র /সার্টিফিকেট। আমাদের দেশে শুধুমাত্র ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সকল প্রফেশনাল কোর্স+ সব পাবলিক+প্রাইভেট ভার্সিটির ব্যাচেলর ইংরেজীতে। সুতরাং আপনি যদি এর অর্ন্তভুক্ত হন আপনিও তুলতে পারবেন।

৬. MOI কি করে এটা দিয়ে? খায় নাকি মাথায় নেয়?

উত্তর: আপনি IELTS এর অল্টারনেটিভ হিসেবে ব্যাবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারেন। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় IELTS এর পরিবর্তে MOI সার্টিফিকেট একসেপ্ট করে। সাধারনত MOI সার্টিফিকেট কে IELTS 6.5 এর সমমান ধরা হয়ে। তবে সেটা নির্দিষ্ট কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে। বিশ্ববিদ্যালয় MOI একসেপ্ট করবে কি না সেটা তাদের ওয়েব সাইটে উল্লেখ করে থাকে। অনেক যায়গা উল্লেখ না থাকলে ঐ সাবজেক্টের কোর্স কোয়াডিনেটরকে মেইল করলেই সে আপনাকে জানাবে যে তারা IELTS এর পরিবর্তে MOI গ্রহন করে কি না।

৭. ভাই, MOI কিভাবে তুলবো?

উত্তর: ভার্সিটির সার্টিফিকেট সেকশনে গিয়ে বলবেন MOI তুলতে চাই, তারা একটা ফর্ম দিবে। সেটা পূরন করে, একাউন্টসে ৩০০/৫০০/- টাকা জমা দিয়ে, সার্টিফিকেট সেকশনে ফর্ম জমা দিলেই সপ্তাহ খানেক পরে সার্টিফিকেট হাতে পেয়ে যাবেন।

৮. ভাই, MOI দিয়ে কি জার্মানীতে আবেদন করা যায়?

উত্তর: হ্যাঁ। জার্মানীতে কিছুকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুকিছু সাবজেক্টে MOI দিয়ে আবেদন করা যায়। এবং এডমিশন পাওয়া যায়। তবে জার্মান এম্বাসী ফেস করতে IELTS 6.0 থাকাটা বাধ্যতামূলক। IELTS না থাকলে আপনাকে কোনদিনও ভিসা দিবে না।

৯. পারটাইম জব পাওয়া যায়?

উত্তর: জি ভাই, পাওয়া যায়। তবে ছোট শহরের তুলনায় বড় শহরে সুযোগ বেশী। আসল কথা হইলো, জার্মানীতে পড়তে আসা সবাই ই পারটাইম জব করে নিজের খরচ নিজে চালায়।

১০. ভাই, জার্মানীতে পারটাইম জব পেতে জার্মান লাঙ্গুইজ লাগে?

উত্তর: ছোট শহরে লাগে। বড় শহরে ল্যাঙ্গুয়েজ না জানলেও জব পাওয়া যায়।

১১. ভাই, ডিপ্লোমা করে জার্মানীতে B.Sc করতে যেতে চাই। পারবো?

উত্তর: ডিপ্লোমা করা হয় যেহেতু সাবজেক্ট ভিত্তিক, সুতরাং ব্যাচেলরে আপনার সাবজেক্ট এর সাথে মিল আছে এমন ইংরেজি মাধ্যমে সাবজেক্ট খুজে পাওয়া কঠিন। যা পাওয়া যায়, তা আবার Uniassist এর মাধ্যমে আবেদন করতে হয়, Uni-Assist ডিপ্লমা একসেপ্ট করে না। তবে কয়েকটা ভার্সিটির কয়েকটা সাবজেক্ট আছে যারা সরাসরি আবেদন নেয় এবং Diploma একসেপ্ট করে, তবে ব্যপারটা অনেক কঠিন। সে ক্ষেত্রে মাস্টার্সে যাওয়াই ভাল।

১২. ভাই মাস্টার্সে আবেদন করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগব?

উত্তর:

  • ১. HSC Certificate/Diploma Certificate
  • ২. HSC Transcript/ Diploma Transcript(১থেকে ৮ টা সব)
  • ৩. B.Sc Certificate
  • ৪. B.Sc Transcript
  • ৫. IELTS 6.0 Certificate
  • ৬. Passport
  • ৭. Recommendation Letter From Professor (২ টা ২ জন থেকে)
  • ৮. Recommendation Letter From Office Head (১টা)
  • ৯. Works Experience Certificate
  • ১০. Europass CV
  • ১১. Letter of Motivation
  • ১২. Medium of Instructions (MOI)
  • ১৩. Trade Course Certificate (Auto Cad, MS office if any)

এই সব ডকুমেন্ট নোটারি করতে হবে।

১৩. নোটারী আবার কি?

উত্তর: বাংলা কথা, উকিল দিয়ে সত্যায়িত করাই নোটারি।

১৪. কি কি কাগজ নোটারী করবো?

উত্তর:- উল্লেখিত ১১ নম্বর প্রশ্নের উত্তরে উল্লেখিত, ১,২,৩,৪,৫,৬,১২,১৩ নং পেপারস গুলো অবশ্যই অফসেটে পেইজে সাদাকালো প্রিন্ট করে নোটারী করতে হবে। নোটারী প্রতি পেইজ ৮-১০ টাকা করে লাগে।ফার্মগেট, মোহাম্মাদপুর টাউনহল মার্কেট, সহ ঢাকা শহরে অনেক জায়গায় নোটারী করা যায়। দামাদামি করে রেট ঠিক করবেন।

৮ টাকা করে প্রতি কপি রেখেছে।

১৫. ভাই, Bsc/ব্যাচেলর করেছি, নিচের সারির বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমি কি জার্মানীতে চান্স পাবো?

উত্তর: জ্বি পাবেন। শুধুমাত্র আপনার ভার্সিটি জার্মান স্বীকৃত হলেই হবে।

১৬. ভাই, আমি ডিপ্লামা করে Bsc করেছি+আমার সেমিষ্টার ১০ টা+ আমি নাইট শিফটে পড়েছি, আমি কি জার্মানীতে আবেদন করতে পারবো?

উত্তরঃ জ্বি ভাই পারবেন। কোন সমস্যা নাই।

১৭. ভাই, সিজিপিএ কত লাগে?

উত্তর: ব্যাচেলরের সিজিপিএ ৩.৫ থাকলে সবচেয়ে ভাল। ৩.০ থাকলেও হবে। তবে ২.৬৮ পেয়েও জার্মানীতে আসার নজির আছে। সুতরাং কোন কিছুই অসম্ভব না।

১৮. ভাই জার্মানীতে যেতে কত টাকা লাগে?

উত্তর: মোটামুটি ১৩ লাখ টাকা লাগে।

১৯. কিভাবে ১৩ লাখ টাকা লাগে?

উত্তর: ব্লক একাউন্ট ১০.৫ লাখ, প্লেন ভাড়া ৫০ হাজার। অনান্য খরচ ২ লাখ+-। * সব সময় আপডেট জেনে নিবেন। খরচ সময়ের সাথে সাথে ওঠা-নামা করে।

২০. ভাই, ব্লক একাউন্ট কি?

উত্তর: জার্মানীতে আপনার নিজের নামে ১০৫৩২ ইউরো ১ বছরের জন্য জমা করতে হয়। জার্মানীতে যাওয়ার পরে আপনি পুরো টাকাটা ১২ কিস্তিতে ফেরত পাবেন। অনান্য দেশের দেশে যেমন ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হয়, জার্মানীতে ব্যাংক স্টেটমেন্টের পরিবর্তে ব্লক একাউন্ট করতে হয়। ব্লক একাউন্ট সোনালী, সিটি, ইস্টার্ন, ঐছাড়া অনান্য ব্যাংকে করতে পারবেন। * ব্লক একাউন্ট কি, কেন? কিভাবে করবেন, এর বিস্তারিত ইউটুব থেকে দেখে নিবেন।

২১. ভাই, জার্মানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কখন আবেদন করতে হয়?

উত্তর: আপনি বছরে ২ টা সেশনে আবেদন করতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে ডেডলাইন আলাদা হতে পারে তবে-

  • ১. উইন্টার( জানুয়ারি ১৫-জুলাই ১৫)
  • ২. সামার ( ১লা অক্টবার-ডিসেম্বর ১৫)

২২. ভাই, কখন আবেদন করলে ভাল হবে?

উত্তর: উইন্টারে সবচেয়ে বেশী কোর্স অফার করে জার্মানীতে। তাই উইন্টারে আবেদন করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। সাধারনত প্রতিটা ভার্সিটির আবেদনের ডেডলাইন এক এক রকমের থাকে, তাই প্রতিটা কোর্সের ওয়েব সাইটে নিজে নিজে খুজে বের করে রাখুন। আপনার কোন সময়ে আবেদন করতে হবে। কোর্স সার্চ করতে, Daad de international Program লিখে গুগল করুন। এরপর সার্চ করে আপনার কোর্স সিলেক্ট করুন।

২৩. ভাই জার্মানীতে টিউশন ফি আছে?

উত্তর: না ভাই, নাই। তবে ১ টা স্টেট, বার্ডেন বুডেনবার্গে আছে, সেটা প্রতি সেমিষ্টারে ১৫০০ ইউরোর মতো। এছাড়া সারা জার্মানীতে অনান্য সকল স্টেটে, সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা ফ্রি। তবে প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি সেমিষ্টারে সেমিষ্টার কনট্রিবউশন ১০০-৩০০ ইউরো লাগে। এতে করে ঐ স্টেটের সকল পাবলিক পরিবহণে টিকেট ফ্রি।

২৪. জার্মানীতে স্কলারশিপ আছে?

উত্তর: হ্যা আছে। DAAD স্কলারশিপ।

২৫. আবেদন করতে কি যোগ্যতা লাগে?

উত্তর: ব্যাচেলর শেষে, কমপক্ষে ০২ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা লাগে। এবং IELTS 6.5 লাগে।

২৬. DAAD স্কলারশিপ পেলে কি কি সুবিধা?

উত্তর: ব্লক একাউন্ট লাগব না। মাসে ৮৫০ ইউরো পাবেন। এবং এম্বাসিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত এপায়নমেন্ট পাবেন। DAAD স্কলারশিপ মানে হট কেক। পেলে লাইফ ফুরফুরে হয়ে যাবে। তাই চেষ্টা করতে ক্ষতি কি!

২৭. ভাই জার্মানীতে পড়াশোনা শেষ করে ভবিষ্যতে দেশে পাঠিয়ে দেয়?

উত্তর: না। আপনি চাকরি খুজতে ২ বছরের জব সার্সিং ভিসা পাবেন।

২৮. ভাই, জার্মানীতে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়?

উত্তর: জ্বি ভাই। জার্মানীতে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়। সাধারনত নাগরিকত্ব পেতে ক্যাটাগরি ভেদে, ২ থেকে ৮ বছর লাগে।

সবশেষ কথা হলো- জার্মানীতে উচ্চশিক্ষা খুব কঠিন কিছু না। ধৈর্য্য ধরতে হবে, মনোবল বাড়াতে হবে এবং লক্ষ্য ঠিক রেখে পরিশ্রম করতে থাকুন। কোন অবস্থাতেই হতাশ হওয়া যাবে না। ইনশাল্লাহ আপনি অবশ্যই পারবেন।

এক নজরে জার্মানি : সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

জার্মানি ইউরোপের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তিশালী ও শিল্পোন্নত সেনজেনভুক্ত একটি দেশ। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীর কাছেই জার্মানি একটি স্বপ্নের দেশ। এর রাজধানী বার্লিন। দেশটির প্রধান ভাষা হচ্ছে জার্মান। দেশটির ১৬ টি রাজ্য রয়েছে। এর আয়তন ৩,৫৭,১৬৮ বর্গ কিঃমিঃ এবং জনসংখ্যা ৮,১৪,৫৯,০০০ (২০১৫ পর্যন্ত)। দেশটির মাথাপিছু আয় প্রায় ৪৭,০৩৩ মার্কিন ডলার (২০১৫ পর্যন্ত) এবং স্বাক্ষরতার হার ৯৯%। দেশটির উত্তরে ডেনমার্ক ও বাল্টিক সাগর, দক্ষিণে অস্ট্রিয়া ও সুইজারল্যান্ড, পূর্বে চেক — প্রজাতন্ত্র ও পোল্যান্ড, পশ্চিমে ফ্রান্স, লুক্সেমবার্গ, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ড অবস্থিত। দেশটির আয়তন ৮৩,৮৭৯ বর্গ কিঃমিঃ এবং জনসংখ্যা ৮৬,৬২,৫৮৮ ( ২০১৫ পর্যন্ত)। যদি ইউরোপে উচ্চশিক্ষা ও উন্নত ক্যারিয়ার নিয়ে ভেবে থাকেন, তাহলে জার্মানি হতে পারে আপনার জন্য একটি আদর্শ দেশ।