পেওনিয়ার থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম নিয়ে এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। দেশের অসংখ্য ফ্রিল্যান্সার এর কথা চিন্তা করে বিকাশে যুক্ত হলো পেওনিয়ার থেকে টাকা আনার ফিচার। মূলত বিকাশ রেমিট্যান্স অপশনের মাধ্যমে পেওনিয়ার একাউন্ট বিকাশ একাউন্টের সাথে লিংক করে পেওনিয়ার থেকে বিকাশে টাকা আনা যাবে।
দেশজুড়ে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বিকাশ নিয়ে এলো দারুণ সুখবর! কোনো অপেক্ষা আর কাগজপত্রের ঝামেলা ছাড়াই পেওনিয়ার থেকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের টাকা আপনার বিকাশ একাউন্টে আনতে পারবেন মুহূর্তেই। আরো আছে! টাকা আনতে পারবেন মাত্র ১,০০০ টাকা থেকেই!
চলুন জেনে নেওয়া যাক পেওনিয়ার থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।
প্রথমে কথা বলা যাক পেওনিয়ার থেকে বিকাশে টাকা আনার সুবিধা নিয়ে। ব্যাংকের মাধ্যমে বা এটিএম বুথে পেওনিয়ার থেকে টাকা না এনে কেনো ব্যবহার করবেন বিকাশ, সেটি একটি প্রশ্ন হতে পারে। পেওনিয়ার থেকে বিকাশে টাকা আনার অনেক সুবিধা রয়েছে, যেমনঃ
পেওনিয়ার থেকে বিকাশে টাকা আনলে ২% ক্যাশব্যাক রিওয়ার্ড দেওয়া হবে যা পেওনিয়ার চার্জ হিসেবে কেটে নিবে। অর্থাৎ কোনো ধরনের বাড়তি ফি লাগছেনা পেওনিয়ার থেকে বিকাশে টাকা আনার ক্ষেত্রে (সীমিত সময়ের অফার)
সর্বনিম্ন ১০০০টাকা থেকে শুরু করে বিকাশে টাকা আনা যাবে
পেওনিয়ার থেকে মুহুর্তের মধ্যে টাকা বিকাশ একাউন্টে যুক্ত হবে (ব্যাংকের ক্ষেত্রে অনেক সময় কয়েকদিন সময় লাগে)
গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দ্রুত পেওনিয়ার থেকে বিকাশে টাকা আনার সুবিধার ফলে কার্ড যারা ব্যবহার করেন না তারা টাকা তুলতে পারবেন
পেওনিয়ার থেকে কার্ডে ক্যাশ আউটের চেয়ে বিকাশের ক্যাশ আউট ফি তুলনামূলকভাবে অনেক কম
এবার কথা হচ্ছে এই ইন্টারন্যাশনাল রেমিট্যান্স এর কোনো ধরনের লিমিট আছে কিনা। হ্যাঁ, পেওনিয়ার থেকে বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে বিকাশে টাকা আনার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট লিমিট রয়েছে। যেমনঃ
প্রতি দিন সর্বোচ্চ ১০ বার ও ১,২৫,০০০টাকা
প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ৫০ বার ও ৪,৫০,০০০টাকা
এবার জানি চলুন পেওনিয়ার থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম সম্পর্কে।
পেওনিয়ার থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম
পেওনিয়ার থেকে এই পদ্ধতিতে টাকা আনার ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে একটি বিকাশ একাউন্ট ও একটি পেওনিয়ার একাউন্ট থাকা জরুরি। ইতিমধ্যে পেওনিয়ার একাউন্ট না থাকলে পেওনিয়ার একাউন্ট খুলতেঃ
পেওনিয়ার একাউন্ট খুলতে পেওনিয়ার পরিচালিত রেজিস্ট্রেশন পেইজে প্রবেশ করুন বিকাশ অ্যাপ থেকে
রেজিস্ট্রেশন পেইজে প্রবেশ করা যাবে Remittance > Payoneer > Create Payoneer Account with bKash অপশনে প্রবেশ করুন
প্রয়োজনীয় সকল তথ্য প্রদান করে রেজিস্টেশন সম্পন্ন করুন, ভুল তথ্য প্রদানে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া ব্যর্থ হতে পারে
বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে খোলা একাউন্ট একটিভ হতে সময় লাগবে অন্তত ৩ কর্মদিবস। ৩ কর্মদিবসের মধ্যে পেওনিয়ার টিম রিভিউ করে একাউন্টের রেজিস্ট্রেশন কনফার্ম করবে
একাউন্ট খোলা সম্পন্ন হয়ে গেলে এবার পেওনিয়ার ও বিকাশ একাউন্ট লিংক করতে হবে। পেওনিয়ার এর সাথে বিকাশ অ্যাকাউন্ট লিংক করতেঃ
বিকাশ অ্যাপে প্রবেশ করুন ও Remittance আইকনে ট্যাপ করে Payoneer সিলেক্ট করুন
এরপর “Link my Payoneer Account” অপশন সিলেক্ট করুন
প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ সঠিকভাবে প্রদান করুন
উল্লেখ্য যে পেওনিয়ার একাউন্টে রেজিস্টার্ড নাম ও বিকাশ একাউন্টের নাম একই হতে হবে
একাউন্ট লিংকিং এর সময়ে মোবাইলে আসা ওটিপি কোড প্রদান করুন, এই কোড কারো সাথে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন
উল্লেখিত প্রক্রিয়া সঠিকভাবে অনুসরণ করলে পেওনিয়ার একাউন্ট ও বিকাশ একাউন্ট লিংক হয়ে যাবে। একাউন্ট লিংকিং সম্পন্ন হলে তা নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানতে পারবেন। এবার বিকাশ অ্যাপে পেওনিয়ার এর মাধ্যমে ফরেন কারেন্সি আনতে পারবেন। বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে পেওনিয়ার থেকে টাকা আনতেঃ
বিকাশ অ্যাপের রেমিট্যান্স সেকশনে প্রবেশ করে কোন ফরেন কারেন্সি বিকাশে যুক্ত করতে চান তা সিলেক্ট করুন
এরপর উইথড্রয়াল এর পরিমাণ ইনপুট করুন ও “proceed” অপশনে ট্যাপ করুন
এরপর বাংলাদেশী টাকায় কনভার্ট করা এমাউন্ট দেখতে পাবেন। টাকায় কনভার্ট করতে “Tap to continue” অপশনে ট্যাপ করুন
এরপর উইথড্রয়াল রিকুয়েস্ট গ্রহণ করা হলে নোটিফিকেশন পেয়ে যাবেন
এরপর উইথড্রয়াল প্রসেস সম্পন্ন হলে সেক্ষেত্রেও নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানতে পারবেন
পেওনিয়ার টু বিকাশ
বিকাশ গ্রাহকেরা এখন বিকাশ অ্যাপ থেকেই পেওনিয়ার একাউন্ট খুলে পেওনিয়ার থেকে সরাসরি বিকাশ একাউন্টে টাকা আনতে পারবেন।
বিকাশ অ্যাপ থেকে নতুন পেওনিয়ার একাউন্ট খুলতে বিকাশ হোম পেজের রেমিট্যান্স আইকনে ক্লিক করুন। এরপর পেওনিয়ার অপশনে গিয়ে রেজিস্টার বাটনে ক্লিক করুন। ক্লিক করার সাথে সাথেই পেওনিয়ার-এ রেজিস্ট্রেশনের পেজে চলে আসবে। বিকাশ শুধু পেওনিয়ার একাউন্ট রেজিস্ট্রেশনে সহায়তা করছে, সফল/ব্যর্থ রেজিস্ট্রেশন কিংবা রেজিস্ট্রেশনের বিস্তারিত নির্ভর করবে পেওনিয়ার কর্তৃপক্ষের উপর।
আপনার ব্যাংক একাউন্ট সম্পর্কিত তথ্য না দিয়েও বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে পেওনিয়ারে রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব।
সফলভাবে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হওয়া সাপেক্ষে আপনি গ্রাহক আইডিসহ একটি কনফার্মেশন ইমেইল পাবেন।
আগে থেকেই পেওনিয়ার একাউন্ট থাকলে বিকাশ গ্রাহকেরা তাদের বিকাশ অ্যাপের সাথে পেওনিয়ার একাউন্ট লিংক করে সহজেই লেনদেন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে পেওনিয়ার একাউন্টের গ্রাহকের নাম ও বিকাশ একাউন্টের গ্রাহকের নাম একই হতে হবে।
বিকাশ একাউন্টের সাথে পেওনিয়ার একাউন্ট লিংক করতে ট্যাপ করুন ‘রেমিট্যান্স আইকন’ > ‘পেওনিয়ার’ > ‘আপনার পেওনিয়ার একাউন্ট লিংক করুন’। এরপর পেওনিয়ার-এ সাইন ইন করার জন্য ইমেইল/ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিন। ইমেইল/ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড সঠিক হলে আপনি একটি ওটিপি পাবেন। ওটিপি প্রদান করলেই আপনার বিকাশ একাউন্ট ও পেওনিয়ার একাউন্ট লিংক হয়ে যাবে।
একটি বিকাশ একাউন্টের সাথে শুধু একটি পেওনিয়ার একাউন্টই লিংক করা যাবে।
কেউ বিকাশ অ্যাপ থেকে পেওনিয়ার সার্ভিসটি ব্যবহার করতে না পারলে ‘রেমিট্যান্স’ বাটনে ট্যাপ করার পরে নিজের জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে তথ্য হালনাগাদ করে নিলেই সার্ভিসটি ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত হবেন।
পেওনিয়ার থেকে বিকাশ-এ টাকা উত্তোলনের সময়ে আপনি আপনার পেওনিয়ার একাউন্টের উপর নির্ভর করে নির্দিষ্ট কিছু কারেন্সিতেই আপনার ব্যালেন্স দেখতে পারবেন।
পেওনিয়ার থেকে বিকাশ-এ টাকা উত্তোলনের সর্বনিম্ন লিমিট ১,০০০ টাকা ও সর্বোচ্চ লিমিট ১,২৫,০০০ টাকা প্রতিদিন।
পেওনিয়ার থেকে বিকাশ-এ প্রতিবার টাকা উত্তোলনের সময়ে লেনদেনের মোট এমাউন্টের উপর ২% ফি চার্জ করবে পেওনিয়ার। টাকা উত্তোলনের সময়ে পেওনিয়ার-এর এ ফি ব্যতিত বিকাশ কিংবা সরকার নির্ধারিত আর কোনো চার্জ প্রযোজ্য নয়।
প্রতিবার সফলভাবে পেওনিয়ার থেকে বিকাশ-এ টাকা উত্তোলনের পর গ্রাহক রিওয়ার্ড পয়েন্টস পাবেন।
এই সার্ভিসের ক্ষেত্রে সরকার প্রদত্ত ২.৫% প্রণোদনা প্রযোজ্য নয়।