কোটা আন্দোলন ২০২৪ : শিক্ষার্থীদের জনসমূদ্র, হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা

5/5 - (1 vote)

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে অন্যদিনের মতো শুক্রবারও শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতিতে জনসমূদ্রে পরিণত হয়েছে শাহবাগ । এই সময় শিক্ষার্থীদের হাতে বাংলাদেশের পতাকার পাশাপাশি ফিলিস্তিনের পতাকাও দেখা গেছে।

এর কারণ জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা জানান, ফিলিস্তিনের পতাকা সারা বিশ্বে নির্যাতিতদের মুক্তির প্রতীক। তাই এই পতাকা হাতে নিয়ে কোটার নামে বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন।

শাহবাগে ব্যাপক জনসমাবেশ ঘটে। ওই সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ছাত্র সমাজের অ্যাকশন’, ‘হুমকি দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘বাধা দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’, ‘বুলেট দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না, পুলিশ দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’, ‘মামলা দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরো দিব রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দিব না’।

১২ জুলাই ২০২৪ (শুক্রবার) ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের জনসমাবেশ, বিক্ষোভ ও মিছিলের আয়োজন করে কোটা বিরোধী শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রার্থীরা। তাদের এক দফা দাবি– সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে নূন্যতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।

 

কোটা আন্দোলন কি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য উপহার হিসেবে কোটা চালু করেছিলেন। যদিও সংশ্লিষ্টদের মতে, এই উপহারকে সরাসরি কোটা বলার সুযোগ কম। ওই সময় সরকারি কর্মচারী নিয়োগে মাত্র ২০ শতাংশ নেওয়া হয়েছিল মেধায় (সাধারণ), ৪০ শতাংশ জেলা কোটা এবং ১০ শতাংশ ছিল নারী কোটা। আর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য উপহার হিসেবে কোটা সংরক্ষণ করা ছিল ৩০ শতাংশ।

১৯৭৬ সালে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ জেলা কোটা থেকে ২০ শতাংশ কমিয়ে সাধারণদের জন্য ২০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে উন্নীত করা হয়, মুক্তিযোদ্ধা কোটার ক্ষেত্রে ১৯৭২ সালের সমান ৩০ শতাংশ কোটা রাখা হয়। নারীদের জন্য ১০ শতাংশ পদ সংরক্ষিত থেকে যায়।

২০১৮ সালের আন্দোলনকারী ও সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ ছিল, কোনও পরিসংখ্যান ছাড়াই ১৯৭৬ সালের পর আবারও ১৯৮৫ সালে কোটা সংস্কার করা হয়। ওই বছর কোটা সংস্কার করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে পাঁচ শতাংশ বাড়িয়ে সাধারণদের জন্য ৪৫ শতাংশ নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা কোটা আগের মতোই ৩০ শতাংশ রাখা হয়। এছাড়া জেলা কোটা ১০ শতাংশ ও নারীদের জন্য ১০ শতাংশ পদ সংরক্ষণ করা হয় আগের মতোই। আর প্রথমবারের মতো উপজাতি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য পাঁচ শতাংশ কোটা রাখা হয়।

এডু ডেইলি ২৪

Education, News and Information-based portal

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *