ইউটিউবে রাফসান দ্যা ছোট ভাই ফিচার্ড, তার জীবনী ও বড় হওয়ার গল্প
ইউটিউবে রাফসান দ্যা ছোট ভাই ফিচার্ড হয়েছেন। তিনিই প্রথম বাংলাদেশি, যাকে নিয়ে ইউটিউব ফিচার করেছে। বাংলাদেশিদের মধ্যে এমন ঘনটা এই প্রথম।
ইউটিউব তাদের টাইমলাইনে লিখেছে, ‘ দ্যা ছোটোভাই পুরো বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে’! তার বর্তমানে ইউটিউব সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ১৮ লাখেরও বেশি। পুরো বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের কন্টেন্ট ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে নাদির অন দ্যা গো’ এর পাশাপাশি রাফসানের ভূমিকাও অনবদ্য!
রাফসান দ্যা ছোট ভাই কে?
বাংলাদেশের জনপ্রিয় এন্টারটেইনার ইফতেখার রাফসান (Rafsan the choto bhai) খাবার নিয়ে ইউটিউব ও ফেসবুকে ভ্লগ বা কনটেন্ট তৈরি করেন। বাংলাদেশ, ভারতসহ অনেক দেশেই তিনি পরিচিত ও জনপ্রিয়।
রাফসান দ্যা ছোট ভাই ইউটিউবার হলেন যেভাবে
আমি প্রধানত ইউটিউবিং শুরু করি ২০১৭ সালে। চ্যানেলটা তখনই খোলা। একদিন ক্লাস শেষে ঢু মারি ঢাকার বার্গার কিং এ। আমার এক বন্ধু একরামুল আইডিয়াটা দিলো তখনই। সেই মূলত আমাকে সাহস জুগিয়েছে ইউটিউবিং শুরু করতে বলে। তবে ২০১৭ সালে মাত্র ৩টি ভিডিও দিয়ে লম্বা একটি বিরতিতে ২ বছর বন্ধ ছিলাম।
কেন ফুড ভ্লগিংয়ে রাফসান দ্যা ছোট ভাই
বন্ধু একরামুলই আমাকে বলেছিলো ফুড ব্লগিং বিষয়টা ভিন্ন। তার ধারনাতেই ফুড ব্লগ শুরু করি, তবে আমি প্রধানত ফুড ব্লগার না। আমি এই বিষয়েই ভিডিও বানাই তবে খাবারের প্রতি আলাদা ঝোঁক থেকেই ওটা তুলনা মূলকভাবে বেশি করা হয়। অধিকাংশ ফুড রিভিউতে দেখা যায় খারাপকে খারাপ বলতে চায়না, আমি এটা থেকে ব্যতিক্রম হতে চেয়েছি। ভালোকে ভালো, খারাপকে খারাপ বলার মন মানসিকতা নিয়ে ফুড রিভিউ শুরু করি।
যা যা করেন রাফসান
মডেলিং : আমার মডেলিং এর শুরুটা বছর দুয়েক আগে। ২০১৭ সালে দেওয়া ভিডিওতে দেখেই বেসরকারি একটি মোবাইল কোম্পানির বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে নির্বাচন করা হয় আমাকে। শুরুটা এভাবেই। এরপর থেকে বেশ কয়েকটি কোম্পানির মডেল হিসেবে কাজ করছি, এখনো করে যাচ্ছি। মডেলিং এ আসার মূল কারণ অভিজ্ঞতা। আমি জীবনে সবসময় নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে ভালোবাসি, মডেলিংটাও ঠিক এভাবেই, অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্যই আসা। আর্থিক কিংবা ফুল টাইম হতে নয়।
গেইমার : আমি প্রফেশনালি গেইমিং শুরু করি ২০১১ সাল থেকেই। বড় ভাই থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে গেইমিং এ আসি। এরপর ধীরে ধীরে ব্যাপারটাকে প্রফেশনালি নিতে শুরু করি। এ পর্যন্ত কতগুলো গেইমিং টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছি নিজের কাছেই সঠিক তালিকা নেই। ২০১৬ সাল থেকেই আমি যেকোনো টুর্নামেন্টে অপরাজিত। টুর্নামেন্টে অংশ নিতে দেশের বাইরে গিয়েছি ৪ বার। সত্যি বলতে গেইমিং প্রফেশনটা আমাদের দেশের অধিকাংশের চোখে হাস্যকর। এটাও কিন্তু হতে পারে একটি পেশা। আমি আমাদের পাশের দেশ ভারতে গিয়েছি, সেখানে ১২, ১৪ বছরের ছেলেরা গেইমিং এ মাসে লাখের কাছাকাছি আয় করছে। এটাও কিন্তু একটি পেশা, সেটি অনেকের ধারণায় নেই বিশেষ করে আমাদের দেশের এটি একদমই নেই। আমাদের দেশের অনেকেই গেইমিং এ বেশ আগ্রহী শুধুমাত্র পরিবারের দ্বিমতে নিজেকে গড়ে তুলতে পারছেনা। আশা করি এই দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবে শীঘ্রই।
আগামী পরিকল্পনা : নিজেকে আন্তর্জাতিক ফুড রিভিউয়ার হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। অবশ্য এই মাসেই সব হওয়ার কথা ছিলো। এই মাসেই আমার দেশের বাইরে তিনটি দেশে যাওয়ার কথা ফুড রিভিউ করতে, করোনাভাইরাসের জন্য সব বাতিল করতে হলো। তবে পরিস্থিতি ঠিক হলেই বিষয়টি বাস্তবায়ন করবো। অনেকেই আমাকে বলে আমি ভিডিওতে অধিকাংশ সময় ইংরেজি কেনো বলি, এর কারণ আমি চাই আমার ভিডিও বাইরের দেশের দর্শকরাও বুঝতে পারুক। তারাও আমাদের খাওয়া-দাওয়া, পরিবেশ নিয়ে আগ্রহী হোক। সবসময় নিজের আলাদা একটি স্টাইল তৈরি করতে চেষ্টা করি।