অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা : তাদের স্বপ্ন ভেঙে দেবেন না!
করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে অনার্সে শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা। গত ১৭ অক্টোবর ২০২০ (শনিবার) উপাচার্যদের সংগঠন ‘বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ’-এর এই সিদ্ধান্তের খবর প্রকাশের পর অনেকেই নানা রকম প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত প্রক্রিয়ায় মূল্যায়ন করা সম্ভব কিনা, এ নিয়ে অনেকের শঙ্কা আছে। এ পদ্ধতির মাধ্যমে যথাযথভাবে উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের বাছাই করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মিডটার্ম, সেমিস্টার ফাইনাল যেখানে নিতে পারছে না। সেখানে কীভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেবে? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিশ্চয়ই এইচএসসি পাশকৃত শিক্ষার্থীদের চেয়ে ম্যাচিউরড, সুবিধাভোগী। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মিড, সেমিস্টার ফাইনালের চেয়ে এডমিশন টেস্ট অনেক বেশি গুরুত্ববহ। কারণ এডমিশন টেস্ট হয় প্রতিযোগিতামূলক। অনেকে এটাকে ভর্তিযুদ্ধও বলে থাকেন। আর আমি বলি স্বপ্নযুদ্ধ! প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেধাবীদের স্বপ্ন থাকে ভালো মানের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে জীবনকে পরিবর্তন করার। প্লিজ তাদের স্বপ্ন ভেঙে দিয়েন না।
অনলাইনে এডমিশন টেস্ট নিলে তাদের অনেকেরই স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়ে যাবে। অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার শতাধিক নেতিবাচক দিক আছে।কারণ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা টেকনোলজি দক্ষতা, সুবিধা, প্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত। তাছাড়া অনলাইনে পরীক্ষা নিলে অসদুপায় অবলম্বন করার নানা রকম সুযোগ থাকবে। ফলে স্টুপিড দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভরে যাবে!
সম্মানিত উপাচার্য মহোদয়গণ! বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে আপনাদের মধ্যে কাউকে কাউকে অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা অপছন্দ করে। হাসির পাত্র ও হয়েছেন বিভিন্ন সময়। শেষ বয়সে এখন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বদদোয়া নিয়েন না প্লিজ। জানেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পেলে অনেক সম্ভাবনাময়ীর স্বপ্ন ওখানেই মাটিতে মিশে যায়! আর স্বপ্ন দেখার সুযোগ, সাহস কোনোটাই হয়ে ওঠে না। ভালো মানের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অর্থনৈতিক সক্ষমতা কয়জনের আছে বলুন?
সোশ্যাল ডিসট্যান্স মেনে অফলাইনেই এডমিশন টেস্ট নেয়ার অবশ্যই সুযোগ আছে।এখন সেটা কীভাবে নেয়া যাবে,তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।
লেখক : এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।