ট্রাভেল ট্যাক্স অনলাইনে দেবার উপায় নিয়ে এখানে আলোচনা করা হলো। এছাড়া ট্রাভেল ট্যাক্স কি কত কোথায় দেবেন, সেসব তথ্যও এখানে দেয়া হয়েছে।
ট্রাভেল কি ?
Travel Tax বা ভ্রমণ কর বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে কর ( tax ) হিসেবে পরিশোধ করতে হয়। স্থল, আকাশ, ট্রেন বা নৌপথে যেভাবেই যতবারই দেশের বাইরে যান আপনাকে প্রতিবারই এই ট্যাক্স দিতে হবে।
বর্তমানে আকাশ পথে ও ট্রেনে ভ্রমণের ক্ষেত্রে টিকেটের সাথেই ভ্রমণ কর যুক্ত থাকে।শুধুমাত্র স্থলপথে ভ্রমণের ক্ষেত্রে আপনাকে আলাদা করে ভ্রমণ কর দিতে হবে। ট্রাভেল ট্যাক্স দেওয়া ছাড়া আপনি দেশের বাইরে কোথাও ভ্রমণে যেতে পারবেন না।
বর্তমানে যেকোন স্থল বন্দর দিয়ে প্রতিবার বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রাপ্ত বয়স্কদের (১২ বছর+) ভ্রমণ কর** ৫০০** টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের (৫ – ১২ বছর) জন্যে ভ্রমণ কর ২৫০ টাকা।
স্থলপথে কোন দেশে যেতে দিতে হয়?
বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে ভারত, নেপাল, ভুটান ও মায়ানমার যাওয়া যায়। তাই স্থলপথে ভারত ভ্রমণ বা বাকি যে কোণ দেশেই যান, আপনাকে ট্রাভেল ট্যাক্স বা ভ্রমণ কর দিতে হবে।
কোথায় ট্রাভেল ট্যাক্স দেওয়া যায়?
এতদিন কেবলমাত্র জেলা ভেদে ১/২টি সোনালী ব্যাংকের নির্ধারিত শাখা ও বেশিরভাগ স্থল বন্দরে ট্রাভেল ট্যাক্স বা ভ্রমণ কর দেওয়ার সুযোগ থাকলেও বর্তমানে অনলাইনে ভ্রমণ কর দেয়ার সুবিধা চালু করা হয়েছে। ফলে সোনালী ব্যাংকে সরাসরি উপস্থিত হয়ে কর দেয়ার পাশাপাশি
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যেকোন স্থান থেকে অনলাইনে ট্রাভেল ট্যাক্স পরিশোধ করা যাবে।
NBR ও Sonali Bank এর যৌথ উদ্যোগে ট্রাভেল ট্যাক্স অনলাইনে দেবার উপায় চালু হয়েছে।
বর্তমানে বেনাপোল, দর্শনা এবং ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে ভ্রমণকারীগণ অনলাইনে ট্রাভেল ট্যাক্স প্রদানের এই সেবা পাবেন।
পরবর্তীতে সব গুলো স্থল বন্দরের জন্যে ট্রাভেল ট্যাক্স অনলাইনে দেবার সুবিধা চালু হবে।
অনলাইনে ভ্রমণ কর দেবার জন্যে প্রথমে –
পরবর্তী ধাপে আপনার পূরণকৃত তথ্য দেখাবে। কোন ভুল থাকলে এডিট অপশন থেকে ঠিক করে নিন।
সব ঠিক থাকলে “পেমেন্ট” অপশনে ক্লিক করুন। বর্তমানে অনলাইনে ট্রাভেল ট্যাক্সের অর্থ সোনালী ব্যাংক অনলাইন সিস্টেম থেকে অথবা কার্ড দিয়ে করতে চাইলে মাস্টার কার্ড, কিউ ক্যাশ, ভিসা কার্ড এবং বিকাশের মাধ্যোমে পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। অনলাইনে ভ্রমণ করের ৫০০ টাকার সাথে ১০ টাকা সার্ভিস চার্জ প্রদান করতে হবে।
আপনার পেমেন্ট করা হয়ে গেলে একটা ট্রাভেল ট্যাক্স পরিশোধের রিসিট PDF ফরমেটে ডাউনলোড করতে পারবেন। সেই রশিদ প্রিন্ট করে ভ্রমণের সময় সঙ্গে রাখতে হবে।
স্থল বন্দরে ৩৬৫ দিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত Travel Tax দেয়ার সুযোগ আছে। তবে সময় বাঁচাতে ও জটিলতা এড়াতে সোনালি ব্যাংকের নির্ধারিত কোন শাখায় আগেই কর জমা দিয়ে দেয়াই ভালো।
এছাড়া, সীমান্তে ভ্রমণ কর দিতে এক্সট্রা ফি গুনতে হয়। আবার ডাউকিতে ভ্রমণ কর পরিশোধের কোন ব্যবস্থা নেই।
কোন কোন ক্ষেত্রে ২০০-৩০০ টাকা অতিরিক্ত দিলে ভ্রমণ ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ পাওয়া যায়।
তাছাড়া, আগে থেকেই ট্রাভেল ট্যাক্স পরিশোধ করে রশিদ সংগ্রহ করে রাখতে পারেন এবং এতে কোন ঝামেলা নেই কারণ এর কোন নির্দিষ্ট মেয়াদ নেই।
সোনালি ব্যাংকের কিছু শাখায় চালানের মাধ্যমেও ট্রাভেল ট্যাক্স জমা দেয়া যায়। তবে জেনে নিতে হবে আপনি যে শাখায় যেতে চাচ্ছেন, সে শাখায় চালানের মাধ্যমে ভ্রমণ কর নেয় কিনা। চালানের মাধ্যমে ভ্রমণ কর জমা দিতে জোন অনুযায়ী ভ্রমণ কর কোড প্রয়োজন হয়। সোনালী ব্যাংকের জোন অনুযায়ী একেক শাখার কোড একেক রকম। আর চালানের মাধ্যমে কর দেওয়ার ক্ষেত্রে চালানে পাসপোর্ট নাম্বার, নাম, ঠিকানা ইত্যাদি বড় হাতের ইংরেজি অক্ষরে লিখতে হয়।
মনে রাখা জরুরী, সোনালী ব্যাংকের সকল শাখায় ট্রাভেল ট্যাক্স দেয়ার সুযোগ নেই। ট্রাভেল ট্যাক্স দেয়া যাবে সোনালী ব্যাংকের এমন কয়েকটি শাখার তালিকা :
সোনালী ব্যাংকের যেসকল শাখায় ট্রাভেল ট্যাক্স দেয়া যায় –
মনে রাখবেন, যতবার স্থলপথে বিদেশ ভ্রমণে যাবেন ঠিক ততবার ভ্রমণ কর পরিশোধ করতে হয়।
ট্রাভেল ট্যাক্সের কোন মেয়াদ দেয়া থাকে না তাই ট্যাক্সের পরিমাণ/নিয়ম যতদিন পরিবর্তিত না হবে ততদিন পর্যন্ত এটা একবার ভ্রমণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারবেন।
আর সম্ভব হলে ভ্রমণের আগেই ট্রাভেল ট্যাক্স জমা দিয়ে দিবেন। এতে ভ্রমণের সময় স্থল বন্দরে অনেকখানি ঝামেলা মুক্ত থাকতে পারবেন।
ভ্রমণ কর নিজের বা অন্য কারোর জন্য দিতে গেলে নিজের ও অন্যের মূল পাসপোর্ট বা ফটোকপি/স্ক্যানকপি নিয়ে যেতে হয়। আবার নিজে না গিয়ে অন্যকে দিয়ে ট্যাক্স জমা দিতে পারবেন।