– বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) ১০ম (পিএসসি-১ম ও পিএসসি- ২য় মিলিয়ে) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
– উনার হাত ধরেই ২০০৭ সাল থেকে বিসিএস পরীক্ষায় স্বচ্ছতা ফিরে আসে। উনার যোগদানের পর থেকেই বিসিএস হয়ে উঠে মেধাবীবের নির্ভরতার প্রতীক।
– উনার সময়কালে ২৭ তম বিসিএস (সংশোধিত) থেকে বিসিএস ভাইভার নম্বর ২০০ নম্বর থেকে ১০০ নম্বর করা হয় (তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়কালে মৌখিক পরীক্ষায় দুর্নীতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে) যা ২৯ তম বিসিএস পর্যন্ত বহাল ছিল।
– উনার সময়কালে ২৮ তম বিসিএস থেকে ক্যাডারের পাশাপাশি নন-ক্যাডারে সুপারিশ করা শুরু হয় (বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিন্তু ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত নয় এমন প্রার্থীদের)।
– তাঁকে একজন পরিবর্তনমনস্ক ও সফল চেয়ারম্যান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার কর্মকালে ব্রিটিশ সিভিল সার্ভিসের অনুরূপ রাষ্ট্রের বরেণ্য নাগরিকদের বিসিএস মৌখিক পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তখনকার সময়ে প্রার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে পরীক্ষার খাতাও দেখানো হতো।
– তাঁর সময়কালে ২০১৩ সালে পিএসসির কার্যালয় নিজস্ব ভবনে স্থানান্তর (পুরাতন এয়ারপোর্ট থেকে আগারগাও) করা হয়। ৪ বছর ৬ মাস ৪ দিন চেয়ারম্যানের দায়িত্বকালে তিনি ২৭,২৮,২৯,৩০,৩১ (মৌখিক পরীক্ষার পূর্বপর্যন্ত) তম বিসিএস পরীক্ষা পরিচালনা করেন, যার মধ্যে একবারও প্রশ্ন আউটের কোন অভিযোগ নেই। বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগকৃত কর্মকর্তা ও পিএসসি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে উনার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা শ্রেষ্ঠতম।
– তিনি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের একমাত্র সিএসপি চেয়ারম্যান। উনার যোগদানের মধ্যদিয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান পদটি মন্ত্রীপরিষদ সচিব পদমর্যাদার করা হয় (পূর্বে সচিব পদমর্যাদার ছিল)।
# ড. সা’দত হুসাইন : জীবনকাল
(২৪ নভেম্বর ১৯৪৬- ২২ এপ্রিল ২০২০)
– ১৯৬৯ ব্যাচের সিএসপি অফিসার, যোগদান- ১৯৭০ (উনি সিএসপি অফিসারদের মধ্যে শেষ ক্যাবিনেট সচিব)। আইসিএস ও সিএসপি অফিসারদের যোগ্যতা ও দক্ষতা অন্য যেকোন অফিসারদের তুলনায় কতটা উচ্চমানের তা বিভিন্ন ইতিহাসের বইগুলো পড়তে আমরা বুঝতে পারি।
– কর্মকালে তিনি পিএসসি এর চেয়ারম্যান (২০০৭-২০১১), মন্ত্রীপরিষদ সচিব (২০০২-২০০৫); স্বরাষ্ট্র,শিক্ষা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
– উনি অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন।
– উনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের হয়ে কাজ করেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ নিয়ে তাঁর রচিত গ্রন্থ “মুক্তিযুদ্ধের দিন-দিনান্ত”।
– উনি দীর্ঘদিন যাবৎ কিডনি, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস জনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ১৩ এপ্রিল ঢাকা ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ২২ এপ্রিল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
স্যারকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।
উনার কর্মজীবন ও সততা আমাদের জন্য অনুসরণীয়।
লিখেছেন : রবিউল আলম লুইপা, বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা)
তথ্য সহায়িকা : উইকিপিডিয়া, সেই সিভিল সার্ভিসে সেইসব সিভিলিয়ান, কিছু স্মৃতি কিছু ইতিহাস, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ইতিহাস, Aspects of public Administration in Bangladesh.