শিক্ষা বার্তা

স্কুল-কলেজে সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

স্কুল-কলেজে সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী শুক্র ও শনিবার এই ২ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারি-বেসরকারি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০২৩ সাল থেকে সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন (শুক্র-শনি) করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়সহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে বর্তমানে ২ দিন ছুটি চালু আছে।

২০২৫ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে নতুন এই কারিকুলাম সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন বা কার্যকর করা হবে বলে ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সাল থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার ২ দিন ছুটি থাকবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শনিবার ছুটি রাখা হয় না। এখন থেকে সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা মনে করি, একজন শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর সপ্তাহে ২টা দিন ছুটি পেলে অনেকটা চাপমুক্ত থাকতে পারবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের উপর থেকে চাপ কমিয়ে আনতে এবং পড়াশোনার পরিবেশ আরও আনন্দময় করে তুলতে নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম (কারিকুলাম) অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী, প্রাক-প্রাথমিকে ৫০০ ঘণ্টা, প্রথম-তৃতীয় শ্রেণিতে ৬৩০ ঘণ্টা, চতুর্থ-পঞ্চম শ্রেণিতে ৮৪০ ঘণ্টা, ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণিতে ১০৫০ ঘণ্টা, নবম-দশম শ্রেণিতে ১১১৭.৫ ঘণ্টা এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ১১৬৭.৫ ঘণ্টা শিখন সময় (বছরে) নির্ধারণ করা হয়েছে।

এই কারিকুলাম অনুযায়ী, প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হবে না। এই ৪ ক্লাসে শিক্ষার্থীদের শুধু শিখনকালীন মূল্যায়ন করা হবে। ৪র্থ থেকে ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ৪০ শতাংশ নম্বরের জন্য পরীক্ষা দেবেন, বাকি ৬০ শতাংশ নম্বর আসবে তাদের শিখনকালীন মূল্যায়নের মাধ্যমে।

৯ম-১০ম শ্রেণিতে ৫০ শতাংশ নম্বরের জন্য পরীক্ষা, বাকি ৫০ শতাংশ নম্বর শিখনকালীন এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ৭০ শতাংশ নম্বর পরীক্ষা এবং ৩০ শতাংশ নম্বর শিখনকালীন মূল্যায়নে দেয়া হবে। পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে শিখনকালীন মূল্যায়ন যোগ করে মূল ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জানায়, ২০২২ সালে নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং করার কথা। আর ২০২৩ সাল থেকে পরিমার্জিত নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের কারিকুলাম বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে। উচ্চ মাধ্যমিকের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। নতুন শিক্ষাক্রম অনুসারে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, নতুন কারিকুলাম ট্রাইআউট ২২শে ফেব্রুয়ারি ২০২২ থেকে শুরু হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মার্চ থেকে শুরু হবে।আমাদের যেগুলো জাতীয় দিবস, সেই দিনে খুলে রাখার কথা ভাবিনি। জাতীয় দিবসে অনেক সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকে। কিন্তু শ্রেণিকক্ষে পাঠদান হয় না। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারি ছুটি সপ্তাহে দুই দিন- শুক্র ও শনিবার। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি শুধু শুক্রবার। এই ছুটি বাড়াতে প্রস্তাব করেছিল জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। ২০২০ সালে এই প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তখন সাপ্তাহিক দুদিন ছুটির সিদ্ধান্ত ২০২২ সাল থেকে বাস্তবায়নের প্রস্তাব করেছিল এনসিটিবি। তবে দুই মন্ত্রণালয় চাইলে যেকোনো সময় এটি বাস্তবায়ন করা যেতে পারে বলেও সিদ্ধান্ত ছিল।

বর্তমানে বিদ্যমান সাপ্তাহিক ছুটি ও অন্যান্য ছুটি ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বছরে ক্লাস চলে ২১৫ দিন। শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি চালু হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস চলবে বছরে ১৮৫ দিন।

[ Video ]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button