উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজে বিমান বিধ্বস্ত : দুর্ঘটনার প্রকৃত বিবরণ
প্রশিক্ষণ ফ্লাইটে নিহত ১৯, আহত ১৬৪ জনের বেশি

ঢাকা, ২১ জুলাই ২০২৫: রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ চত্বরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি FT-7 BGI প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। দুর্ঘটনায় পাইলটসহ অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন ১৬৪ জনেরও বেশি। দুর্ঘটনার সময় বহু শিক্ষার্থী ক্লাস শেষে কোচিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।
দুর্ঘটনার সময় ও স্থান
- সময়: দুপুর ১টা ১৮ মিনিট (উড্ডয়ন: দুপুর ১টা ৬ মিনিট)
- স্থান: মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উত্তরা, ঢাকা
- বিমান: বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর FT-7 BGI প্রশিক্ষণ বিমান
- পাইলট: ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম সাগর (নিহত)
কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল?
উড্ডয়নের মাত্র ১২ মিনিট পরই বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ভবনে আছড়ে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে দাহ্য আগুন ধরে যায়। স্কুল প্রাঙ্গণে তখন আনুমানিক ১০০-১৫০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। দুর্ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিবরণ
- মৃত্যু: ১৯ জন (পাইলট, শিক্ষার্থী ও অন্যান্য)
- আহত: ১৬৪ জনের বেশি (অনেকেই দগ্ধ ও আশঙ্কাজনক অবস্থায়)
- চিকিৎসা: আহতদের মধ্যে ৮৪ জন এখনো হাসপাতালে ভর্তি, যাদের অধিকাংশই শিশু। তাদের জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
উদ্ধার অভিযান
- ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
- সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দেয়।
- ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন উত্তরা বিভাগের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার মহিদুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
তদন্ত ও প্রতিক্রিয়া
দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে। আইএসপিআর (আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর) নিশ্চিত করেছে পাইলট তৌকির ইসলাম সাগরের মৃত্যু।
ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া
একজন পেশাদার পাইলট হিসেবে, আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরের পরিবার, আহত ও নিহত শিক্ষার্থীদের স্বজনদের প্রতি।
আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাতেও ঢাকায় ফ্লাই করার সময় একাধিকবার ফাইটার জেট কাছাকাছি চলে এসেছিল, যা TRAFFIC ALERT সংকেতের মাধ্যমে সতর্ক করেছিল।
এমন ব্যস্ত ও ঘনবসতিপূর্ণ শহরে একটি প্রশিক্ষণ ফ্লাইট পরিচালনার প্রশ্নে যথাযথ নীতিমালা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা নতুন করে সামনে এসেছে।
কীভাবে আরও নিরাপদ করা যায় আকাশপথ?
বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ঢাকার মতো শহরে যেখানে একটি মাত্র রানওয়ে রয়েছে, সেখানে এধরনের সামরিক ফ্লাইট পরিচালনা নিয়ে ভবিষ্যতে আরও সতর্কতা এবং পরিকল্পনা দরকার। ইউরোপের বিভিন্ন ব্যস্ত শহরে (যেমন হিথ্রো, প্যারিস, ব্রাসেলস) এমন প্রশিক্ষণ ফ্লাইট মূলত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে পরিচালিত হয়।