মোবাইল সিমের ৩ দিনের ইন্টারনেট প্যাকেজ বাতিল হচ্ছে

মোবাইল সিমের ৩ দিনের ইন্টারনেট প্যাকেজ বাতিল হচ্ছে। সর্বনিম্ন মেয়াদ হবে ৭ দিন। এছাড়া আরও দুটো প্যাকেজ গ্রাহকরা কিনতে পারবেন, যেমন- ৩০ দিন ও আনলিমিটেড প্যাকেজ। এ বিষয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি একটি নির্দেশিকা জারি করতে যাচ্ছে।

১৫ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ থেকে নতুন নির্দেশনা কার্যকর হবে বলে জানা গেছে BTRC সূত্রে। এরইমধ্যে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো বিটিআরসির নতুন সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে পেরেছে।

প্রসঙ্গত, মোবাইল ইন্টারনেটে বর্তমানে ৩, ৭, ১৫, ৩০ দিন মেয়াদের ইন্টারনেট প্যাকেজ রয়েছে। রয়েছে ২ ও ৩ ঘণ্টার আনলিমিটেড ইন্টারনেট প্যাকেজও। বর্তমানে আনলিমিটেড প্যাকেজের ইন্টারনেট রয়েছে। এছাড়া কিছু দিন আগে ২৮ দিনের প্যাকেজও ছিল।

জানা গেছে, বিটিআরসি ২০২২ সালে মোবাইল অপারেটরগুলোকে ইন্টারনেট প্যাকেজের জন্য ৯৫টি প্যাকেজ অনুমোদন করেছিল। সেগুলো কমিয়ে বর্তমানে ৪০টি করা হচ্ছে। তবে যেসব গ্রাহক অপারেটরগুলোর অ্যাপ ব্যবহার করেন (মাই জিপি, মাই বিএল ও মাই রবি) তারা অ্যাপের মাধ্যমে তাদের সুবিধা মতো প্যাকেজ ব্যবহার করতে পারবেন।

তবে খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে গ্রাহকদের পছন্দ করার অপশন কমে যাবে। নিম্ন আয়ের মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের খরচ বেড়ে যাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইল ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মোবাইল অপারেটরদের ৩ দিনের নিচের মেয়াদের কোনও ইন্টারনেট প্যাকেজের অর্থ হলো প্রলোভনের মুলা ঝুলিয়ে দিয়ে অস্বাভাবিক চার্জ করা। অপারেটররা সেটাই করে। ৩ দিনের মেয়াদের প্যাকেজ বেশি দামে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করা হয়।’ মন্ত্রী অভিযোগ করেন, মোবাইল অপারেটররা ৩ দিনের মেয়াদের প্যাকেজে ডেটার ভলিউম বাড়িয়ে কম মেয়াদে বেশি দামে বিক্রি করে। এটা আর চলতে দেওয়া যাবে না।

মন্ত্রী জানান, মোবাইল ইন্টারনেটে ৩টা প্যাকেজ থাকবে। ৭ দিন, ৩০ দিন ও আনলিমিটেড। এছাড়া আর কোনও প্যাকেজ থাকবে না।

মন্ত্রী উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘আমরা একটা হিসাবে দেখেছি, ৩ দিনের যেসব প্যাকেজ ছাড়া হয়েছে, সেগুলোর পুরোটা ব্যবহারকারীরা ব্যবহার করতে পারে না। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ প্রতারিত হয়। এই সিদ্ধান্তে নিম্ন আয়ের মোবাইল ব্যবহারকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এতে ইন্টারনেটের দামও বাড়বে না।’

গ্রামীণফোনের মুখপাত্র হোসেন সাদাত গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা নিয়ন্ত্রক সংস্থার পদক্ষেপ সম্পর্কে অবগত এবং বর্তমানে এটি মূল্যায়ন করছি।’

রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মাত্র ৪০টি প্যাকেজের মাধ্যমে এই চাহিদা পূরণ করা মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্যাকেজের সংখ্যা মাত্র ৪০টিতে সীমাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত আমাদের কাছে অপ্রত্যাশিত। এই সিদ্ধান্তটি গ্রাহকদের তাদের পছন্দ অনুযায়ী প্যাকেজ নির্বাচন করার স্বাধীনতা এবং মোবাইল ফোন ব্যবহারের সামগ্রিক খরচের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘৩ দিন সময়সীমার প্যাকেজ তুলে দেওয়া হলে তা শিক্ষার্থী এবং সীমিত ডেটা ব্যবহারকারীদের ওপর প্রভাব ফেলবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলালিংকের তাইমুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের ৪৮ শতাংশের বেশি গ্রাহক ৩ দিনের ইন্টারনেট প্যাকেজ ব্যবহার করেন। ফলে তাদের ওপর চাপ পড়বে। তাদের ৭ দিনের প্যাকেজ কিনতে হবে। এতে তাদের ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ বেড়ে যাবে।’ তিনি জানান, আগস্ট মাসে পুরো ইন্ডাস্ট্রির (মোবাইল) রেভিনিউ ১০ শতাংশ কম হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে রেভিনিউ আরও কমবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ এই সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, এতে নিম্ন আয়ের মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ব্যয় বাড়বে।

Rate This Article

How would you rate this article?

Edu Daily 24
Edu Daily 24 Senior Reporter

Experienced writer with deep knowledge in their field.

Our Editorial Standards

We are committed to providing accurate, well-researched, and trustworthy content.

Fact-Checked

This article has been thoroughly fact-checked by our editorial team.

Expert Review

Reviewed by subject matter experts for accuracy and completeness.

Regularly Updated

We regularly update our content to ensure it remains current.

Unbiased Coverage

We strive to present balanced information.