নতুন শিক্ষাক্রম বাতিলের দাবিতে মানববন্ধনের ঘোষণা
নতুন শিক্ষাক্রম বাতিলের দাবিতে মানববন্ধনের ঘোষণা দিয়েছেন অভিভাবকরা। ১৩ অক্টোবর ২০২৩ (শুক্রবার) বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করবেন তারা। ‘শিক্ষা আন্দোলন সম্মিলিত অভিভাবক ফোরাম’র ব্যানারে অভিভাবকরা এ মানববন্ধনের ডাক দিয়েছেন।
১২ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে শিক্ষা আন্দোলন সম্মিলিত অভিভাবক ফোরামের আহ্বায়ক তাহেরা আক্তার রুপা এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, কয়েক সপ্তাহ ধরে তারা দাবির প্রতি সবার সমর্থন যাচাইয়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি করেছেন। অসংখ্য অভিভাবক তাদের সঙ্গে একমত হয়ে এতে সাড়া দিয়েছেন।
তাহেরা আক্তার রুপা বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষা না থাকলেও ‘শিক্ষার্থী কাজ’র চাপ অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হয়েছে। রাত ২টা-৩টা পর্যন্ত জেগে ওদের প্রোজেক্টের কাজ করতে হচ্ছে। একেকটা প্রোজেক্টের জন্য অনেক ধরনের অতিরিক্ত জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে। এতে আমাদের খরচ অনেক বেড়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, এ শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন পদ্ধতিও আজগুবি। পরীক্ষাবিহীন এমন শিক্ষাব্যবস্থায় আমাদের সন্তানদের ধ্বংস হতে দিতে পারি না। এজন্য আমরা গণস্বাক্ষর কর্মসূচি করেছি। শুক্রবার বিকেল ৩টায় প্রেস ক্লাবে মানববন্ধন করবো। সেখান থেকে আমাদের দাবি তুলে ধরবো। আশা করি শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ শিক্ষাক্রম বাতিল অথবা সংস্কার করবেন।
এদিকে, নির্দিষ্ট সাত দফা দাবি নিয়ে এগোচ্ছে সম্মিলিত অভিভাবক ফোরাম। তাদের দাবিগুলো হলো- নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল, ৫০-৬০ নম্বরের অন্তত দুটি সাময়িক লিখিত পরীক্ষা চালু রাখা, ত্রিভুজ-বৃত্ত-চতুর্ভুজসহ সব ধরনের চিহ্নভিত্তিক ফল পদ্ধতি বাতিল করে নম্বর ও গ্রেডিং ভিত্তিতে মূল্যায়ন করতে হবে।
এছাড়া শিখন ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক ক্লাসের সব খরচ স্কুলকে বহন করতে হবে এবং স্কুল পিরিয়ডেই সব প্রোজেক্টের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের দলগত কাজে মোবাইলসহ ডিভাইসমুখী হতে নিরুৎসাহিত করে অধ্যয়নমুখী করতে হবে, প্রতি বছর সব ক্লাসে রেজিস্ট্রেশন ও সার্টিফিকেট প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিল এবং সব শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের আগে অবশ্যই তা মন্ত্রিপরিষদ ও জাতীয় সংসদে উত্থাপন করতে হবে।
অন্যদিকে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ‘বিশেষ মতবিনিময় সভা’ করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বেলা ১১টায় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এ মতবিনিময় সভা শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম।
সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এতে অন্যদের মধ্যে সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, কলামিস্ট, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালকরা অংশ নেন।
তবে এ মতবিনিময় সভায় অভিভাবক ফোরামের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এ নিয়ে অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, নতুন শিক্ষাক্রমে কী কী গলদ আছে, তা শিক্ষক এবং অভিভাবকরা সবচেয়ে ভালো বুঝবেন। অথচ তাদের ছাড়াই মতবিনিমিয় সভা করা হচ্ছে। দ্রুত অভিভাবকদের নিয়েও এনসিটিবিকে মতবিনিময় সভার আয়োজন করার আহ্বান জানিয়েছেন অভিভাবকরা।