৪০তম বিসিএস রিটেনে ভালো করার শর্টকাট টেকনিক


এডু ডেইলি ২৪ প্রকাশ: ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯, ১:১৭ অপরাহ্ন / আপডেট: সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪, ১:১১ অপরাহ্ন /
৪০তম বিসিএস রিটেনে ভালো করার শর্টকাট টেকনিক

আগামী ৪ জানুয়ারী থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ৪০তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা। গত ১০ ডিসেম্বর হঠাৎ করে পিএসসি এর লিখিত পরীক্ষার নোটিশ পেয়ে নতুন পরিক্ষার্থী (বিশেষ করে যারা বর্তমানে অন্য একটি চাকুরিতে আছেন) একটু দুশ্চিন্তায় পড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। জেনে রাখুন, বিসিএস যুদ্ধের সবচেয়ে সহজ ধাপ বিসিএস লিখিত পরীক্ষা, যেখানে ৫০% নম্বর পেলেই আপনি ভাইবাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তবে, এটা ঠিক যে, এই অল্প নম্বর দিয়ে ক্যাডার পাওয়া অনেকটাই অসম্ভব। তবুও যারা একদম পড়েননি, টেনেটুনে পাশ করে বিসিএস থেকে একটা নন ক্যাডার চাকরী যদি পাওয়া যায় মন্দ কী! লিখিত পরীক্ষা প্রস্তুতির শেষ সময়ে বিসিএস লিখিত এর সিলেবাস সহজভাবে পর্যালোচনা করে জানাচ্ছেন ৩৫তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে কর্মরত রবিউল আলম লুইপা

রবিউল আলম লুইপা - বিসিএস ক্যাডার - বিসিএস প্রস্তুতি পরামর্শ
রবিউল আলম লুইপা, ৩৫তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার

বাংলা :
ইজি লেভেল- ভাবসম্প্রসারণ, সারমর্ম, অনুবাদ, কাল্পনিক সংলাপ, পত্রলিখন।
মিডিয়াম লেভেল- গ্রন্থ সমালোচনা এবং রচনা।
হার্ড লেভেল – ব্যকরণ ও সাহিত্য।
পড়ার পদ্ধতিঃ ভাবসম্প্রসারণ, সারমর্ম, অনুবাদ, কাল্পনিক সংলাপ, পত্রলিখন আমরা ছোটবেলায় যা পড়েছি সেই জ্ঞান দিয়েই লিখিত পরীক্ষায় বসুন (গাইড বই থেকে প্রতি আইটেমের একটা নমুনা একবার চোখ বুলিয়ে নিন)। গ্রন্থসমালোচনা এর জন্য নিজেই একটা ফরম্যাট রেডি করবেন এবং মুখস্ত করবেন, যাহাই আসুক মূল বক্তব্য একটু লিখে ঘুরে ফিরে সব গ্রন্থসমালোচনাতেই কমন কিছু বাক্য ব্যবহার করবেন। রচনার জন্য ১৫-২০ টা পয়েন্ট রেডি রাখুন, রচনা যেটিই আসবে যেন কাজে লাগে। ইম্পর্ট্যান্ট কয়েকটা রচনা নির্বাচন করে এর জন্য কিছু তথ্য রেডি রাখুন। তবে, রচনাতে মার্ক এর তারতম্য ঘটবে ব্যাপকভাবে। সাহিত্য প্রিলির অংশের সাথে কিছু নতুন যোগ করতে হবে। ব্যাকরণে বাক্য রূপান্তর, বাক্যের শুদ্ধরূপ, প্রবাদ, শব্দগঠন ৫টি নিয়ম, বানানের ৫টি নিয়ম এই পাচটি টপিক পড়তে বেশি সময় লাগবে না।

ইংরেজি :
ইজি লেভেল – কম্প্রিহেনশন (৩০ নম্বর), সামারি, ট্রান্সলেশন।

মিডিয়াম লেভেল- লেটার টু এডিটর এবং রচনা।
হার্ড লেভেল – গ্রামার (৩০ নম্বর)।
পড়ার পদ্ধতিঃ কমপ্রিহেনশন, সামারি, ট্রান্সলেশন ১ টা করে প্রাকটিজ করুন; লেটার টু এডিটর এর ফরম্যাট টা জাস্ট ভালো করে ফলো করুন। রচনার জন্য ১৫/২০ টা পয়েন্ট সিলেক্ট করে রাখুন, রচনা যেটিই আসবে যেন কাজে লাগে। ইম্পর্ট্যান্ট কয়েকটা রচনার জন্য কিছু তথ্য রেডি রাখুন। রচনাতে মার্ক এর তারতম্য ঘটবে ব্যাপকভাবে। গ্রামার এ সেন্টেন্স মেকিং, সেন্টেন্স জয়েনিং সবাই পারবেন আর ওয়ার্ড মিনিং, পার্টস অব স্পিচ চেঞ্জিং অনেক বেশি সময় দিয়েও লাভ নেই, যদি ভান্ডার সমৃদ্ধ না থাকে।

গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা :
ইজি লেভেল- মানসিক দক্ষতা
মিডিয়াম লেভেল- পাটিগণিত, পরিমিতি ও জ্যামিতি
হার্ড লেভেল- বীজগণিত
পড়ার পদ্ধতিঃ এই সাবজেক্টে শর্টকাট কৌশল বলা কঠিন । শুধু বলবো, মানসিক দক্ষতার কিছু টেকনিক আছে যা সর্বোচ্চ দুই ঘন্টা পড়লেই হয়, বাকীগুলো পড়লেও যা পারবেন, না পড়লেও তাই পাবেন। পরিমিতি আর জ্যামিতি হাতে যতটুকু সময় থাকে, দেখুন। আর বীজগণিতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়, তাই এই পার্টটাতে যতটুকু পারবেন না, সেক্রিফাইজ করুন। গণিতে সারাজীবন পড়লেও সাইন্স এর স্টুডেন্ট ছাড়া ২৫ নম্বর (৫০ এর মধ্যে) ক্রস করা প্রায় অসম্ভব ( এক্সেপশনাল ইজ নট এক্সামপল)। গণিতে ২৫ নম্বর ছেড়েও প্রথম চয়েসের ক্যাডার পাওয়া সম্ভব (দুর্বলরা গণিতের জন্য বরাদ্দকৃত সময় অন্য সাবজেক্টে দিলে বেশি আউটপুট পাবেন)।

সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি :
ইজি লেভেল- কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
মিডিয়াম লেভেল- সাধারণ বিজ্ঞান
হার্ড লেভেল- ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স
পড়ার পদ্ধতিঃ সৃজনশীল পদ্ধতি হওয়ায় এই সাবজেক্টে একই টপিক বারবার পড়ার চেয়ে সমস্ত টপিক একবার হলেও রিডিং পড়া উত্তম, এতে কোন টপিক প্রশ্নে আসলে, তা একদম বাদ দিতে হবে না, যতটুকু মনে আছে নিজেকে বিজ্ঞানী ভেবে লিখে ফেলুন। বায়োটেকনোলজি, ফুড নিউট্রিশন, চুম্বকত্ব, আওয়ার রিসোর্স থেকে প্রশ্ন প্রতিবছর থাকেই, অন্যগুলা অনিশ্চিত। কম্পিউটার পার্ট টা খুবই ইজি (প্রিলিতে পড়া থাকে), ইলেকট্রিক্যাল পার্টটা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র ছাড়া সেটিস্ফাইডলি আনসার করা অসম্ভব।

বাংলাদেশ বিষয়াবলি :
ইজি লেভেল- ৭, ৮ ও ১৬(সংবিধান, সরকারের বিভাগ, মুক্তিযুদ্ধ) ছাড়া বাকী ১৩ অধ্যায় (১-৬ ও ৯-১৫)
মিডিয়াম লেভেল- ৭, ৮ ও ১৬ (সংবিধান, সরকারের বিভাগ, মুক্তিযুদ্ধ)।
হার্ড লেভেল- নেই
পড়ার পদ্ধতিঃ সংবিধান, সরকারের বিভাগ, মুক্তিযুদ্ধ- এই ৩ টি অধ্যায় ভাল করে পড়ুন। অন্য ১৩ অধ্যায় হাতে থাকা সময় অনুযায়ী যতটুকু পারেন রিডিং পড়ুন। সবাই চার্ট, গ্রাফ, কোটেশন নিয়ে যত আতশবাজিই ফুটাক, আপনি কানে তালা দিন। আর যতটুকু পারেন আপনিও যোগ করুন, কম করলে আহামরি পিছিয়ে যাবেন, তা কিন্তু নয়।

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি :
ইজি লেভেল- সেকশন সি (প্রবলেম সলভিং)
মিডিয়াম লেভেল- সেকশন বি (ইম্পিরিক্যাল ইস্যু)
হার্ড লেভেল- সেকশন এ (কনসেপচ্যুয়াল ইস্যু)
পড়ার পদ্ধতিঃ সেকশন এ তে বেশি মার্ক ক্যারি করা যায়, কিন্তু সব প্রশ্ন কমন পাওয়া যায় না। তাই এই পার্টে জোর দিন বেশি বেশি, পুরো পার্ট একবার রিডিং পড়ে নিন। সেকশন বি তে জাতিসংঘ, এশিয়ার দুই দেশের সম্পর্ক, বিশ্ব দুই পরাশক্তির সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন প্রতিবার আসেই। ব্যস, বি সেকশন ফুল আনসার হয়ে গেলো। সেকশন সি তে বর্তমানে ঘটে যাওয়া একটা প্রবলেম (যেমন-রোহিঙ্গা ইস্যু) নিয়ে আলোচনা করতে বলবে। সংবাদপত্র টুকটাক পড়লে পার্ট এ এবং পার্ট বি এর জ্ঞান দিয়েই সি পার্ট উত্তর দেয়া সম্ভব।

উপরের কথাগুলো পড়ুয়া পরিক্ষার্থীদের জন্য নয়। ভাল নম্বর পেতে, পড়াশোনার বিকল্প নেই।
সকলের জন্য পাশের শুভকামনা ।

Rate this post