মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ দাবিতে শিক্ষকদের অনশন

মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ দাবিতে শিক্ষকদের অনশন শুরু হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে রাজধানী ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে টানা ২১ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন শেষে ১ আগস্ট ২০২৩ তারিখে আমরণ অনশন শুরু করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা।

মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকরা আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অভিভাবক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পেলে অনশন শুরু করবেন।

১ আগস্ট ২০২৩ তারিখ বেলা ১১টার দিকে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কিছুসংখ্যক শিক্ষক কাফনের কাপড় পরে বসে আছেন, আর অধিকাংশ শিক্ষক এদিক-ওদিক দাঁড়িয়ে আছেন; কেউ কেউ বক্তব্য দিচ্ছেন, কেউ কেউ তা মুঠোফোনে ধারণ করছেন।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ডাকে গত ১১ জুলাই অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিলেন শিক্ষকেরা। ১ আগস্ট ২০২৩ তারিখে সেটি অনশনে রূপ নিল। এর আগে ১৯ জুলাই আন্দোলন চলাকালে আন্দোলনরত শিক্ষক ও অন্য শিক্ষকসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, এ বিষয়ে (জাতীয়করণ) আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ নেই।

তবে জাতীয়করণের যৌক্তিকতা আছে কি না, সেটাসহ শিক্ষা, শিক্ষকদের সার্বিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে দুটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকেরা।

জাতীয়করণের বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর বিভিন্ন শিক্ষকসংগঠনের নেতাদের নিয়ে গাজীপুরে গত শুক্র ও শনিবার একটি কর্মশালার আয়োজন করলেও আন্দোলনকারী শিক্ষকনেতারা তাতে যোগ দেননি। আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা বলছেন, অভিভাবক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা ঘরে ও শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাবেন না।

যে কারণে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ দাবি

বাংলাদেশের ৯৭ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেসরকারি তথা এমপিওভুক্ত। একই যোগ্যতা ও অভিন্ন সিলেবাস হওয়া সত্ত্বেও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা আজ বিরাট বৈষম্যের শিকার; যার বাস্তব উদাহরণ হলো, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া মাত্র এক হাজার টাকা ও চিকিৎসা ভাতা মাত্র ৫০০ টাকা। এটি বর্তমান যুগ অনুযায়ী একেবারেই বেমানান।

যদিও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী সরকারি স্কেলে বেতন পান। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে সব ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা সরকারি। ১৯৭৩ সালের ১ জুলাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করেন। কয়েক দশক পর দেশের সব বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় কয়েকটি ধাপে জাতীয়করণ হয়। এর ফলে প্রাথমিক শিক্ষায় অনেক পরিবর্তন এসেছে।

এখন সময় হয়েছে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের। অনেকের মতে, মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ হলে শিক্ষার মান কমে যাবে। ধারণাটি একেবারেই ঠিক নয়। প্রাথমিক শিক্ষা ঢালাওভাবে জাতীয়করণের ফলে প্রাথমিক শিক্ষার মান কমেনি; বরং বেড়েছে। মাধ্যমিক স্তর জাতীয়করণ হলে শিক্ষাব্যবস্থায় আর কোনো বৈষম্য থাকবে না। এর ফলে শিক্ষকদের প্রাইভেট ও কোচিং বাণিজ্য অনেকাংশে হ্রাস পাবে। অতএব, বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকারের কাছে প্রত্যাশা, মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

Rate This Article

How would you rate this article?

Edu Daily 24
Edu Daily 24 Senior Reporter

Experienced writer with deep knowledge in their field.

Our Editorial Standards

We are committed to providing accurate, well-researched, and trustworthy content.

Fact-Checked

This article has been thoroughly fact-checked by our editorial team.

Expert Review

Reviewed by subject matter experts for accuracy and completeness.

Regularly Updated

We regularly update our content to ensure it remains current.

Unbiased Coverage

We strive to present balanced information.