সরকারি চাকরিতে টেকার সহজ উপায়!

অনেককেই দেখেছি অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে চাকরি পাওয়া-না পাওয়া নিয়ে দু:চিন্তায় ভুগছেন। আবার অনেকে আছে এখনো অনার্সে পড়ছেন কিন্তু ভবিষ্যতে আদৌ কি কোনো চাকরি বাকরি হবে কি না এই নিয়ে টেনশনে পড়া হচ্ছে না। আবার অনেকে হাল ছেড়ে দিয়েছেন। আমি বলবো, এই দু:শ্চিন্তা খারাপ দিক নয় বরং ভালো দিক আপনার জন্য যদি আপনি তা পড়াশোনায় প্রয়োগ করতে পারেন মানে সেই জন্য বেশি বেশি পড়তে পারেন।

আমি বলি আপনি যদি একবার ভালো করে চাকরির প্রস্তুতি গ্রহণ করেন বিশেষ করে BCS-এর প্রস্তুতি, তাহলে তা আপনার জন্য এটা অনেক বড় কাজে দিবে। আমি গাজী মিজানুর রহমান, আমি আমার বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমি অনার্স শেষ করার পর মাস্টার্সে পড়া অবস্থায় লাইফের প্রথম চাকরির ইন্টারভিউ দিলাম My One Electronics-এ Assistant Regional Manager হিসেবে। পোস্টিং দিল গাজীপুর জেলায়। কিন্তু আমার এলাকার বড় ভার্সিটির ভাই যারা আমাকে ভালোভাবে চিনে, জানে তারা বলল, তোমার এখন প্রাইভেট চাকরিতে ঢোকা ঠিক হবে না তাহলে তোমার যে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন তা আর পূরণ হবে না। ওখানে গেলে আর পড়াশোনাই করতে পারবে না।

প্রথম প্রথম কেমন জানি লাগল, লাইফের প্রথম চাকরির ইন্টার্ভিউ, আর সেই ফার্স্ট ইন্টার্ভিউতে টিকলাম আর চাকরিটা করবো না!
পরে দেখলাম, চাকরিতে জয়েন না করাটা আমার জন্য ভালোই হলো। আমার লাইফের প্রথম বিসিএস, ৩৪তম বিসিএস সেখানে প্রিলি, রিটেন, ভাইভা পাশ করার পরও কোনো ক্যাডার পেলাম না। পেলাম PSC-এর সেকেন্ড ক্লাস নন-ক্যাডার জব। যোগদান করলাম না; এর মাঝে পূবালী ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার হিসেবে চাকরি হয়ে গেল। ব্যাংকে চাকরি অবস্থায় সারাদিন অফিস করে পড়তে ইচ্ছে করত না। তবে মাঝে মধ্যে আগের নোট করা পড়াগুলো দেখতাম। ৩৫তম বিসিএসে ক্যাডার হলাম। শিক্ষা ক্যাডার হিসেবে ব্যাংক জব ছেড়ে বিসিএসে যোগদান করলাম। পরবর্তীতে ৩৬তম বিসিএস, ৩৭তম দিলাম, টিকলাম কিন্তু কোনো ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়নি । সর্বশেষ ৪০তম বিসিএস প্রিলি দিলাম সেটাও টিকলাম। এই নিয়ে মোট ৬বার বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলাম, আল্লাহর রহমতে ৬বারই টিকলাম, একবারও ফেল করিনি।

তাই বলি, একবার একটি পরীক্ষার মাধ্যমে কপাল খুলে গেলে দেখবেন; বারবার জব পাচ্ছেন। কিন্তু প্রথমবার একটু বেশি কষ্ট করতে হয়। হতাশ হবেন না, ভালো করে পড়াশোনা করুন। ভালো কিছু হবেই। পড়াশোনার ক্ষেত্রে অধিক মনোযোগী হতে হবে, হতাশ হওয়া যাবে না। আর পড়াশোনার ক্ষেত্রে টেকনিক তথা কৌশল অবলম্বন করা খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নিয়মিত পরিকল্পনা মাফিক পড়লে ইনশাল্লাহ সফলতা আসবেই। তাই বলি, উল্টাপাল্টা বেশি জিনিস না পড়ে কেবল গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো বারবার পড়ুন।

Gazi-mizanur-rahman-35th-bcs-cadre-education
গাজী মিজানুর রহমান – ৩৫তম বিসিএস ক্যাডার

মনে রাখবেন, চাকরি প্রস্তুতির ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস, টেকনিক, পরিকল্পনা ও পরিশ্রমের সাথে স্বপ্ন অনেক বড় একটা বিষয়। আচ্ছা, আমি পারলে আপনি পারবেন না কেন? আমিও তো আপনার মতো একজন মানুষ। চেষ্টা করুন, পরিশ্রম করুন। পরিশ্রম করলে আল্লাহ পাশে থাকে। আল্লাহ পরিশ্রমী ব্যক্তিদের অধিক ভালোবাসেন, পছন্দ করেন।

© গাজী মিজানুর রহমান

  • ৩৫তম বিসিএস ক্যাডার
  • সাবেক সিনিয়র অফিসার
    (পূবালী ব্যাংক লিমিটেড)
  • প্রতিষ্ঠাতা : BCS টেকনিক
    (বিসিএস স্পেশাল প্রাইভেট প্রোগ্রাম)
    © লেখক: BCS Preliminary Analysis
    (বাংলাদেশে প্রথম বিসিএস প্রিলির সাজেশনভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ বই)
    © লেখক: প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ Analysis
    (বাংলাদেশের প্রথম সাজেশনভিত্তিক প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ বই)