বাংলাদেশ সরকার আগামী ৫ বছরে জাপানে এক লাখ কর্মী পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম (টিআইটিপি) এবং স্পেসিফাইড স্কিলড ওয়ার্কার (এসএসডব্লিউ) – এই দুই ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশি কর্মীরা জাপানে কাজের সুযোগ পাবেন। জাপানি ভাষা ও দক্ষতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই নামমাত্র খরচে জাপানে যাওয়া সম্ভব হবে।
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরের সময় তিনটি জাপানি কোম্পানির সঙ্গে দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। এই সমঝোতার আওতায় জাপানি ভাষা ও দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
Table of Contents
পাঁচ বছরে ধাপে ধাপে কর্মী পাঠানোর পরিকল্পনা
২০২৬ সালে ২ হাজার, ২০২৭ সালে ৬ হাজার, ২০২৮ সালে ১২ হাজার, ২০২৯ সালে ৩০ হাজার এবং ২০৩০ সালে ৫০ হাজার কর্মী পাঠানো হবে জাপানে। মোট পাঁচটি খাতে এই কর্মীরা যাবে—
-
নির্মাণ খাতে ৪০ হাজার
-
শিল্প-কলকারখানায় ২০ হাজার
-
কেয়ারগিভার (বয়স্কদের সেবা) ভিসায় ২০ হাজার
-
গাড়ি সার্ভিসিং ও কৃষিখাতে ২০ হাজার
ভাষা শেখা ও দক্ষতা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক
নরসিংদীর মনোহরদী টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে (টিটিসি) জাপানি প্রশিক্ষকরা ভাষা ও দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ দেবেন। অক্টোবর থেকে প্রশিক্ষণ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মাত্র এক হাজার টাকা ফিতে জাপানি ভাষা কোর্সে ভর্তি হওয়া যাবে।
জাপান যেতে হলে ভাষা শেখার পর টিআইটিপি অথবা এসএসডব্লিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
-
এসএসডব্লিউ ভিসা: বয়স ১৭-১৮ বছরের বেশি হতে হবে, জাপানি এন-৪ লেভেল পরীক্ষায় ও দক্ষতা পরীক্ষায় পাস করতে হবে।
-
টিআইটিপি ভিসা: বয়স ১৮ বছর বা বেশি, এন-৫ লেভেল ভাষা কোর্স সম্পন্ন করতে হবে।
বর্তমানে কৃষি, শিল্প-কলকারখানা, কেয়ারগিভিং ও ড্রাইভিং খাতে দক্ষতা পরীক্ষা দেওয়া যায়। সবচেয়ে বেশি চাহিদা কেয়ারগিভিং ও কৃষিক্ষেত্রে।
খরচ ও আয়
সরকারিভাবে জাপান যেতে আনুমানিক খরচ ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভাষা ও দক্ষতা প্রশিক্ষণসহ সব মিলিয়ে প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হতে পারে।
-
টিআইটিপির মাধ্যমে মাসিক আয়: ১.২০–১.৮০ লাখ টাকা (বাংলাদেশি মুদ্রায়)
-
এসএসডব্লিউর মাধ্যমে মাসিক আয়: ২–২.৮০ লাখ টাকা
দীর্ঘমেয়াদি সুযোগ
দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জাপানে স্থায়ীভাবে বসবাস বা পিআর পাওয়ার সুযোগও রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৯৪টি অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে জাপানে কর্মী পাঠানো হচ্ছে।