ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি সহ টানা ৩ দিন সরকারি ছুটি

ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি সহ টানা ৩ দিন সরকারি ছুটি চলতি মাসে। ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ (বৃহস্পতিবার) তারিখে। এর পর ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার টানা ৩ দিনের সরকারি ছুটি পাচ্ছেন চাকরিজীবি ও শিক্ষার্থীরা।

ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি

১৭ সেপ্টেম্বর (রবিবার) থেকে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাস গণনা শুরু হবে। সে হিসেবে ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) (Eid e milad un nabi) পালিত হবে বলে জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার।

সভায় ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সকল জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়সমূহ, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান হতে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়নি। ফলে আগামীকাল শনিবার পবিত্র সফর মাস ৩০ দিন পূর্ণ হবে এবং রবিবার থেকে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাস গণনা শুরু হবে। সে হিসেবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হবে।

প্রসঙ্গত, প্রায় ১৪০০ বছর আগে ১২ রবিউল আউয়াল বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (স) জন্মগ্রহণ করেন। আবার ৬৩ বছর বয়সে একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন।

মিলাদুন্নবী অর্থ কি

মিলাদ (ميلاد) শব্দটি ولادة او ولد থেকে এসেছে। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম-এর জন্মকাল বা জন্মবৎসরকে মিলাদ বা মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলা হয়। মিলাদুন্নবী অর্থ নবী (সাঃ) এর জন্ম বা আগমন।

ঈদে মিলাদুন্নবী বা সীরাতুন্নবী (সা.) কি ও এর তাৎপর্য

এই দিনটি সীরাতুন্নবী (সা.) হিসেবেই পালিত হয় অধিকাংশ মুসলিম দেশে। “সীরাতুন্নবী” আরবী শব্দ, যা “সীরাত” ও “আন-নবী” দু’টি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। সীরাত অর্থ জীবনী, চরিত, চরিত্র, অভ্যাস। আর নবী অর্থ যে কোনো নবী হলেও এখানে শব্দের শুরুতে “আন” থাকায় এর অর্থ হবে, নির্দিষ্টভাবে আমাদের নবী। সুতরাং উভয়ের সমষ্টিতে অর্থ হলো, আমাদের নবী মুহাম্মাদ সা. এর জীবনী বা চরিত।

এর পাশাপাশি আমাদের সমাজে প্রচলিত আরেকটি শব্দ হলো, “মীলাদুন্নবী”। এটা “মীলাদ” ও “আন-নবী” শব্দদ্বয়ের সমন্বয়ে গঠিত। মীলাদ অর্থ জন্ম এবং আন-নবী অর্থ আমাদের নবীমুহাম্মদ সা.। সুতরাং মীলাদুন্নবী অর্থ নবী সা. এর জন্ম।

সীরাতুন্নবী আর মীলাদুন্নবীর মাঝে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। এ পার্থক্য না জানার কারণেই অনেকে এ দু’টিকে এক মনে করে। আবার অনেকে সীরাতুন্নবীর বিপরীত মীলাদুন্নবীকেই মূল ভেবে থাকে। মূলতঃ মীলাদুন্নবী হলো সীরাতুন্নবীর একটি অংশ মাত্র। কারণ, মীলাদুন্নবী বলতে নবী সা. এর শুধু জন্মবৃত্তান্তকেই বুঝিয়ে থাকে। এর বিপরীত সীরাতুন্নবী বলতে নবী সা. এর সমগ্র জীবনী তথা জন্ম, নবুওয়াত, হিজরত ও মৃত্যুকে বুঝায়। তাই সীরাতুন্নবীতে পুর্ণাঙ্গ মীলাদুন্নবী আছে, কিন্তু মীলাদুন্নবীতে পূর্ণাঙ্গ সীরাতুন্নবী নেই।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, নবী সা. এর জন্ম আমাদের জন্য; বরং সমগ্র মানবজাতির জন্যই এক মহাসৌভাগ্য ও আনন্দের বিষয়। কিন্তু এ জন্মকে কেন্দ্র করে আনন্দ উদযাপন করা, প্রতিবছর এ উপলক্ষে বিশাল শোভাযাত্রা ও মিষ্টি বিতরণ করা; পাশাপাশি এটাকে সকল ঈদের শ্রেষ্ঠ ঈদ নামকরণ করে দিবস পালন করা কতোটুকু যৌক্তিক? আদৌ কি এটা ইসলাম সমর্থন করে? এর উত্তর জানতে হলে আমাদের কয়েকটি মূলনীতি জানতে হবে।

১. ইসলাম ঐশীভিত্তিক এক জীবনব্যবস্থার নাম। তাই এতে কোনো একটি বিষয় অনুমোদিত হওয়া না হওয়া নির্ভর করে কুরআন এবং সুন্নাহয় এর অনুমোদন আছে কিনা- এটার উপর। অনুমোদন থাকলে সেটা দীন, অন্যথায় তা হবে দীনের নামে দীনের মধ্যে নতুন সংযোজন, যা সম্পূর্ণরূপে পরিত্যজ্য। যেমন সহীহ বুখারীর বর্ণনায় এসেছে, নবী করীম সা. ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আমাদের এ দীনে নতুন কোনো বিষয় সংযোজন করবে তাহলে তা প্রত্যাখ্যাত বলে বিবেচিত হবে। (সহীহ বুখারী : হা. নং ২৬৯৭)- বাস্তবতা হলো, সমগ্র কুরআন ও সুন্নাহয় মৌখিক বা কর্মবিষয়ক এমন একটি প্রমাণও পাওয়া যায় না, যদ্বারা মীলাদুন্নবীর প্রামাণ্যতা সাব্যস্ত হয়। নবী সা. এর জীবনে তেইশটি জন্মদিন গত হয়েছে, কিন্তু সহীহ তো দূরে থাক কোনো দুর্বল বর্ণনায়ও আসেনি যে, তিনি তাঁর জন্মদিন প্রচলিত পদ্ধতিতে পালন করেছেন। তাই হাদীসের পরিভাষায় এটা দীনের মধ্যে নতুন এক সংযোজন ও বিতআত, যা সম্পূর্ণরূপে পরিহারযোগ্য।

২. যে কোনো আমলের পদ্ধতিগত বিষয়ে সাহাবীদের কর্মপন্থাই চুড়ান্ত ও সঠিক বলে বিবেচিত। কারণ, সাহাবায়ে কিরাম রা. হলেন এ উম্মাতের সবচে নিষ্ঠাবান ও বিশ্বস্ত জামাত, যাঁরা রাসূল সা.-কে কাছ থেকে স্বচক্ষে অবলোকন করেছেন এবং তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপ ও নির্দেশনা পূর্ণ একনিষ্ঠতার সহিত অনুসরণ করেছেন। তাঁদের উপেক্ষা করে কখনো সত্যেও কাছে পৌঁছানো যাবে না। যেমন হাদীসে এসেছে, নবী করীম সা. ইরশাদ করেছেন, তোমরা আমার এবং আমার খুলাফায়ে রাশেদীনকে অনুসরণ করো। (শরহু মুশকিলিল আসার : হা. নং ১১৮৬)- ইতিহাস খুঁজলে দেখা যায়, নবী সা. এর প্রিয় সাহাবায়ে কিরাম রা., যারা তাঁর একটি ইশারায় জান পর্যন্ত কুরবানী করতে কুন্ঠিত হতেন না তাঁরা কোনোদিনও মীলাদুন্নবীর নামে কোনো উৎসব পালন করেননি। অথচ তাঁরা ছোট থেকে ছোট, সামান্য থেকে সামান্য কোনো একটি আমলও সুন্নাত বা মুস্তাহাব বলে সাব্যস্ত হলে তা পালন না করে ছাড়েননি। তাঁদের নবীপ্রেম ছিলো জগদ্বিখ্যাত, যা ইতিহাসের পাতায় ভরপুর। সুতরাং মীলাদুন্নবী পালন যদি সুন্নাত বা নূন্যতম মুস্তাহাবও হতো তাহলে তাঁদের চেয়ে অধিক মীলাদুন্নবী পালনকারী দুনিয়ার বুকে আর কেউ হতে পারতো না।

৩. ইসলামে কোনো বিষয়ে সংখ্যাগত বা পদ্ধতিগতভাবে কোনোকিছু সুনির্ধারিত থাকলে তাতে কিয়াস তথা অনুমান করে কোনোকিছু বাড়ানো বা কমানো সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। আমাদের দেশে মীলাদুন্নবীকে ঈদ বলে ঘোষণা করা হয়; বরং এটাকে সকল ঈদের শ্রেষ্ঠ ঈদ বলে বিবেচনা করা হয়। অথচ নবী সা. তাঁর উম্মতের জন্য শুধুমাত্র দু’টি ঈদ নির্ধারণ কওে দিয়েছেন। যেমন আবু দাঊদ শরীফে বর্ণিত হয়েছে, নবী সা. মদীনায় এসে দেখতে পেলেন যে, উৎসবের জন্য তাদের দু’টি নির্দিষ্ট দিন আছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এ দু’টি কী দিবস? তারা উত্তরে বললো, জাহিলিয়্যাতের যুগে পালিত বিশেষ দু’টি দিবস। তখন তিনি বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য এর চেয়ে উত্তম দু’টি দিন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা দ্বারা এর বিকল্প নির্ধারণ করেছেন। (আবু দাঊদ: হা. নং ১১৩৪)- তাহলে যেখানে নবী করীম সা. উম্মতের জন্য দু’টি ঈদ নির্ধারণ করেছেন সেখানে মীলাদুন্নবীর নামে তৃতীয় একটি ঈদ তৈরি করা কতোবড় ধৃষ্টতার শামিল!

৪. আল্লাহ তাআলা তাঁর নবী সা. এর মাধ্যমে তাঁর দীনকে যথাযথভাবে পূর্ণ করে দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, আজ আমি তোমাদের দীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের উপর আমার নেয়ামত সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের জন্য ইসলামকে দীন হিসেবে মনোনিত করলাম। (মায়েদা: ৩)- এমতাবস্থায় মীলাদুন্নবী যদি ফরয বা ওয়াজিব বা সুন্নাত বা নূন্যতম মুস্তাহাবও হতো তাহলে প্রকারান্তরে একথাই বলা হয় যে, আল্লাহ তাআলা কুরআনে মিথ্যা বলেছেন বা তাঁর নবী সা. যথাযথভাবে তাঁর দায়িত্ব পালন করেননি। নাঊযুবিল্লাহ!

আসলেই কি মীলাদুন্নবী পালনীয় কোনো বিষয়? আদৌ কি এতে নবী সা. এর প্রেম- ভালোবাসা প্রকাশ পায়? বিবেকবান ব্যক্তি মাত্রই অনুধাবন করবে যে, মীলাদুন্নবী মূলতঃ কোনো পালনীয় বিষয় নয়। কেননা, মীলাদুন্নবী বলতে নবী করীম সা. এর জন্মকালীন ঘটনাবলীকেই বুঝানো হয়ে থাকে। এখন কারো পক্ষে কি এটা সম্ভব যে, নবী করীম সা. এর জন্মকালীন সেসব ঘটনাবলীর পুনরাবৃত্তি ঘটবে? অন্য কারো বেলায় কি তাঁর জন্মের সময়ের মতো আলৌকিক বিষয়গুলো প্রকাশ পাবে? উত্তরে যদি না বলা হয় তাহলে আমাদের পক্ষে মীলাদুন্নবী পালন করা কিভাবে সম্ভব? মূলতঃ মীলাদুন্নবী পালন করার কোনো বিষয় নয়; বরং তা হলো আলোচনার বিষয়।

এখন আমরা এটা বুঝার চেষ্টা করি যে, মীলাদুন্নবী পালন না করে আমরা কেনো সীরাতুন্নবী পালন করাবো? প্রথমত: সীরাতুন্নবীর মধ্যে মীলাদুন্নবীও এসে যায়, কিন্তু মীলাদুন্নবীর মধ্যে পূর্ণ সীরাতুন্নবী আসে না। যেহেতু মীলাদুন্নবী শুধু নবী সা. এর জন্মকালীন ঘটনাবলীকেই বলে আর সীরাতুন্নবী বলতে তাঁর জন্ম, নবুওয়াত, হিজরত ও মৃত্যু তথা তাঁর সমগ্র জীবনীকে বলে।

দ্বিতীয়ত : মীলাদুন্নবী থেকে মুসলিম উম্মাহর কিছু গ্রহণ করার নেই, এটা শুধুই আলোচনার বিষয়। যেহেতু তা সম্পূর্ণটাই ছিলো কুদরতী, যার সাথে উম্মতের আমল তথা নাজাত পাওয়া না পাওয়ার কোনো সর্ম্পক নেই। পক্ষান্তরে সীরাতুন্নবী হলো মুসলিম উম্মাহর জন্য এক অনুকরণীয় আদর্শ, যা উম্মত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুসরণ করতে পারে। যেমন পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, অবশ্যই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মাঝে রয়েছে উত্তম আদর্শ। (আহযাব: ২১) তাই উম্মাহর সামগ্রিক জীবনে মীলাদুন্নবী নয়; বরং সীরাতুন্নবীর প্রয়োজন।

তৃতীয়ত : মীলাদুন্নবী পালনকারীদের দেখা যায়, তারা বছরের নির্দিষ্ট একটি দিনে খুব জাকজমকের সহিত শোভাযাত্রা বের করে, মিষ্টি বিতরণ করে, একস্থানে বসে কিছুক্ষণ নবী করীম সা. এর জন্মকালীন কিছু ঘটনা আলোচনা করে এবং যারা মীলাদুন্নবী পালন করে না তাদেরকে রিসালাতবিরোধী, সুন্নাহবিরোধী ও নবীর দুশমন বলে অভিহিত করে থাকে। অথচ সারাবছর তাদের জীবনে নবী সা. এর সুন্নাত পালনের কোনো গুরত্ব থাকে না। এমনকি যারা নবীর আশেক ও প্রেমিক বলে দাবি করে তাদের অনেকের দাঁড়ি পর্যন্ত থাকে না। এটাই কি নবীপ্রেমের নিদর্শন? মূলতঃ প্রেমিকের সকল আদর্শ ও পছন্দ অপছন্দ জেনে নিজেকে সে অনুযায়ী গড়ে তোলাকেই আসল প্রেম বলা হয়। বাস্তবজীবনে নববী আদশের্র প্রতিফলন না ঘটিয়ে শুধু মৌখিক প্রেমের দাবি করা কপটতা ও ধোকাবাজি বৈ কিছু নয়।

চতুর্থত : মীলাদুন্নবীর জন্য ১২ই রবিউল আওয়াল যে দিন নির্ধারণ করা হয়েছে সেটা আদৌ নবী সা. এর জন্মদিন কিনা- তাতে যথেষ্ঠ সন্দেহের অবকাশ আছে, ইতিহাস পাঠকদের কাছে যা অজানা নয়। কিন্তু সেটা যে নবী সা. এর মৃত্যুদিবস তাতে কারো কোনো মতানৈক্য বা সন্দেহ নেই। এখন এটা কেমন বিবেকের কথা যে, মহান কোনো ব্যক্তির নিশ্চিত মুত্যুদিবসকে জন্মদিন হওয়ার সম্ভাবনার ভিত্তিতে তাতে আনন্দ উদযাপন করা! একইদিনে কারো জন্ম এবং মৃত্যুদিবস নিশ্চিত হলেও তো কোনো বিবেকবান লোক সেদিনে আনন্দ উৎসব করতে পারে না। তাহলে ১২ই রবিউল আওয়ালে নবী সা. এর জন্ম উপলক্ষে যে আনন্দ উৎসব করা হয় তা কতোটা অযৌক্তিক হতে পারে- পাঠকগণ চিন্তা করে দেখুন।

পঞ্চমত : মীলাদুন্নবীর জন্য ১২ই রবিউল আওয়াল যে দিন নির্ধারণ করা হয়েছে সেটা আদৌ নবী সা. এর জন্মদিন কিনা- তাতে যথেষ্ঠ সন্দেহের অবকাশ আছে, ইতিহাস পাঠকদের কাছে যা অজানা নয়। কিন্তু সেটা যে নবী সা. এর মৃত্যুদিবস তাতে কারো কোনো মতানৈক্য বা সন্দেহ নেই। এখন এটা কেমন বিবেকের কথা যে, মহান কোনো ব্যক্তির নিশ্চিত মুত্যুদিবসকে জন্মদিন হওয়ার সম্ভাবনার ভিত্তিতে তাতে আনন্দ উদযাপন করা! একইদিনে কারো জন্ম এবং মৃত্যুদিবস নিশ্চিত হলেও তো কোনো বিবেকবান লোক সেদিনে আনন্দ উৎসব করতে পারে না। তাহলে ১২ই রবিউল আওয়ালে নবী সা. এর জন্ম উপলক্ষে যে আনন্দ উৎসব করা হয় তা কতোটা অযৌক্তিক হতে পারে- পাঠকগণ চিন্তা করে দেখুন।

ষষ্ঠত : নবীপ্রেম বুঝতে হলে আমাদের দেখতে হবে সাহাবীদের নবীপ্রেমের স্বরূপ। কারণ, পৃথিবীতে সুস্থ বিবেকসম্পন্ন কারো পক্ষে এ দুঃসাহস দেখানো সম্ভব নয় যে, সাহাবায়ে কেরামের চেয়ে কেউ অধিক নবীপ্রেমিক হতে পারে। সুতরাং মীলাদুন্নবী পালন করাই যদি নবীপ্রেমের নিদর্শন হতো তাহলে সাহাবায়ে কেরামের চেয়ে অধিক মীলাদ পালনকারী আর কেউ হতে পারতো না। অথচ ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, প্রচলিত এ মীলাদুন্নবীর প্রবর্তন ঘটেছে নবী সা. এর তিরোধানের ছয়শ বছর পরে। তাই এটাকে কখনো নবীপ্রেমের মাপকাঠি বানানোর সুযোগ নেই।

আরো পড়ুন : ঈদে মিলাদুন্নবী কি বিদআত?