অনুদানের টাকা পেয়েছে ১০২৮৬ শিক্ষক-শিক্ষার্থী

কোরবানির ঈদের আগে সারা দেশে এ পর্যন্ত অনুদানের টাকা পেয়েছে ১০২৮৬ শিক্ষক-শিক্ষার্থী। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের মাধ্যমে ২৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এসব শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের হাতে অনুদানের ১২ কোটি টাকা পৌঁছে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

২৫ জুন ২০২৩ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়। এতে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বিশেষ অনুদান খাতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রায় ১২ কোটি টাকা দিয়েছে সরকার। ৯ হাজার ৮৪৬ জন শিক্ষার্থী, ৪০০ জন শিক্ষক এবং ২৪০টি স্কুল-কলেজ এ টাকা পাবে।  একইসঙ্গে বিশেষ অনুদানের জন্য নির্বাচিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, মোট ৯ হাজার ৮৪৬ জন শিক্ষার্থীকে এ অনুদানের টাকা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণির ৩ হাজার ৬৭৫ জন শিক্ষার্থীর প্রত্যেকে ৮ হাজার করে মোট ২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।

৯ম ও ১০ম শ্রেণির ২ হাজার ৬২৫ জন শিক্ষার্থী প্রত্যেকে ৮ হাজার করে মোট ২ কোটি ১০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।

একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ১ হাজার ৮৬৬ জন শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকে ৮ হাজার করে মোট ১ কোটি ৬৭ লাখ ৯৪ হাজার টাকা এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ১ হাজার ৬৮০ জন শিক্ষার্থীদের প্রত্যেককে ১০ হাজার করে মোট ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া ২৪০টি স্কুল-কলেজের প্রত্যেকটিকে ১ লাখ করে ২ কোট ৪০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে এ খাত থেকে। আর ৪০০ জন শিক্ষকের প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে মোট ১ কোটি ২০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে বিশেষ অনুদান বাবদ।

বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ব্যাংকিং সিস্টেম নগদের মাধ্যমে এ টাকা পাঠানো হচ্ছে। ঈদের আগে এই টাকা তারা পাবেন বলে আদেশে বলা হয়েছে।

অনুদানের টাকা কাদের জন্য

অনুদানের এ টাকা কারা পাবেন তার একটি নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি মার্চ মাস পর্যন্ত আবেদন নেওয়া হয়। আবেদন পাওয়ার পর তা যাচাই-বাচাই করে এ অনুদানের টাকা ছাড় করা হয়েছে।

নীতিমালায় থেকে জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রী এ তিন ক্যাটাগরিতে অনুদান দেওয়া হয়। সরকারি এবং বেসরকারি এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা, দৈব–দুর্ঘটনা এবং চিকিৎসার খরচের জন্য বিশেষ মঞ্জুরির অনুদান প্রাপ্তির আবেদন করতে পারেন।

এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, অসহায়, অসচ্ছল ও মেধাবী, অনগ্রসর সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পেয়েছে। এছাড়া দেশের সব স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বা এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেরামত ও সংস্কার, আসবাব তৈরি, খেলাধুলার সরঞ্জাম ক্রয়, পাঠাগার উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীবান্ধব করতে বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের আবেদন করে। তবে বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনগ্রসর এলাকার অসচ্ছল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অগ্রাধিকার পায়। আর বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা দুরারোগ্য ব্যাধি বা দৈব–দুর্ঘটনার জন্য মঞ্জুরির আবেদন করতে পারেন।

এছাড়া দেশের সব স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বা এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেরামত ও সংস্কার, আসবাবপত্র তৈরি, খেলাধুলার সরঞ্জাম ক্রয়, পাঠাগার উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীবান্ধব করার জন্য বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের আবেদন করতে পারে। তবে বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনগ্রসর এলাকার অস্বচ্ছল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অগ্রাধিকার পাবে।

অনুদানের টাকা পেতে আবেদন যেভাবে

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের এ অনুদান পেতে অনলাইনে (https://eksheba.gov.bd অথবা https://www.mygov.bd) আবেদন করতে হয়। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানের আর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিভাগীয় প্রধানের প্রত্যয়ন পত্র আবেদনে সংযুক্ত করতে হবে। শিক্ষক-কর্মচারী ক্যাটাগরিতে আবেদনের ক্ষেত্রে ডাক্তারি সনদ ও দৈব দুর্ঘটনার স্বপক্ষের প্রমাণ সংযুক্ত করে আবেদন করতে হবে। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য অনুদানের আবেদনের ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটির প্রত্যয়ন সংযুক্ত করতে হবে। শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অনুদান বাবদ বরাদ্দের টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বরাদ্দের টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।