আব্দুন নুর নাহিদ: ৪৪তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে চুড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এখনো গেজেট প্রকাশ না হওয়ায় সুপারিশপ্রাপ্ত ক্যাডারগণ দ্রুত গেজেট প্রকাশের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি) ভবনের সামনে তিন দফা দাবিতে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
৪৪ বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম ফরহাদ হোসেন বলেন, ফলাফল প্রকাশের পর চার মাস অতিবাহিত হয়েছে। প্রশাসনিক জটিলতায় ১৬৯০ প্রার্থী মানসিক চাপে দিন পার করছেন। তাদের মানবিক দিক বিবেচনা করে সরকারকে দ্রুত গেজেট প্রকাশের জন্য দাবি জানান।
চাকরি প্রার্থীরা বলেন, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ইতোমধ্যে তিন বছর সাত মাস পার হয়েছে। কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না দ্রুত গেজেট প্রকাশের দাবি জানাই আর মানসিক চাপ আর নিতে পারছি না।
মানববন্ধন থেকে তাঁরা তিনটি দাবি জানিয়েছেন
প্রথম দাবি, গেজেট কার্যক্রম শুরু করার লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে পি.এস.সি কর্তৃক ৪৪ তম বিসিএস-এ সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের ফাইল বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা।
দ্বিতীয় দাবি, ৪৪ তম বিসিএস-এর ফলাফল প্রকাশের পর প্রায় ৪ মাস অতিক্রান্ত হলেও পি.এস.সি কেন সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ না করে আটকে রেখেছে তার যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা প্রদান করা।
তৃতীয় দাবি, ৪৪ তম বিসিএস এর নিয়োগ কার্যক্রম ও চলমান বিসিএস-এর নিয়োগ কার্যক্রমের সাথে ভবিষ্যৎ জটিলতা নিরসনকল্পে চলতি বছরেই ৪৪ তম বিসিএস নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা।
উল্লেখ্য বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল গত ৩০ জুন প্রকাশ করেছিল। ১ হাজার ৭১০টি শূন্য পদের বিপরীতে সুপারিশ করা হয় ১ হাজার ৬৯০ জনকে। তবে তাঁদের মধ্যে ৩৭২ জন আগেই একই বা সমতুল্য ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন (রিপিট ক্যাডার)। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ, সমালোচনা ও বিতর্কের পর পিএসসি বিধি সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়, যাতে রিপিট ক্যাডারের জায়গায় মেধাক্রম অনুযায়ী পরবর্তী প্রার্থীদের সুপারিশ করা যায়।
কিন্তু বিধি সংশোধনের প্রশাসনিক জটিলতায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি হয়নি। ফলে রিপিট ক্যাডার–সম্পর্কিত নয়, এমন ১ হাজার ৩১৮ জন প্রার্থীর নিয়োগও শুরু হয়নি। সাধারণত ফলাফল প্রকাশের পরপরই ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ভেরিফিকেশনসহ পরবর্তী ধাপ শুরু হয়।
৪৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়েছিল ২০২২ সালের ২৭ মে। প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হন ১৫ হাজার ৭০৮ জন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১১ হাজার ৭৩২ জন। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে ১ হাজার ৬৯০ জনকে সুপারিশ করা হয়।
প্রার্থীদের অভিযোগ, রিপিট ক্যাডার–সংক্রান্ত বিধি সংশোধনে দেরি হওয়ায় নিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে। অনেকেরই বয়সসীমা ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে, কেউ কেউ মানসিক চাপে ভুগছেন।