প্রতি বোর্ডে আলাদা প্রশ্ন ও দিনে দুটি পরীক্ষা

Rate this post

এসএসসি, এইচএসসিসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় প্রতি বোর্ডে আলাদা প্রশ্ন এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীর দিনে দুটি করে পরীক্ষা নেওয়ায় সুপারিশ করতে যাচ্ছে এইচএসসির প্রশ্ন ফাঁস তদন্তে গঠিত কমিটি।
কমিটির প্রধান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) সোহরাব হোসাইন সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন। এক মাসের বেশি সময় ধরে তদন্তের পর আগামী সপ্তাহে প্রতিবেদন শিক্ষামন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে এইচএসসির ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর গঠিত এই কমিটি প্রশ্নফাঁসে জড়িত কাউকে সনাক্ত করতে পারেনি। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তার নেয়ার সুপারিশ করা হচ্ছে বলে তদন্ত কমিটির প্রধান জানিয়েছেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর গত ৯ এপ্রিল ঢাকা বোর্ডের এইচএসসির ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
পরদিন সোহরাব হোসাইনকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি করে এদের ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে এই কমিটি সময় বাড়িয়ে নেয়।
এই কমিটিকে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের সার্বিক বিষয় তদন্ত করে এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার পর সোহরাব বলেন, “এত দিন ধরে পাবলিক পরীক্ষা নেওয়ার দরকার নেই। আমরা পরীক্ষাগুলো সকাল-বিকাল দুই বেলা নেওয়ার সুপারিশ করব।”
তবে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর দিনে দুটি করে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে আগে থেকেই তা জানিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এইচএসসিসহ পাবলিক পরীক্ষায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিদিন সকাল-বিকাল দুটি করে পরীক্ষা রাখা হলেও একটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের দিনে একটি করে লিখিত পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে।
প্রথম দিকে বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা দিনে দুটি করে নেওয়া হলেও মাঝে দীর্ঘদিন প্রতিদিন একটি করে পরীক্ষা নেওয়া হয়। তবে গত ৩৩তম বিসিএস থেকে আবারো দিনে দুটি করে লিখিত পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।
এবারের এইচএসসি পরীক্ষা-সূচিতে ৩ এপ্রিল থেকে ৫ জুন অর্থাৎ, ৬৪ দিন রাখা হয়েছে তত্ত্বীয় বিষয়ের পরীক্ষার জন্য। আর গত এসএসসির তত্ত্বীয় বিষয়ের পরীক্ষা শেষ হয়েছে ৪০ দিনে।
সারা দেশে একই প্রশ্নে পরীক্ষা না নিয়ে বোর্ডভিত্তিক আলাদা আলাদা প্রশ্নে পরীক্ষা নিলে প্রশ্নপত্র ফাঁস হলেও তাতে জটিলতা কমবে বলে মনে করেন সোহরাব।
সারা দেশে একই প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হলে কোনোভাবে যদি প্রশ্ন ফাঁস হয় তাহলে সারা দেশের পরীক্ষাই স্থগিত করতে হয়। পরীক্ষা স্থগিত হলে শিক্ষার্থীদের অসুবিধা হয়। বোর্ডভিত্তিক প্রশ্ন প্রণয়ন করা হলে প্রশ্ন ফাঁস হলেও সংশ্লিষ্ট বোর্ডের পরীক্ষা স্থগিত করলেই হবে।
বর্তমানে সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতিতে সারা দেশে একই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়। আর যেসব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা হচ্ছে না, তার প্রশ্ন বোর্ডভিত্তিক প্রণয়ন করা হয়েছে।
আগে পাবলিক পরীক্ষার জন্য চার সেট প্রশ্ন করা হলেও বর্তমানে দুই সেট প্রশ্ন ছাপানো হয়। বাকি দুই সেট প্রশ্ন ‘রিজার্ভ’ হিসাবে সংরক্ষিত থাকে।
প্রশ্ন সংরক্ষরণ ও বিতরণের ক্ষেত্রে বর্তমানে কাগজের যে প্যাকেটে সিলগালা করা হয়, তা আরো আধুনিক করার সুপারিশ করা হবে বলেও জানান সোহরাব।
এছাড়া প্রশ্ন প্রণয়ন ও বিজি প্রেসে তা ছাপানোসহ বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশ্ন প্রণয়ন পদ্ধতিকে আরো স্বচ্ছ রাখতে এবং প্রশ্ন ফাঁসরোধে বেশকিছু সুপারিশ করা হবে বলে জানান তিনি।
ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের এখনো চিহ্নিত করা যায়নি স্বীকার করে সোহরাব বলেন, “জড়িতদের শনাক্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়েছে। আশা করছি, জড়িতদের ধরা সম্ভব হবে।”
ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে সাজেশন আকারে যেসব প্রশ্ন আপলোড করা হয়েছিল তাদের শনাক্ত করতে বিটিআরসিকে বলা হয়েছে বলে জানান এই অতিরিক্ত সচিব।
এইচএসসির প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক আব্দুস সালাম হাওলাদারের নেতৃত্বে গঠিত আরেকটি কমিটি তাদের প্রতিবেদন ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে ইতিমধ্যে জমা দিয়েছে।
সূত্র : কালের কন্ঠ অনলাইন

Follow Us on Google News!

Stay updated with our latest news and articles directly from Google News.

Follow on Google News

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

© 2025 Edu Daily 24. All rights reserved.

Powered by Edu Daily 24.