গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের চরদুর্লভ খান আব্দুল হাই সরকার স্কুল অ্যান্ড কলেজে এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র (এডমিট কার্ড) আটকে রেখে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে টাকা দিতে না পেরে অনেক শিক্ষার্থী এখনো প্রবেশপত্র হাতে পাননি। তারা দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন।
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বিজ্ঞান বিভাগের বোর্ড ফি ১ হাজার ৭২৫ টাকা ও ব্যবহারিকসহ কেন্দ্র ফি ৫২৫ টাকা এবং ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে বোর্ড ফি ১ হাজার ৬৩৫ টাকা ও ব্যবহারিকসহ কেন্দ্র ফি ৪৮৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। অথচ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফরম পূরণের সময় ২ হাজার ৮০০ থেকে ৫ হাজার টাকা আদায় করেছে। এখন আবার প্রবেশপত্র ফি হিসেবে ৫০০-৬০০ এবং পাঁচ বিষয়ের তিন মাস কোচিং ফি বাবদ ৪ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করছে। যদিও বোর্ডের বিধি অনুযায়ী প্রতি বিষয়ে মাসে ১৫০ টাকা আদায় করার বিধান রয়েছে।
চরদুর্লভ খান আব্দুল হাই সরকার স্কুল এন্ড কলেজের পরীক্ষার্থী নয়ন ইসলাম নিশি জানান, সে কোচিং ফি বাবদ ৪ হাজার ৫০০ টাকা ও প্রবেশপত্রের জন্য ৬৩০ টাকা পরিশোধ করে প্রবেশপত্র নিয়েছে। এর বিনিময়ে কোনো রশিদ দেয়া হয়নি। একই পরিমাণ টাকা দিয়েছে মো. জাহিদ, মোসা. আসপিয়া, আল মিশাল ও মো. রনি।
এসএসসি পরীক্ষার্থী সানজিদা শোভা’র অভিভাবক মো.সায়মন আহমদ জানান, কোচিং ফি ও প্রবেশপত্র ফির নামে তার ভাতিজির কাছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. নূরুল ইসলাম ৫ হাজার টাকা দাবি করেন।
তিনি আড়াই হাজার টাকা দিয়ে পাঠান। কিন্তু প্রধান শিক্ষক তার ভাতিজিকে প্রবেশপত্র না দিয়ে দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেন। এখনো প্রবেশপত্র হাতে না পেয়ে ও অপমানিত হয়ে মেয়েটি সারাক্ষণ কান্নাকাটি করছে।
পরীক্ষার্থী মীম আক্তারের মা মোসা. ফাতেমা জানান, ফরম পূরণের সময়ই তিনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন, বাড়ি থেকে অতিরিক্ত দূরত্বের কারণে মেয়েকে তিনি ওই বিদ্যালয়ে কোচিং করাবেন না। অথচ এখন তার কাছে কোচিং ফি বাবদ ৪ হাজার ৫০০ টাকা ও প্রবেশপত্র ফি বাবদ ৬০০ টাকা দাবি করা হচ্ছে। ওই টাকা না দিতে পারায় এখনো প্রবেশপত্র দেওয়া হয়নি।
এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন নিয়মিত শিক্ষার্থী নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে ফরম পূরণের সুযোগ পায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলাম জানান, এ বছর তার বিদ্যালয় থেকে ৭৮ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। অন্যদিকে এই স্কুলে (কেন্দ্রে) পরীক্ষায় বসবে মোট ৩৭৫ জন। নিজেদের প্রতিষ্ঠানের এত অল্পসংখ্যক পরীক্ষার্থীর ফি দিয়ে কেন্দ্র খরচ চালানো সম্ভব নয়।
তিনি আরো জানান,তাই প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে শিক্ষকদের সঙ্গে পরামর্শ করে অতিরিক্ত কিছু টাকা আদায় করা হয়েছে। এখানে তার ব্যক্তিগত কোনো লাভ-ক্ষতির বিষয় নেই।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল আরিফ সরকার জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।