ভাবসম্প্রসারণ কীর্তিমানের মৃত্যু নেই [৮ম থেকে ১০ম শ্রেণি ও এইচএসসি]

মানুষ বাঁচে তার কর্মের মধ্যে বয়সের মধ্যে নহে - এই ভাবসম্প্রসারণের ক্ষেত্রেও একই উত্তর প্রযোজ্য।

Rate this post

ভাবসম্প্রসারণ কীর্তিমানের মৃত্যু নেই এটি ৮ম থেকে ১০ম ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ বাঁচে তার কর্মের মধ্যে বয়সের মধ্যে নহে – এই ভাবসম্প্রসারণের ক্ষেত্রেও একই উত্তর প্রযোজ্য। এখানে এই ভাবসম্প্রসারণ সম্পর্কে আলোচনার পাশাপাশি মূল ভাবসম্প্রসারণের উত্তর দেয়া হলো। যাতে শিক্ষার্থীরা ভাবসম্প্রসারণটি স্বচ্ছভাবে বুঝতে পারে।

✅ অর্থ ও বিশ্লেষণ

প্রবাদটির অর্থ, যারা পৃথিবীতে সৎ, মহান, কল্যাণকর ও অবিস্মরণীয় কাজ করে যান, তারা শারীরিকভাবে মৃত্যুবরণ করলেও তাদের স্মৃতি, আদর্শ ও কর্ম চিরকাল মানুষের মাঝে বেঁচে থাকে। তাদের অবদান ইতিহাসে অম্লান থাকে এবং পরবর্তী প্রজন্মের অনুপ্রেরণার উৎস হয়।


📚 কীর্তিমান কারা?

কীর্তিমান বলতে বোঝানো হয় সেইসব মানুষকে, যারা সমাজ, জাতি কিংবা মানবতার কল্যাণে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। তারা হতে পারেন:

  • জ্ঞানী ব্যক্তি বা শিক্ষক

  • বিজ্ঞানী, দার্শনিক ও লেখক

  • মহান নেতা ও বিপ্লবী

  • সাহসী মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ

  • সেবাধর্মে নিবেদিত চিকিৎসক বা সমাজকর্মী

তাদের কীর্তি যুগে যুগে মানুষকে পথ দেখায়।

🧠 শিক্ষণীয় দিক

এই প্রবাদটি আমাদের শিক্ষা দেয়:

  • জীবন ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু সৎ ও মহৎ কর্মের মাধ্যমে অমর হওয়া যায়।

  • নিজেকে শুধু নিজের জন্য নয়, সমাজের জন্য কিছু করে যেতে হবে।

  • কীর্তিমান হওয়ার জন্য ধন-সম্পদের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন সদিচ্ছা, আত্মত্যাগ ও নিষ্ঠার।

 

ভাব সম্প্রসারণ কীর্তিমানের মৃত্যু নেই / মানুষ বাঁচে তার কর্মের মধ্যে, বয়সের মধ্যে নহে-এর মূল উত্তর

 

কীর্তিমানের মৃত্যু নেই


মানুষ মাত্রই মরণশীল। পৃথিবীতে যিনি জন্মগ্রহণ করেন, তাকে একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হয়। তবে কিছু মানুষ আছেন, যারা শুধু শরীরেই মৃত্যুবরণ করেন—কিন্তু তাদের কর্ম ও অবদান মানবসভ্যতার ইতিহাসে অমর হয়ে থাকে। তারা যুগ যুগ ধরে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেন তাদের মহান কীর্তির জন্য।

মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ), যীশু খ্রিস্ট, গৌতম বুদ্ধ, ও শ্রীকৃষ্ণ – তাঁরা প্রত্যেকেই একসময় পৃথিবীতে এসেছিলেন, দেহত্যাগ করেছেন, কিন্তু আজও তাঁদের আদর্শ ও বাণী বিশ্বজুড়ে অনুসরণীয় হয়ে আছে। তাঁরা তাদের কর্মের মাধ্যমে অমরত্ব অর্জন করেছেন।

তেমনি জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সাহিত্য-সংস্কৃতির অঙ্গনেও আমরা অসংখ্য কীর্তিমান ব্যক্তিত্বের দেখা পাই। সক্রেটিস, প্লেটো, এরিস্টটল নেই, কিন্তু তাদের দর্শন আজও জীবন্ত। স্যার আইজ্যাক নিউটন ও আলবার্ট আইনস্টাইন নেই, কিন্তু তারা রেখে গেছেন অবিনশ্বর বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও গবেষণা।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও উইলিয়াম শেক্সপিয়ার চলে গেছেন, কিন্তু তাঁদের সাহিত্য আমাদের মাঝে এখনও জীবন্ত। চিত্রকলার ক্ষেত্রে জয়নুল আবেদিন ও লিওনার্দো দা ভিঞ্চির নাম চিরকাল স্মরণীয়, কারণ তাঁদের শিল্পকর্ম কালজয়ী।

এইসব কীর্তিমান মানুষ তাদের সৎ, মহৎ ও কল্যাণকর কাজের মাধ্যমে দেহগত মৃত্যুর পরও চিরকাল মানুষের মাঝে বেঁচে আছেন। তাদের কর্মই তাদের অমরত্ব দিয়েছে।


✨ শিক্ষণীয় দিক:

জীবন ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু কর্ম চিরন্তন। যে ব্যক্তি জীবনে সৎ, গৌরবময় ও জনকল্যাণমূলক কাজ করে যায়, সে কীর্তিমান হয়ে ওঠে। তার দেহের মৃত্যু হলেও, তার কীর্তি তাকে যুগের পর যুগ ধরে বাঁচিয়ে রাখে। সত্যিই, “কীর্তিমানের মৃত্যু নেই”।

এডু ডেইলি ২৪

Education, News and Information-based portal

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *