ভাবসম্প্রসারণ কীর্তিমানের মৃত্যু নেই [৮ম থেকে ১০ম শ্রেণি ও এইচএসসি]
মানুষ বাঁচে তার কর্মের মধ্যে বয়সের মধ্যে নহে - এই ভাবসম্প্রসারণের ক্ষেত্রেও একই উত্তর প্রযোজ্য।
![ভাবসম্প্রসারণ কীর্তিমানের মৃত্যু নেই [৮ম থেকে ১০ম শ্রেণি ও এইচএসসি]](wp-content/uploads/2025/06/kirtimaner-mrittu-nei-780x470.jpg)
ভাবসম্প্রসারণ কীর্তিমানের মৃত্যু নেই এটি ৮ম থেকে ১০ম ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ বাঁচে তার কর্মের মধ্যে বয়সের মধ্যে নহে – এই ভাবসম্প্রসারণের ক্ষেত্রেও একই উত্তর প্রযোজ্য। এখানে এই ভাবসম্প্রসারণ সম্পর্কে আলোচনার পাশাপাশি মূল ভাবসম্প্রসারণের উত্তর দেয়া হলো। যাতে শিক্ষার্থীরা ভাবসম্প্রসারণটি স্বচ্ছভাবে বুঝতে পারে।
✅ অর্থ ও বিশ্লেষণ
প্রবাদটির অর্থ, যারা পৃথিবীতে সৎ, মহান, কল্যাণকর ও অবিস্মরণীয় কাজ করে যান, তারা শারীরিকভাবে মৃত্যুবরণ করলেও তাদের স্মৃতি, আদর্শ ও কর্ম চিরকাল মানুষের মাঝে বেঁচে থাকে। তাদের অবদান ইতিহাসে অম্লান থাকে এবং পরবর্তী প্রজন্মের অনুপ্রেরণার উৎস হয়।
📚 কীর্তিমান কারা?
কীর্তিমান বলতে বোঝানো হয় সেইসব মানুষকে, যারা সমাজ, জাতি কিংবা মানবতার কল্যাণে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। তারা হতে পারেন:
জ্ঞানী ব্যক্তি বা শিক্ষক
বিজ্ঞানী, দার্শনিক ও লেখক
মহান নেতা ও বিপ্লবী
সাহসী মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ
সেবাধর্মে নিবেদিত চিকিৎসক বা সমাজকর্মী
তাদের কীর্তি যুগে যুগে মানুষকে পথ দেখায়।
🧠 শিক্ষণীয় দিক
এই প্রবাদটি আমাদের শিক্ষা দেয়:
জীবন ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু সৎ ও মহৎ কর্মের মাধ্যমে অমর হওয়া যায়।
নিজেকে শুধু নিজের জন্য নয়, সমাজের জন্য কিছু করে যেতে হবে।
কীর্তিমান হওয়ার জন্য ধন-সম্পদের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন সদিচ্ছা, আত্মত্যাগ ও নিষ্ঠার।
ভাব সম্প্রসারণ কীর্তিমানের মৃত্যু নেই / মানুষ বাঁচে তার কর্মের মধ্যে, বয়সের মধ্যে নহে-এর মূল উত্তর
কীর্তিমানের মৃত্যু নেই
মানুষ মাত্রই মরণশীল। পৃথিবীতে যিনি জন্মগ্রহণ করেন, তাকে একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হয়। তবে কিছু মানুষ আছেন, যারা শুধু শরীরেই মৃত্যুবরণ করেন—কিন্তু তাদের কর্ম ও অবদান মানবসভ্যতার ইতিহাসে অমর হয়ে থাকে। তারা যুগ যুগ ধরে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেন তাদের মহান কীর্তির জন্য।
মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ), যীশু খ্রিস্ট, গৌতম বুদ্ধ, ও শ্রীকৃষ্ণ – তাঁরা প্রত্যেকেই একসময় পৃথিবীতে এসেছিলেন, দেহত্যাগ করেছেন, কিন্তু আজও তাঁদের আদর্শ ও বাণী বিশ্বজুড়ে অনুসরণীয় হয়ে আছে। তাঁরা তাদের কর্মের মাধ্যমে অমরত্ব অর্জন করেছেন।
তেমনি জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সাহিত্য-সংস্কৃতির অঙ্গনেও আমরা অসংখ্য কীর্তিমান ব্যক্তিত্বের দেখা পাই। সক্রেটিস, প্লেটো, এরিস্টটল নেই, কিন্তু তাদের দর্শন আজও জীবন্ত। স্যার আইজ্যাক নিউটন ও আলবার্ট আইনস্টাইন নেই, কিন্তু তারা রেখে গেছেন অবিনশ্বর বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও গবেষণা।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও উইলিয়াম শেক্সপিয়ার চলে গেছেন, কিন্তু তাঁদের সাহিত্য আমাদের মাঝে এখনও জীবন্ত। চিত্রকলার ক্ষেত্রে জয়নুল আবেদিন ও লিওনার্দো দা ভিঞ্চির নাম চিরকাল স্মরণীয়, কারণ তাঁদের শিল্পকর্ম কালজয়ী।
এইসব কীর্তিমান মানুষ তাদের সৎ, মহৎ ও কল্যাণকর কাজের মাধ্যমে দেহগত মৃত্যুর পরও চিরকাল মানুষের মাঝে বেঁচে আছেন। তাদের কর্মই তাদের অমরত্ব দিয়েছে।
✨ শিক্ষণীয় দিক:
জীবন ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু কর্ম চিরন্তন। যে ব্যক্তি জীবনে সৎ, গৌরবময় ও জনকল্যাণমূলক কাজ করে যায়, সে কীর্তিমান হয়ে ওঠে। তার দেহের মৃত্যু হলেও, তার কীর্তি তাকে যুগের পর যুগ ধরে বাঁচিয়ে রাখে। সত্যিই, “কীর্তিমানের মৃত্যু নেই”।