এসএসসি পৌরনীতি ও নাগরিকতা এসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১
এসএসসি পৌরনীতি ও নাগরিকতা এসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ এখানে তুলে ধরা হলো। যারা ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী, এই এসাইনমেন্ট তাদের জন্য প্রযোজ্য।
এসএসসি পৌরনীতি ও নাগরিকতা ৫ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ / SSC Civics and Good Governance 5th Week Assignment 2021 :
বিষয় : পৌরনীতি ও নাগরিকতা
এসাইনমেন্ট নং-৩
অধ্যায় ও অধ্যায়ের শিরোনাম : চতুর্থ অধ্যায় : রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা
এসাইনমেন্ট : রাষ্ট্রের ধরন বিশ্লেষণসহ গণতন্ত্র সফল করার উপায় এবং সংসদীয় সরকারের গুন ও ত্রুটি ব্যাখ্যাকরণ।
নির্দেশনা :
– রাষ্ট্র ও সরকারের ধারণা বর্ণনা করতে হবে।
– রাষ্ট্রের ধরন বিশ্লেষণ করতে হবে।
– গণতন্ত্রের ধারণা বর্ণনা করতে হবে।
– গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ত্রুটি উল্লেখ করতে হবে।
– গণতন্ত্র সফল করার উপায় বর্ণনা করতে হবে।
– সংসদীয় সরকারের ধারণা বর্ণনা করতে হবে। সংসদীয় সরকারের গুন ও ত্রুটি বর্ণনা করতে হবে।
✰ এসএসসি পৌরনীতি ও নাগরিকতা ৫ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ / SSC Civics and Good Governance 5th Week Assignment Answer 2021 :
ক. রাষ্ট্রের ধরণা বিশ্লেষণ : রাষ্ট্রের ধারণাঃ নির্দিস্ট ভূ-খন্ড, জনসমষ্টি, সরকার ও সার্বভৌম ক্ষমতা এ চারটি উদার নিয়ে রাষ্ট্র গঠিত, আর সরকার হলাে রাষ্ট্রের একটি উপাদান। রাষ্ট্রে শাসন কাজ পরিচালনার জন্য যাঁরা নিয়ােজিত থাকেন তাদের সমষ্টি হচ্ছে সরকার। রাষ্ট্রকে জাহাজের সাথে তুলনা করলে সরকারতে তার ক্যাপ্টেন বা চালকের সাথে তুলনা করা যায়। সরকারের মাধমেই রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বাস্তবায়িত হয়ে থাকে। প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ গ্রীক দার্শনিক এরিষ্টটলের মতে, “রাষ্ট্র হলাে কয়েকটি পরিবার ও গ্রামের সমটিষ্ট, যার উদ্দেশ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবন।” মার্কিন প্রেসিডেন্ট উইলসন এর ভাষায়, “মানবজাতির অংশ বিশেষকে সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধভাবে দেখা গেলে তাকে রাষ্ট্র বলে।” ব্রুন্টসলী বলেন, “কোন নির্দিষ্ট ভূখন্ডে রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত জনসমাজই রাষ্ট্র।”
সরকার (Government) : রাষ্ট্র গঠনের তৃতীয় অন্যতম উপাদান হল সরকার। সরকার হল আয়নার মত যাতে রাষ্ট্রের ইচ্ছা ও অনিচ্ছা প্রকাশ পায় এবং সরকারের মাধ্যমে তা বাস্তবায়িত হয়। সরকার রাষ্ট্রের যাবতীয় শাসনকাজ পরিচালনা করে। তাছাড়া সরকার রাষ্ট্রের সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি আভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখে। সরকার মূলত তিনটি বিভাগের মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করে থাকে। বিভাগ তিনটি হল: ১। আইন বিভাগ ২। শাসন বিভাগ ৩। বিচার বিভাগ রাষ্ট্রভেদে সরকার ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। যেমনঃ সংসদীয় সরকার, রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ইত্যাদি।
রাষ্ট্রের ধরণ বিশ্লেষণ :
De-facto (কার্যত স্বীকৃত) : আইনত স্বীকৃত না হলেও কার্যত স্বীকৃতি প্রাপ্ত রাষ্ট্র।
De-jury (আইনত স্বীকৃত) : আইনমত নতুন সরকার বা রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি।
Dominion (শাসিত এলাকা) : ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত উপনিবেশগুলাে যারা স্বশাসনের মর্যাদা লাভ করেছে।
Hegemony (আধিপত্য) : বিশেষত কতগুলি রাষ্ট্রের মধ্যে একটি রাষ্ট্রের নেতৃত্ব, কতৃত্ব ও প্রভাব।
Welfare state (কল্যাণরাষ্ট্র) : যে রাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে স্বাস্থ্য, বীমা, পেনশন ব্যবস্থা পরিচালিত হয়। এবং সরকার জনগণের কল্যাণে সবসময় কাজ করে।
City state (নগররাষ্ট্র) : যে নগর বা শহর একই সাথে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র।
Buffer state (বাফার স্টেট) : বিবদমান দুটি বৃহৎ রাষ্ট্রের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র স্বাধীন ও নিরপেক্ষ রাষ্ট্র।
Satellite state (স্যাটেলাইট স্টেট) : প্রতিবেশী বৃহৎ এবং শক্তিশালী রাষ্ট্রের রাজনীতিক বা অর্থনীতিক প্রভাবাধীন অপেক্ষাকৃত দুর্বল রাষ্ট্র।
খ. গনতন্ত্র সফল করার উপায় :
গনতন্ত্রের ধারণা : গণতন্ত্র হল জনগণের সরকার। জনগণের দ্বারা এবং জনগণের জন্য যে রাষ্ট্র পরিচালিত হয় তাকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে। লর্ড ব্রাইস এর মতে, “যে শাসন ব্যবস্থায় শাসন ক্ষমতা কোনাে বিশেষ শ্রেণীর হাতে ন্যস্ত না থেকে সমাজের সকল সদস্যের হাতে ন্যস্ত থাকে তাকে গণতন্ত্র বলে।” একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সকল মানুষের স্বাধীনভাবে রাষ্ট্রের শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং সকলে মিলে সরকার গঠন করে। আধুনিক গণতন্ত্রে জনগণের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। মতামত প্রকাশের অধিকার ভােগের মাধ্যমে ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে এবং সরকারের সমালােচনার সুযােগ থাকে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তিত হয়। এতে জনগণের স্বার্থ রক্ষার সুযােগ থাকে এবং নাগরিকের অধিকার ও আইনের শাসনের স্বীকৃতি দেয়া থাকে। বর্তমানে পৃথিবীর অধিকাংশ রাষ্ট্রই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র । যেমন: বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র।
গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ত্রুটি সমূহ :
গণতন্ত্র উত্তম শাসন ব্যবস্থা হলেও এর কিছু ত্রুটি আছে। নিম্নে এগুলাে আলােচনা করা হলো-
১. দলকানা শাসন ব্যবস্থাঃ গণতন্ত্রে ক্ষমতাশীল দল সর্বদাই নিজ দলের স্বার্থ রক্ষা করে রাষ্ট্র পরিচালনা করে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতি অনেকটা অবজ্ঞা করে।
২. অজ্ঞ ও অযােগ্যদের দ্বারা শাসনকার্য পরিচালনা : গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচনের মাধ্যমে শাসক মনােনয়ন করা হয়। ফলে অযােগ্য লােক নির্বাচিত হওয়ার সুযােগ পায়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী লেকি (Lacky) বলেন, “গণতন্ত্র, দরিদ্র, অজ্ঞ ও অযােগ্যদের শাসন।” বিজ্ঞ ও শান্তিপ্রিয় মানুষ নির্বাচনের জটিলতায় অংশ নিতে চায় না বলেই অদক্ষ মানুষ যে সুযােগ নিয়ে থাকে।
৩. যােগ্যতার চেয়ে সংখ্যার প্রাধান্য : গণতন্ত্রে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করে। ফলে এখানে গুণ বা যােগ্যতার চেয়ে সংখ্যার গুরুত্ব প্রাধান্য পায়। গণতন্ত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সরকার নির্বাচিত হয় বিধায় মেধা ও যােগ্যতার অবমূল্যায়নের সুযােগ রয়ে যায়।
৪. ঘন ঘন সরকার পরিবর্তনঃ ঘন ঘন সরকার পরিবর্তন গণতন্ত্রের অন্যতম সীমাবদ্ধতা। একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করার পর সুনির্দিষ্ট কর্মসূচী গ্রহণ ও পরিকল্পনা তৈরি করে। কিন্তু ঘন ঘন সরকার পরিবর্তনের ফলে এসব পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে না।
৫. আবেগ দ্বারা পরিচালিতঃ গণতন্ত্রে আবেগের প্রভাব বেশি। অনেক সময় বক্তাগণ আবেগময় বক্তৃতার মাধ্যমে জনগণকে বশ করে ফেলে। এর ফলে দূর্নীতিপরায়ণ ও অযােগ্য ব্যক্তিরাই নির্বাচিত হয়।
গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা সফল করার উপায় :
১. দায়িত্বশীল শাসন ব্যবস্থাঃ এ শাসন ব্যবস্থায় সরকার জনগণের প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে। সরকার রাষ্ট্রের যে কোন কাজের জন্য জনগণের নিকট দায়ী থাকে এবং পরবর্তী নির্বাচনে জয় লাভের জন্য জনস্বার্থমূলক কাজ করে থাকে। এর ফলে দেশে দায়িত্বশীল শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।
২. ব্যক্তি স্বাধীনতার রক্ষাকবচঃ গণতন্ত্র নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষা করে। গণতন্ত্রের মাধ্যমে জনগণ মতামত প্রকাশের অধিকার ভােগ করে। ফলে ব্যক্তি স্বাধীনতার বিকাশ ঘটে। সকলে মিলে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করে। এতে নাগরিকের অধিকার রক্ষা হয়।
৩. সমানাধিকারঃ গণতন্ত্রে সবাই সমান। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সবাই জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সমান অধিকার ভােগ করে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রত্যেক ক্ষেত্রে সবার অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করে।
৪. সরকারের স্থায়ীত্ব বৃদ্ধিঃ জনগণের আস্থা যত দিন থাকে সরকার তত দিন স্থায়ী হয়। তাই জনসমর্থন লাভের আশায় দায়িত্বশীল ও জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সরকার পরিচালনা করতে স্বচেষ্ট হয়। এতে সরকারের সুনাম ও দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
৫. নাগরিক মর্যাদা বৃদ্ধিঃ রাষ্ট্র পরিচালনার ভার থাকে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের হাতে। অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতির অন্যতম হাতিয়ার হল নির্বাচন। এটি জনগণকে রাষ্ট্রীয় কাজে অংশ গ্রহণের সুযােগ করে দেয়। ফলে নাগরিকদের সংস্কৃতি উন্নত হয় এবং ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে এবং নাগরিকের সম্মান বেড়ে যায়।
৬. বিপ্লবের সম্ভাবনা হ্রাসঃ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকার পরিবর্তনশীল। সুনির্দিষ্ট সময় পরপর সরকার পরিবর্তন হওয়ার সুযােগ থাকায় বিপ্লবে সম্ভাবনা কম থাকে।
৭. রাজনৈতিক শিক্ষা ও সচেতনতার মাধ্যমঃ গণতন্ত্র সকলকে রাজনৈতিক চর্চার সমান সুযােগ দেয়। ফলে সকলেই রাজনীতি চর্চা ও রাষ্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক শিক্ষা ও সচেতনতা লাভ করে। তাই জে.এস. মিল বলেন, “গণতন্ত্র উত্তম শাসন ব্যবস্থার শিক্ষা দান করে।”
গ. সংসদীয় সরকারের গুণ ও ত্রুটি :
সরকার সংসদীয় (Parliamentary form of Government) : সংসদীয় সরকারের অপর নাম মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার। সংসদীয় সরকার হল এমন একটি শাসন ব্যবস্থা যেখানে সরকারের সকল ক্ষমতা মন্ত্রিপরিষদের হাতে ন্যস্ত থাকে। নির্বাহী বিভাগ তার কাজের জন্য আইনসভার নিকট দায়ী থাকে। এক্ষেত্রে মন্ত্রিসভায় মন্ত্রীগণ তাদের কাজের জন্য ব্যক্তিগত ও যৌথভাবে সংসদের নিকট জবাবদিহি করেন। সাধারণ নির্বাচনে সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী দল মন্ত্রিসভা গঠন করে এবং দলের একজন আস্থাভাজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত হন। প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়ােগ প্রদান করেন। এ সরকার ব্যবস্থায় একজন নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রপ্রধান থাকেন যিনি প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করেন। পার্লামেন্ট বা আইনসভার মধ্য থেকে মন্ত্রীদের নিয়ােগ করা হয় বলে একে পার্লামেন্টারি বা সংসদীয় সরকার বলা হয়। বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাজ্য প্রভৃতি দেশে সংসদীয় সরকার প্রচলিত আছে।
সংসদীয় সরকারের গুণাবলি :
সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা হল একটি জনপ্রিয় সরকার ব্যবস্থা। নিম্নে এর গুণাবলি বর্ণিত হলো-
১. আইন ও শাসন বিভাগের মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয় এ ধরনের সরকার ব্যবস্থায় আইন ও শাসন বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে শাসনকার্য পরিচালিত হয়। শাসন ও আইন বিভাগের মধ্যে সৌহার্দ্যমূলক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় থাকে। কারণ শাসন বিভাগের সদস্যগণ আইন সভার সদস্য হন।
২. দায়িত্বশীল সরকার ব্যবস্থা সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় সরকারের মন্ত্রীগণ একক ও যৌথভাবে আইনসভা অর্থাৎ সংসদের নিকট দায়ী থাকেন বলে একে দায়িত্বশীল সরকার ব্যবস্থা বলে। সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় আইনসভার সদস্যগণ জনগণের নিকট দায়ী থাকেন।
৩. বিরােধীদলের গুরুত্ব সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় বিরােধী দল হল কার্যকর সংসদ গঠনের পূর্বশর্ত। বিরােধী দলকে ছায়া সরকারও বলা হয়। বিরােধী দলের অস্তিত্ব মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারের জন্য অপরিহার্য। বিরােধী দল সরকারের দোষ-ক্রটি জনগণের সামনে তুলে ধরে। তাছাড়া জাতীয় সংকটে অথবা যে কোন অবস্থায় ক্ষমতাসীন ও বিরােধী দল পারস্পরিক আলােচনার মাধ্যমে যে কোন সমস্যার সমাধান করতে পারে।
৪. নমনীয়তা : সংসদীয় সরকার নমনীয় প্রকৃতির। এখানে সংসদ জনগণের প্রয়ােজনে ও দেশের স্বার্থে যে কোন সময় সহজেই সংবিধান সংশােধন করতে পারে। অবশ্য এক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশের ভােটের প্রয়ােজন পড়ে। তাছাড়া জনসাধারণ প্রয়ােজনে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সরকার পরিবর্তন করতে পারে।
৫. রাজনৈতিক শিক্ষার বিস্তার : সংসদীয় সরকার জনমত দ্বারা পরিচালিত শাসন ব্যবস্থা। সরকারি ও বিরােধী দল জনমতকে তাদের অনুকুলে রাখার জন্য সবসময় তৎপর থাকে। তাছাড়া সরকারের কাঠামাে ও নীতিমালা এবং রাষ্ট্রের কার্যক্রম নিয়ে সংসদে বিতর্ক হয়। এতে করে জনসাধারণ তাদের করণীয় ঠিক করে নিতে পারে। ফলশ্রুতিতে জনগণের রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পায়।
৬. একাধিক রাজনৈতিক দলের অবস্থান : সংসদীয় সরকার মূলত দলীয় সরকার। এতে সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলই সরকার গঠন করে। আর যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় না তারা বিরােধী দলের ভূমিকা পালন করে। এভাবে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় একাধিক দলের অবস্থান নিশ্চিত করা হয়।
৭. ঐতিহ্য রক্ষা : সংদীয় সরকার দেশের শাসনতান্ত্রিক ঐতিহ্য রক্ষা করতে পারে। যেমন- ইংল্যান্ডের নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র । সংসদীয় সরকারের ত্রুটিঃ বর্তমান সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা খুব জনপ্রিয়। কিন্তু এ সরকারের কিছু ত্রুটি রয়েছে। সংসদীয় ব্যাবস্থায় একই ব্যক্তি শাসন ও আইন বিভাগের দায়িত্বে থাকে ফলে ক্ষমতা পৃথকীকরণ নীতি কার্যকর সম্ভব হয় না। সকল ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত থাকায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব হয়। সংসদ নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হওয়ার সরকারের অস্থিতিশীলতা থাকে না। তাছাড়া সংখ্যাগরিষ্ট দল সরকার গঠন করে বলে দলীয় স্বার্থ প্রাধান্য দেয়া হয় এবং দুর্নীতি বৃদ্ধি পায়।
এসএসসি ৪র্থ সপ্তাহের এসাইনমেন্টের বিষয়, ক্রমিক ও অধ্যায় :
☞ পৌরনীতি ও নাগরিকতা (এসাইনমেন্ট নং-২, ১ম অধ্যায়)
➦ ইসলামের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা (এসাইনমেন্ট নং-৩, ২য় অধ্যায়)
☞ পদার্থবিজ্ঞান (এসাইনমেন্ট নং-৩, ২য় ও ৪র্থ অধ্যায়)
🡆 ব্যবসায় উদ্যোগ (এসাইনমেন্ট নং-৩, ২য় ও ৩য় অধ্যায়)
➦ অর্থনীতি (এসাইনমেন্ট নং-৩, ৩য় অধ্যায়)
☞ জীববিজ্ঞান (এসাইনমেন্ট নং-৩, ৪র্থ অধ্যায়)
☞ ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং (এসাইনমেন্ট নং-৩, ৩য় অধ্যায়)
➦ উচ্চতর গণিত (এসাইনমেন্ট নং-২, ১১শ অধ্যায়)
✅ এসএসসি (২০২১) ৪র্থ সপ্তাহের এসাইনমেন্ট / SSC 4th week’s assignment 2021 (PDF, 19 pages) : https://edudaily24.com/wp-content/uploads/SSC-assignment-2021-4th-week.pdf
>> ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তর প্রণীত কভার পেজ, মূল্যায়ন নির্দেশনা ও ৪র্থ সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ১৮ জুলাই ২০২১ তারিখে প্রকাশিত হয়েছে। ৪২ পৃষ্ঠার এই pdf ফাইলটি পেতে ক্লিক করুন : http://www.dshe.gov.bd/sites/default/files/files/dshe.portal.gov.bd/notices/9532dbb0_a509_4dcd_ab14_3b0764af9a92/294_Notice_merged.pdf
এসএসসির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়ের ২য় ও ১ম এসাইনমেন্ট পাঠ্য বইয়ের প্রথম অধ্যায় (পৌরনীতি ও নাগরিকতা) থেকে নেয়া হয়েছে ।
এসএসসি পৌরনীতি ও নাগরিকতা এসাইনমেন্ট ২০২১ – উত্তর (৪র্থ সপ্তাহ / এসাইনমেন্ট নং-২) / SSC Civics and good governance assignment 2021 answers – 4th week / Assignment No. 2 :
এসাইনমেন্ট নং-২
এসাইনমেন্ট শিরোনাম : রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের উপাদান, রাষ্ট্রের উৱপত্তি সংক্রান্ত মতবাদ এবং রাষ্ট্র ও সরকারের সম্পর্ক বিশ্লেষণ
অধ্যায়ের শিরোনাম : প্রথম অধ্যায় : পৌরনীতি ও নাগরিকতা
☞ এসএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন এসাইনমেন্টের উত্তর (৪র্থ সপ্তাহ, ২য় এসাইনমেন্ট ) / SSC civics assignment solutions 2021 – 4th week DOWNLOAD LINK (pdf, 6 pages) : https://edudaily24.com/wp-content/uploads/ssc-civics-assignment-2021-answers-4th.pdf
এসএসসি পৌরনীতি ও নাগরিকতা এসাইনমেন্ট ২০২১ – উত্তর (১ম সপ্তাহ / ক্রমিন নং-১) / SSC Civics and good governance assignment 2021 answers – 1st week / Assignment No. 1 :
এসাইনমেন্ট নং ১ :
অধ্যায় ও অধ্যায়ের শিরোনাম : প্রথম অধ্যায় : পৌরনীতি ও নাগরিকতা।
বিষয় কোড : ১৪০
এসাইনমেন্ট শিরোনাম : বাংলাদেশের বিদ্যমান পরিবার ব্যবস্থা ও একটি আদর্শ পরিবারের কার্যাবলি বিশ্লেষণ।
উত্তর : পরিবার একটি আদিম সামাজিক প্রতিষ্ঠান। মানুষ একা বসবাস করতে পারে না। সঙ্গকামী মানুষ স্বভাবতই পরস্পর মিলেমিশে একত্রে বসবাস করতে চায়। মানুষের এই আকাংখার অভিব্যক্তি হল পরিবার। পরিবারের ভিত্তি হল জৈবিক যৌনতা। কারণ নারী-পুরুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং সন্তান-সন্ততি জন্ম দান করে। নারী-পুরুষ পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ ও সন্তান বাৎসল্য তাদেরকে পারিবারিক জীবন যাপনে অনুপ্রাণিত করে। স্নেহ, মায়া-মমতা ও নিরাপত্তার আকাঙ্ক্ষা পরিবারের ভিত্তি। পরিবারের বিকল্প চিন্তা করা যায় না। বাংলাদেশে বিদ্যমান পরিবার ব্যবস্থা ও একটি আদর্শ পরিবারের কার্যাবলি বিশ্লেষণপূর্বক আলোচনা করা হল –
পরিবারের ধারণা : পরিবার একটি ক্ষুদ্র সামাজিক বর্গ। পরিবার বলতে সেই সামাজিক ক্ষুদ্র সংস্থাকে বুঝায় যেখানে এক বা একাধিক পুরুষ তার বা তাদের স্ত্রী-পুত্র-কন্যা ও অন্যান্য পরিজন নিয়ে একত্রে বসবাস করে।
অধ্যাপক আর এম ম্যাকাইভার পরিবারের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, “পরিবার হল ক্ষুদ্র ও স্থায়ী বর্গ, যার। উদ্দেশ্য সন্তান-সন্ততির জন্মদান ও লালন পালন করা।”
পরিবারের প্রকারভেদ : বংশ পরিচয় ও নিয়ন্ত্রণের ধারা বংশ পরিচয় ও নিয়ন্ত্রণের ধারার ভিত্তিতে পরিবারকে দুই শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যেমন- পিতৃতান্ত্রিক ও মাতৃতান্ত্রিক পরিবার।
➲ পিতৃতান্ত্রিক পরিবার : যখন পিতা পরিবারের কর্তা অথবা পিতার দিক হতে পরিবার পরিচিত হয় তখন তাকে পিতৃতান্ত্রিক পরিবার বলে। সমাজবিজ্ঞানী হেনরি মেইন এই পরিবার ব্যবস্থাকে আদি ও অকৃত্রিম বলে উল্লেখ করেছেন।
➲ মাতৃতান্ত্রিক পরিবার : যখন মাতার দিক হতে বংশ পরিচয় দেওয়া হয় এবং মাতা পরিবারের প্রধান হন তখন তাকে মাতৃতান্ত্রিক পরিবার বলে। প্রাচীনকালে মিশর ও তিব্বতে এই ধরনের পরিবার-ব্যবস্থা বিরাজমান ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশ ও আসামের খাসিয়া গারাে নৃ-তাত্ত্বিক গােন্তীর মধ্যে, গারাের মধ্যে এই ধরনের পরিবার দেখা যায়।
এছাড়া, বিবাহ প্রথা বিবাহ প্রথার উপর ভিত্তি করে পরিবারকে তিন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যেমন : একপত্নীক, বহুপত্নীক ও বহুপতি পরিবার।
➲ একপত্নীক : যদি একজন স্বামী একজন স্ত্রী গ্রহণ করে পরিবার গঠন করে তবে তাকে একপত্নীক পরিবার বলে। এটি বর্তমান কালের প্রচলিত পরিবারব্যবস্থা।
➲ বহুপত্নীক : যখন একজন পুরুষ একাধিক স্ত্রী বিবাহ করে পরিবার গঠন করে তখন তাকে বহুপত্নীক পরিবার বলে। অর্থনৈতিক কারণে এ ধরনের পরিবারব্যবস্থা কমে যাচ্ছে।
➲ বহুপতি পরিবার : যখন একজন স্ত্রী একের অধিক স্বামী গ্রহণ করে পরিবার গঠন করে তখন তাকে বহুপতি পরিবার বলে। হিন্দু ধর্মে মহাভারতে পঞ্চ পান্ডবের এক স্ত্রী দ্রৌপদির কথা উল্লেখ আছে।
পারিবারিক কাঠামাে ও আকৃতি : পারিবারিক কাঠামাে ও আকৃতির ভিত্তিতে পরিবারকে ২ শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যেমন : একক পরিবার ও যৌথ পরিবার।
একক পরিবার –যখন স্বামী-স্ত্রী তাদের উপর নির্ভরশীল সন্তান-সন্ততি নিয়ে পরিবার গঠন করে তখন তাকে একক পরিবার বলে।
যৌথ পরিবার – যে পরিবারে পিতামাতা তাদের নিজেদের সন্তান-সন্ততি এবং সন্তান-সন্ততিগণের সন্তান-সন্ততি নিয়ে একসঙ্গে বসবাস করে তাকে যৌথ পরিবার বলে।
বর্তমানে যৌথ পরিবার হ্রাস ও একক পরিবার বৃিদ্ধির কারণসমূহ :
➲ সীমিত অর্থনৈতিক যােগানদাতা : একটি যৌথ পরিবার। অনেকগুলাে মানুষের সমন্বয়ে গঠিত হয়ে থাকে,যার লােক সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ জন অথবা তার উর্ধ্বে থাকলেও অনেক যৌথ পরিবারে অর্থনৈতিক যােগানদাতা মাত্র ২ থেকে ৪ জন থাকেন আবার তাদের আয়ের পরিমাণও সমান না। এ অবস্থায় যৌথ পরিবারে থেকে পরিবার চালনা অত্যান্ত কষ্টসাধ্য হয় এমনকি তারা নিজের এবং নিজের স্ত্রী সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই যৌথ পরিবার ভেঙ্গে মা বাবা দাদা দাদী অন্যান্য সদস্যদের ছেড়ে একক পরিবার গঠনের চিন্তা করেন।
➲ ব্যক্তি স্বার্থপরতা : যৌথ পরিবারের অর্থনৈতিক যােগানদাতা ব্যক্তিগণ অনেক সময় সবার সাথে মিলেমিশে যৌথ সম্পত্তি গড়ে তােলার পাশাপাশি যৌথ পরিবারের সদস্যদের অজান্তে নিজের নিজের স্ত্রী অথবা সন্তানের নামে আলাদা সম্পত্তি গড়ে তুলেন।পরবর্তীতে তা পরিবারের অন্যান্য সদস্যগণের মধ্যে জানাজানি হলে ঝগড়ার হয় আর যৌথ পরিবার ভেঙ্গে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়।
➲ কর্মজীবীদের সংখ্যা বৃদ্ধি : পরিবারের কর্মজীবী সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে কর্মজীবী সদস্যগণ চাকুরীর সুবাদে দীর্ঘদিন তাদের যৌথ পরিবারের বাহিরে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকতে হয়। ফলশ্রুতিতে এক সময় তাদের মধ্যে যৌথ পরিবারে থাকার আগ্রহ কমে যায় বা তাদের সন্তানাদি ও মা বাবার সাথে একক পরিবারে থাকতে অভ্যস্ত থাকায় তারা আর যৌথ পরিবারে ফিরে আসতে চায় না। এমনকি তাদের মধ্যে একটি স্বাধীনচেতা মনােভাব সৃষ্টি হয় তখন তারা তাদের পরিবারের কর্তাব্যক্তির বিভিন্ন সিন্ধান্ত মানতেও নারাজ। ফলে যৌথ পরিবার ভেঙ্গে যেতে থাকে।
➲ ব্যক্তিগত আধিপত্য বিস্তার : বর্তমান সমাজে যৌথ পরিবার ভেঙ্গে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলাে ব্যক্তিগত আধিপত্য বিস্তার। পরিবারের প্রত্যেক ব্যক্তি চান পরিবারের সকল সদস্যকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে। এতে পরিবারের অন্যদের মধ্যে পরিবার ভেঙ্গে একক পরিবার গঠনের প্রবণতা দেখা যায়।
পরিবারের কার্যাবলী :
পরিবারের কাজের দিকে খেয়াল করলেই বুঝা যায় পরিবারের কাজের গুরুত্ব কতখানি এবং পরিবার কি কাজ করে। পরিবার সাধারণত নিম্নলিখিত কাজগুলাে করে।
(১) জৈবিক কাজ : পরিবারের অন্যতম কাজ সন্তান-সন্ততির জন্মদান এবং লালন-পালন। এই কাজটি পরিবারের ভিত্তি। কেননা যৌনতা, নারী-পুরুষের একে অপরের প্রতি আকর্ষণ ও সন্তান-বাৎসল্যের কারণেই মানুষ পরিবার গঠন করে। অনেক উন্নত দেশে শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়া থেকে লালন-পালনের নানা দায়িত্ব শিশু-সদন বা শিশুমঙ্গল প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালগুলাে পালন করে থাকে। তবে পরিবারের মধ্যে যে আদর-স্নেহ ও মায়া-মমতায় শিশু বিকশিত হয় তার বিকল্প কিছুই সৃষ্টি করা সম্ভব নয়।
(২) শিক্ষামূলক কাজ : পরিবারকে সমাজ জীবনের শাশ্বত বিদ্যালয় বলা হয়। শিশুরা প্রথম শিক্ষা, বর্ণ পরিচয় ও যােগ-বিয়ােগ পরিবারেই শিখে। এমনকি বড় হয়ে স্কুলে যে শিক্ষা দেওয়া হয় তাও পরিবারের নিয়ন্ত্রণে পূর্ণতা পায়। যেমন- পরিবারে মাতাপিতার সাহায্য ও সহযােগিতায় স্কুলের শিক্ষার ভিত্তি মজবুত হয়। শুধু তাই নয় শিশুরা ধর্মীয় শিক্ষা, আদব-কায়দা, শিষ্টাচার, বড়দের প্রতি সম্মান ও ছােটদেরকে ভালবাসার শিক্ষা পরিবার থেকে লাভ করে। তাই শিশুশিক্ষার জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডারগার্ডেন প্রভৃতি থাকলেও নৈতিক মূল্যবােধ ও মানবতাবােধের শিক্ষা পরিবারের মত অন্য কোন প্রতিষ্ঠান দিতে পারে না।
(৩) অর্থনৈতিক কাজ : অতীতে পরিবারের মধ্যেই অর্থনৈতিক কার্যাবলী সম্পাদিত হত। শিকার, মৎস্য চাষ ও সংগ্রহ, কুটির শিল্প প্রভৃতি কাজ পরিবারের সদস্যরা সম্পাদন করে জীবন ধারণ করত। তখন তাদের চাহিদা কম ছিল বলে পরিবার সদস্যদের সকল চাহিদা পূরণ করতে পারত। কিন্তু বর্তমানকালে অর্থনৈতিক চাহিদা বৃদ্ধি ও আয়ের ক্ষেত্র সম্প্রসারণের ফলে পরিবারের সদস্যগণ অফিসআদালত, কলকারখানা ও নানাবিধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে আয় করে থাকে। তবে আজকাল আবার পরিবারমুখী আয়ের পথ উন্মােচিত হয়েছে। হাঁস-মুরগী পালন, মাছ চাষ, ফল ও ফুলের বাগান তৈরি, বাঁশ ও কাঠের কাজ, সেলাই ও বুনন কাজ করে পরিবারের সদস্যগণ আয় বাড়িয়ে সুখ-শান্তি ও স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি করছেন। পরিবারের সদস্যগণের বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে অর্জিত আয় পরিবারের মধ্যে খরচ করে পরিবার গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কাজ করে।
(৪) মনস্তাত্ত্বিক কাজ- স্নেহ, মায়া-মমতা, ভালবাসা ও আদর-যত্নে শিশুরা লালিত-পালিত হয় । পিতামাতার স্নেহে প্রতিপালিত শিশু সমাজে চলার পথে উদারতা, সহনশীলতা, দয়ামায়া প্রভৃতি মানবিক গুণাবলী দ্বারা পরিচালিত হয়। এর ফলে সুন্দর ও সুশৃংখল সমাজ গড়ে উঠে। পরিবারের এ কাজের কোন বিকল্প সৃষ্টি করা সম্ভব নয়।
(৫) নৈতিক কাজ : পরিবার তার সদস্যদেরকে নৈতিক শিক্ষা দান করে। সত্য কথা বলা, মিথ্যা না। বলা, পরচর্চা না করা প্রভৃতি নৈতিক কথা ও কাজের শিক্ষা শিশুরা পরিবার থেকেই অর্জন করে।
(৬) ধর্মীয় কাজ- ধর্মীয় নিয়মাবলী ও ধর্ম পালনের শিক্ষা পরিবার থেকেই অর্জিত হয়। সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্য, নবী-রাসুল বা দেবদেবীর প্রতি ভক্তি শিশুরা মাতাপিতার নিকট থেকে অর্জন করে। যে পরিবারের মাতাপিতা ধার্মিক সেই পরিবারের সন্তান-সন্ততিরাও সাধারণত ধার্মিক হয়ে থাকে এবং বড় হয়ে ধর্ম পালন অব্যাহত রাখে।
(৭) অবকাশমূলক কাজ : পরিবার চিত্তবিনােদন বা অবকাশ ও মনােরঞ্জনমূলক কাজ করে থাকে। শিশুরা বাবা-মা এবং দাদা-দাদীর নিকট থেকে গল্প, কবিতা ও ছড়া শুনে আনন্দ লাভ করে। এক সময়ে পুঁথিপাঠ, রাজ-রাজরার গল্প-কাহিনী প্রভৃতির আসর জমিয়ে পরিবারের সদস্যরা আনন্দ লাভ করত। আজকাল সিনেমা, থিয়েটার, নাট্যমঞ্চ, ক্লাব, প্রভৃতি বিনােদনের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। তবুও বর্তমানকালে রেডিও, টেলিভিশন, টেপরেকর্ডার, ভি.সি.আর, পত্র-পত্রিকা প্রভৃতির মাধ্যমে পরিবারের সদস্যগণ পরিবারেই চিত্ত বিনােদনের কাজ করে থাকে।
(৮) সামাজিক কাজ : পরিবার সমাজ জীবনের অন্যতম একক এবং আদি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। সমাজবিজ্ঞানীগণ পরিবারের সম্প্রসারণকে সমাজের উৎপত্তির কারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। পরিবারের মাধ্যমে সামাজিক লেন-দেন, চাল-চলন, আচার-আচরণ ও সহযােগিতার শিক্ষা এবং বংশ মর্যাদা লাভ করা যায়। পারিবারিক জীবনের সংঘবদ্ধতা থেকেই মানুষ সমাজের গােষ্ঠীবদ্ধ জীবনের শিক্ষালাভ করে। তাছাড়া পরিবারের নৈতিক শিক্ষা সামাজিক মূল্যবােধ বিকাশে সহায়তা করে। পরিবার সামাজিকীকরণের ভূমিকা পালন করে সদস্যদেরকে সমাজে বসবাসের উপযােগী করে গড়ে তােলে।
(৯) রাজনৈতিক কাজ : পরিবার ক্ষুদ্র রাষ্ট্র বিশেষ। পরিবারে শাসক-শাসিতের সম্পর্ক বিরাজ করে। আনুগত্য ও নিয়মানুবর্তিতার প্রথম পাঠ আমরা পরিবারের মধ্যে লাভ করি। আদেশ দান ও আনুগত্যের শিক্ষা পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় জীবনে পরিব্যাপ্ত হয় এবং আদর্শ রাষ্ট্রের অনুকূল পরিবেশ রচিত হয়। তাছাড়া পরিবারের বিশেষ রাজনৈতিক আদর্শ ও চিন্তাধারা এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক রাজনৈতিক আলােচনা থেকে তাদের উপর রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রভাব বিস্তার করে। বিশেষ দলের প্রতি সমর্থনের ক্ষেত্রে পরিবারের রাজনৈতিক আদর্শ ও সমর্থনের প্রতিফলনও ঘটে।
উপরিউক্ত আলােচনা থেকে সহজেই অনুধাবন করা যায় যে, পরিবার অনেক কাজ করে থাকে এবং | কোন কাজের গুরুত্ব কম নয়। একটি আদর্শ পরিবার একটি আদর্শ সমাজ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
>> এসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম
>> এসএসসির এসাইনমেন্টে আংশিক পরিবর্তন
>> এসএসসি রসায়ন এসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১
>> এসএসসি ভূগোল ও পরিবেশ এসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১
>> এসএসসি জীববিজ্ঞান এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১
>> এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১
>> এসএসসি এসাইনমেন্ট কভার পেজ
>> এসএসসি এসাইনমেন্ট ২০২২