এক নজরে মেট্রোরেল প্রকল্প, স্টেশন, ম্যাপ ও দৈর্ঘ্য তথ্য

Rate this post

এক নজরে মেট্রোরেল প্রকল্প, স্টেশন, ম্যাপ ও দৈর্ঘ্য তথ্য নিয়ে এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্তরায় মেট্রোরেল উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে মেট্রোরেলে চড়ে আগারগাঁওয়ে নামবেন। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানিয়েছে, শুরুতে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। পৌনে ১২ কিলোমিটারের এই পথ পাড়ি দিতে মেট্রোরেলের সময় লাগবে ১০ মিনিট ১০ সেকেন্ড।

এক নজরে ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প

  • প্রকল্পের নাম: ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন–৬
  • প্রকল্পের ধাপ বা প্যাকেজ–সংখ্যা: ৮
  • উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা: জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো–অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)
  • পরিচালনা সংস্থা: ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)
  • ডিএমটিসিএল গঠনের তারিখ: ৩ জুন ২০১৩
  • ডিএমটিসিএলের রূপকল্প: বাঁচবে সময়, বাঁচবে পরিবেশ, যানজট কমাবে মেট্রোরেল
  • প্রকল্পের বাজেট: ৩৩,৪৭১.৯৯ কোটি টাকা
  • প্রস্তাবিত পথের দৈর্ঘ্য (ভায়াডাক্ট): ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার
  • ভাড়া: সর্বনিম্ন ২০ টাকা, সর্বোচ্চ ১০০ টাকা
  • মেট্রোট্রেনের সংখ্যা: ২৪ সেট
  • প্রতিটি ট্রেনে কোচ–সংখ্যা: ৬
  • প্রতি ট্রেনের যাত্রী ধারণক্ষমতা: ২,৩০৮ জন (মাঝের ৪টি কোচের প্রতিটিতে সর্বোচ্চ ৩৯০ জন এবং ট্রেইলার কোচের প্রতিটিতে সর্বোচ্চ ৩৭৪ জন)
  • পরিচালনা–প্রযুক্তি: কমিউনিকেশন বেইজড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম (সিবিটিসি)
  • চলাচলের সময়: সকাল ৮টা থেকে শুরু (আপাতত)
  • প্রথম নারী চালক: মরিয়ম আফিজা
  • সর্বোচ্চ পরিকল্পিত গতি: ১০০ কিলোমিটার/ঘণ্টা
  • যাত্রী পরিবহন–ক্ষমতা: ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং দৈনিক ৫ লাখ
  • স্টেশন–সংখ্যা: ১৭ (উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর ১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, মতিঝিল ও কমলাপুর)
  • ট্রেনের বিদ্যুৎ–চাহিদা: একটি ট্রেন উত্তরা থেকে আগারগাঁও আসতে বিদ্যুৎ লাগবে ২ হাজার টাকার
  • বিদ্যুতের উৎস: জাতীয় গ্রিড (উপকেন্দ্র ৫টি : উত্তরা, পল্লবী, তালতলা, সোনারগাঁও হোটেল ও বাংলা একাডেমি এলাকা)
  • গেজ: স্ট্যান্ডার্ড গেজ (১,৪৩৫ মিলিমিটার)
  • নির্মাণকাজ উদ্বোধন: ২৬ জুন ২০১৬
  • মেট্রোরেল উদ্বোধন: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২
  • প্রকল্পের সমাপ্তি: ২০২৫ সাল (সম্ভাব্য)

মেট্রো রেলের ভাড়ার তালিকা

  • উত্তরা নর্থ স্টেশন (দিয়াবাড়ি) থেকে আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া ৬০ টাকা।
  • উত্তরা নর্থ স্টেশন থেকে উত্তরা সেন্টার / উত্তরা সাউথ স্টেশনের ভাড়া – ২০ টাকা।
  • প্রথম স্টেশন (উত্তরা নর্থ) থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ স্টেশনের ভাড়া – ৩০ টাকা।
  • মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৪০ টাকা।
  • শেওড়াপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৫০ টাকা।

পল্লবী স্টেশন থেকে মিরপুর-১১, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া ২০ টাকা। পল্লবী থেকে শেওড়াপাড়া ও আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা। মিরপুর-১০ নম্বর থেকে ফার্মগেট ৩০ টাকা ও কারওয়ান বাজার স্টেশনে ভাড়া লাগবে ৪০ টাকা। মিরপুর–১০ স্টেশন থেকে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া ৫০ টাকা। মিরপুর-১০ থেকে সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনে যেতে ৬০ টাকা লাগবে। আর কমলাপুর স্টেশনে যেতে বাড়তি ১০ টাকা অর্থাৎ ৭০ টাকা ভাড়া দিতে হবে।

সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ ও সর্বোচ্চ ভাড়া ১০০ টাকা

মেট্রোরেলে ভ্রমণের সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা এবং উত্তরা থেকে মতিঝিল স্টেশন পর্যন্ত ভ্রমণে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ভাড়া দিতে হবে বলে জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আর মেট্রোরেলের প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া পাঁচ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ফার্মগেট স্টেশন থেকে উঠে কারওয়ান বাজারে নামলেও এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনের সর্বনিম্ন ২০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। তবে একই ভাড়া দিয়ে যাওয়া যাবে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন পর্যন্ত। আর ফার্মগেট থেকে সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনের ভাড়া ৩০ এবং কমলাপুরের ৪০ টাকা।

অন্যদিকে কমলাপুর স্টেশন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া ২০ টাকা। মাঝখানে দুটি স্টেশন—মতিঝিল ও সচিবালয়ের ভাড়াও একই। আর কমলাপুর স্টেশন থেকে শাহবাগ ও কারওয়ান বাজারের ভাড়া ৩০ টাকা, ফার্মগেট ৪০ টাকা, বিজয় সরণি ও আগারগাঁও ৫০ টাকা, শেওড়াপাড়া ৬০ টাকা, কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন ৭০ টাকা, মিরপুর-১১ ও পল্লবী ৮০ টাকা এবং উত্তরা সাউথ স্টেশনের ভাড়া ৯০ টাকা।

তবে স্মার্ট কার্ডে ভাড়া পরিশোধ করলে ১০ শতাংশ রেয়াত প্রদানের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে মেট্রোরেল পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

কোম্পানি সূত্র জানিয়েছে, মেট্রোরেলে চলাচল করতে সাপ্তাহিক, মাসিক, পারিবারিক কার্ড আগে থেকে কিনতে হবে। মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে থাকা মেশিনেও কার্ড রিচার্জ করা যাবে। আরেকটি কার্ড সাময়িক, যা প্রতি যাত্রায় দেওয়া হবে। স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যের ভাড়া দিয়ে এ কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। এটিও স্মার্ট কার্ডের মতো। ভাড়ার অতিরিক্ত যাতায়াত করলে এ কার্ড দিয়ে দরজা খুলবে না। সে ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের কাছে বাড়তি ভাড়া পরিশোধ করে বের হতে হবে।

প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ ও প্রস্থানের সময় যাত্রীদের কার্ড পাঞ্চ করতে হবে, না হলে দরজা খুলবে না।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যাত্রী চলাচল শুরু হলে মেট্রোরেল ভোরে দুই দিক থেকে যাত্রা করবে। প্রাথমিকভাবে রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে ট্রেন। শুরুতে ১০ মিনিট অন্তর চলবে। পর্যায়ক্রমে এক ট্রেনের সঙ্গে অন্য ট্রেনের সময়ের পার্থক্য কমে আসবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে তিন মিনিট পরপর মেট্রোরেল চলার কথা রয়েছে। শুরুতে দৈনিক ৪ লাখ ৮৩ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন।

উত্তরা (দিয়াবাড়ি) থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ চলছে। ইতিমধ্যে, সরকার মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার মেট্রোরেল সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বছর ১৬ ডিসেম্বর থেকে মেট্রোরেল চালুর কথা জানালেও শুরুতে শুধু উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে মেট্রোরেল চলবে। ২০২৪ সালের জুনে মেট্রোরেল প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।

বর্তমানে ঢাকায় বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা। আর মহানগরে কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া ২ টাকা ৪৫ পয়সা। তাই মেট্রোরেলের ভাড়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে।

Follow Us on Google News!

Stay updated with our latest news and articles directly from Google News.

Follow on Google News

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

© 2025 Edu Daily 24. All rights reserved.

Powered by Edu Daily 24.