ওষুধ শিল্পে চীন এখন বিশ্বে দ্বিতীয়। চীনের আবিষ্কৃত নতুন ওষুধগুলো ক্রমশ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি অর্জন করছে। আর তাই এই খাতের গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে চীনের শীর্ষস্থানীয় সংস্থাগুলো।
২০২৫ সালের প্রথমার্ধে, চীনে উদ্ভাবনী ওষুধগুলোর ৭২টি আউট-লাইসেন্সিং লেনদেন হয়েছিল। ২০২৪ সালের পুরো বছরে হয়েছিল ৯৪টি লেনদেন। মোট লেনদেন ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২৪ সালের পুরো বছরের চেয়ে ১৬ শতাংশ বেশি।
২০২৩ সালের অক্টোবরে, চুনশি বায়োসায়েন্সেস-এর তৈরি অ্যান্টি-পিডি-১ মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি হলো চীনা কোম্পানির তৈরি প্রথম নতুন ওষুধ যা মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ প্রশাসনের অনুমোদন পেয়েছিল। এখন চুনশির জুনশির পিডি-১ ৪০টি দেশ ও অঞ্চলে অনুমোদন পেয়েছে।
কোম্পানির একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার মতে, ওষুধের উন্নয়ন ও উৎপাদনে কোম্পানির সফল তালিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
শাংহাই চুনশি বায়োসায়েন্সেস-এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার চাং চুওবিং জানালেন, ‘আমরা ২০১৮ সালে হংকং স্টক এক্সচেঞ্জে এবং ২০২১ সালে শাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ স্টার মার্কেটে তালিকাভুক্ত হয়েছিলাম। আইপিওর সময় আমরা যে তহবিল সংগ্রহ করেছি তা আমাদের গবেষণা, উন্নয়ন এবং উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।’
স্নায়ুবিজ্ঞান এবং অনকোলজিতে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আরেক শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি সিমসিয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল গ্রুপও একাধিক উদ্ভাবনী ওষুধ চালু করেছে।
সিমসিয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল গ্রুপের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা চৌ কাওবো জানালেন, ‘প্রকৃত উদ্ভাবন মানেই যে শতভাগ নতুন উপকরণের ওষুধ হবে তা নয়। এক্ষেত্রে বিশেষ কোনো অণুর ওপর নয়, বরং রোগীর ওপর মনোযোগ দেওয়া উচিত। আমরা সেই পথেই গবেষণা করে থাকি।’
চীনা ওষুধ নির্মাতারা নিজেদের কেবল পণ্য বিক্রেতাই ভাবেন না। তারা এমন প্ল্যাটফর্ম তৈরির কথা ভাবছেন, যা চীনের বাইরেও সহজে অংশীদারিত্বমূলক পণ্য তৈরি করতে পারে। সিমসিয়ার কোম্পানির কথাই ধরা যাক। প্রতিষ্ঠানটির তৈরি টি-সেল এনগেজার প্ল্যাটফর্ম এমনভাবে তৈরি যা তাদের নতুন কোনো ওষুধকে সহজেই চীনের বাইরে উৎপাদনের লাইসেন্স সুবিধা দিতে পারে।
আর এমন সব সুবিধার কারণেই ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে চীনের আবিষ্কৃত ওষুধের জন্য আউট-লাইসেন্সিং চুক্তির মূল্য প্রায় ৬৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
লেখক: ফয়সল আবদুল্লাহ
সূত্র: সিএমজি