চীনে পারমাণবিক জ্বালানি এখন শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনের মধ্যেই সীমিত নয়; এটি স্বল্প-কার্বন জীবনযাপনেরও গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। শেনচেন কনভেনশন অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে শুক্রবার শেষ হওয়া ‘চতুর্থ চীন পারমাণবিক জ্বালানি উচ্চমান উন্নয়ন সম্মেলন ও শেনচেন আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শিল্প উদ্ভাবন মেলায়’ উঠে এসেছে এ তথ্য। এতে অংশ নিয়েছে বিভিন্ন দেশে ছয় শতাধিক প্রতিষ্ঠান ও গবেষণা সংস্থা।
উত্তর চীনে কয়লাভিত্তিক হিটিং সিস্টেমের কারণে শহরগুলোতে মারাত্মক ধোঁয়া তৈরি হয়। পারমাণবিক তাপ সরবরাহ প্রযুক্তি সেখানে রূপান্তরমূলক ভূমিকা রাখছে। রিঅ্যাক্টরের বাড়তি তাপ ব্যবহার করে শীতের সময়ে প্রাকৃতিক গ্যাসের ঘাটতি কমানো হচ্ছে।
চীনের প্রথম বাণিজ্যিক পারমাণবিক তাপ প্রকল্প নুয়ানহ্য-১। ছয় মৌসুমে এটি হাইয়াং ও রুশান শহরের ৪ লাখ পরিবারকে পরিচ্ছন্ন তাপ সরবরাহ করেছে।
এ প্রকল্পের প্রকৌশল বিভাগের উপ-পরিচালক চাং চোংওয়েই বলেন, ‘পারমাণবিক তাপ এখন অঞ্চলভিত্তিক পরীক্ষার বাইরে গিয়ে বড় পরিসরে বাণিজ্যিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। নিরাপত্তা, কার্বন হ্রাস ও অর্থনৈতিক সুবিধার কারণে এটি পরিচ্ছন্ন তাপের বড় শক্তি।’
শানতোং নিউক্লিয়ার পাওয়ারের রাসায়নিক ও পরিবেশ সুরক্ষা বিভাগের উপ-প্রধান ওয়াং লিনহুই জানান, ২০২৪-২৫ মৌসুমে নুয়ানহ্য-১ প্রকল্পের মোট তাপ সরবরাহ এলাকা প্রায় ৫ লাখ বর্গমিটার বেড়েছে। ২০২৬ সালে এটি ছিংতাও শহরে পরিচ্ছন্ন তাপ সরবরাহ করতে পারবে।
সাশ্রয়ী সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদনের পথ দ্রুত খুলছে উচ্চ-তাপমাত্রার পারমাণবিক রিঅ্যাক্টর। ৭০০–৯৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপ ব্যবহার করে এই রিঅ্যাক্টরগুলো বিদ্যুৎভিত্তিক ইলেক্ট্রোলাইসিসের তুলনায় আরও দক্ষভাবে হাইড্রোজেন উৎপাদন করতে পারে।
বর্তমানে শিল্প হাইড্রোজেনের বড় অংশ আসে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে। এতে ভবিষ্যতের উচ্চ-দক্ষ, শূন্য-নির্গমনের চাহিদা পূরণ করতে পারে না। সেই জায়গায় পরিবেশবান্ধব বিকল্প তৈরি করছে পারমাণবিক শক্তি।
২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত থিয়ানওয়ান পারমাণবিক কেন্দ্রের হাইড্রোজেন প্রকল্প ৩০ হাজার ঘনমিটার হাইড্রোজেন উৎপাদনের মাইলফলক ছুঁয়েছে। প্রকল্পটি ৯০ শতাংশ দক্ষতা ও ৯৯.৯৯৯ শতাংশ বিশুদ্ধতার পিইএম ইলেক্ট্রোলাইসিস প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এটি দেখাচ্ছে—পরিবহন ও শিল্পে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে পারমাণবিক শক্তি-নির্ভর হাইড্রোজেন ব্যবহার সম্ভব।
পারমাণবিক লবণমুক্ত পানি: উপকূলীয় অঞ্চলের পানি নিরাপত্তা উপকূলীয় অঞ্চলে পানি সংকট মোকাবেলায় চীন পারমাণবিক প্রযুক্তির সঙ্গে সমুদ্রের পানি বিশুদ্ধকরণ প্রকল্প যুক্ত করেছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এ ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে।
চীন ইতোমধ্যে ছাওফেইথিয়ান প্রকল্প সম্পন্ন করেছে, যা প্রতিদিন ৫০ হাজার ঘনমিটার বিশুদ্ধ পানি তৈরি করছে। হাইয়াং পারমাণবিক কেন্দ্র আবার তাপ ও পানি উৎপাদনের সমন্বিত প্রযুক্তি চালু করেছে, যা প্রতিদিন ১২০ টন বিশুদ্ধ পানি দিচ্ছে।
ফয়সল/শুভ
তথ্য ও ছবি: সিজিটিএন
বেসামরিক ব্যবহারে নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে চীনের পারমাণবিক জ্বালানি
Connect With Us:
Advertisement
Our Editorial Standards
We are committed to providing accurate, well-researched, and trustworthy content.
Fact-Checked
This article has been thoroughly fact-checked by our editorial team.
Expert Review
Reviewed by subject matter experts for accuracy and completeness.
Regularly Updated
We regularly update our content to ensure it remains current.
Unbiased Coverage
We strive to present balanced information.