শিক্ষক দিবস ২০২২ : সরকারিভাবে উদযাপনের কর্মসূচি ও নির্দেশনা
শিক্ষক দিবস ২০২২ পালিত হবে ২৭ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার)। প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে সারাদেশে শিক্ষক দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দিবসটি উদযাপনে সব জেলা-উপজেলায় র্যালি, আলোচনা সভা, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি এবং স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনগুলোর মাধ্যমে রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করতে বলা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী ২৭ অক্টোবর দেশব্যাপী শিক্ষক দিবস উদযাপন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় হয়েছে। কেন্দ্র থেকে মাঠ পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হবে। দিবসটি সফলভাবে আয়োজনের অংশ হিসেবে সব স্তরের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করে (প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, কলেজ, কারিগরি ও মাদরাসা) বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। অধিদপ্তরের পাঠানোর নির্দেশ অনুসরণ করে যথাযথ মর্যাদায় শিক্ষক দিবস উদযাপন করতে হবে।
২৭ অক্টোবর ২০২২ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে দিবসটি উদযাপনের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এসব অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ।
ঢাকা মহানগরীর সব সরকারি বেসরকারি স্কুল ও কলেজ থেকে ১০ জন করে শিক্ষককে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বলেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। ২৭ অক্টোবর সকাল ৮টার মধ্যে ওসমানী মিলনায়তনে উপস্থিত হতে হবে শিক্ষকদের।
শিক্ষক দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে কর্মসূচি
দিবসটি উদযাপনের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘শিক্ষকদের হাত ধরেই শিক্ষা ব্যবস্থার রূপান্তর শুরু’ প্রতিপাদ্যকে কেন্দ্র করে ৫ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালন করা হয়। একই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আগামী ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশে শিক্ষক দিবস উদযাপন করা হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর দিবসটি উদযাপনে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করবে। জাতীয় পর্যায়ে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালনের পাশাপাশি বিভাগীয় শহর এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
- শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত সব দপ্তর ও তাদের আওতাধীন জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সব অফিস এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা দাপ্তরিক ও প্রতিষ্ঠানিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখে আগামী ২৭ অক্টোবর শিক্ষক দিবস উদযাপন করবেন। কেন্দ্রীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে এসব কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।
- মহানগরে অবস্থিত থানা শিক্ষা অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মহানগরীর আয়োজনে অংশগ্রহণ করবে। মহানগরের বাইরে অবস্থিত উপজেলা শিক্ষা অফিস ও অধীনস্থ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো উপজেলা পর্যায়ের অনুষ্ঠান উদযাপন করবে।
- শিক্ষক দিবস উদযাপনে সব স্তরের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করে (প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, কলেজ, কারিগরি ও মাদরাসা) কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানের আদলে বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করতে হবে। কেন্দ্র থেকে সরবরাহকৃত (ব্র্যাকের সহযোগিতায়) নির্ধারিত ডিজাইনের ব্যানারে জেলা-উপজেলার নাম সংযোজন করে নিতে হবে। তবে, অধিদপ্তর জানিয়েছে, ব্যানারের ডিজাইন অপরিবর্তীত রেখে আকার পরিবর্তন করা যেতে পারে। স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে র্যালি আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা নিতে হবে।
- বিভিন্ন পর্যায়ে যেসব শিক্ষক শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করেছেন তাঁদেরকে সম্মান প্রদর্শন করে র্যালির প্রথম সারিতে রাখা যেতে পারে। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাইলে নিজ উদ্যোগে তাদের প্রতিষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচন ও সম্মাননা (উপহার, ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট) দিতে পারে। র্যালিটি বর্ণাঢ্য করার জন্য কেন্দ্র থেকে সরবরাহ করা ডিজাইনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব উদ্যোগে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড তৈরি করা যেতে পারে।
- র্যালি সুশৃঙ্খল করার জন্য স্কাউট বিএনসিসি ও গার্লগাইডসের সহায়তা নেয়া যেতে পারে। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব উদ্যোগে র্যালির পর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ‘শিক্ষকদের হাত ধরেই শিক্ষা ব্যবস্থার রূপান্তর শুরু’ শিরোনামে আলোচনা সভার আয়োজন করা যেতে পারে। র্যালি ও আলোচনা সভার স্থির চিত্র ও ভিডিও সংরক্ষণ করতে হবে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। র্যালি আয়োজন ও অন্যান্য কর্মসূচি উদযাপনের ক্ষেত্রে আইসিটিফোরই অ্যাম্বাসেডর শিক্ষকদের সম্পৃক্ত করা যেতে পারে।
- র্যালিটি বর্ণাঢ্য করার জন্য দেশীয় সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যান্ড, সংগীত, নাটিকা উপস্থাপন করা যেতে পারে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে র্যালি এবং অন্যান্য কর্মসূচি স্থানীয় গণমাধ্যমের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সব আয়োজনে স্থানীয় পর্যায়ের গন্যমান্য ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে।
- শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনে বা সুবিধাজনক স্থানে তিনটি গাছের চারা রোপণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ১টি ফলদ, ১টি বনজ ও ১টি ভেষজ গাছের চারা রোপণ করতে বলেছে শিক্ষা অধিদপ্তর। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে রেড ক্রিসেন্ট, সন্ধানী, বাঁধন ইত্যাদি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে রক্তদান কর্মসূচীর আয়োজন করা যেতে পারে।
জেলা-উপজেলা কমিটি
শিক্ষক দিবস উদযাপন সর্বাঙ্গীনভাবে সফল করতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করতে হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের পুরাতন বৃহৎ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষরা এসব কমিটির আহ্বায়ক হবেন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, কারিগরি প্রতিষ্ঠান প্রধান, মাদরাসার সুপার, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা সদস্য হিসেবে থাকবেন।
জেলা পর্যায়ের কমিটিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সদস্য হবেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। আর উপজেলা পর্যায়ের কমিটিতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (প্রাথমিক) সদস্য হবেন এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বা একাডেমিক সুপারভাইজার সদস্য সচিবের দায়িত্ব পাবেন। প্রয়োজনে আরো একাধিক সদস্যকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।
আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক ও উপপরিচালকরা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কমিটি সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষক দিবস উদযাপন সার্বিক সমন্বয় ও তদারকি করবেন।
সরকারি বরাদ্দ নেই
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ আয়োজনে সরকারি বরাদ্দ নেই। নিজস্ব উদ্যোগে (শিক্ষা অফিস) এ আয়োজন সম্পন্ন করতে হবে। শিক্ষক দিবস উদযাপানের জন্য শিক্ষকদের কাছ থেকে কোন ধরণের চাঁদা গ্রহণ করা যাবে না। তবে কোন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছায় সহযোগিতা করতে চাইলে তা গ্রহণ করা যেতে পারে।
শিক্ষক দিবস সংক্রান্ত অধিদপ্তরের নির্দেশনা ২০২২
- শিক্ষক দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা pdf
- শিক্ষক দিবস ২০২২ সংক্রান্ত নোটিশ pdf
শিক্ষক দিবস ২০২২ এর প্রতিপাদ্য
২০২২ সালের শিক্ষক দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে হচ্ছে “শিক্ষকদের হাত ধরেই শিক্ষা ব্যবস্থার রূপান্তর শুরু”।
শিক্ষক দিবস ২০২২ কবে ও এটি কত তম?
শিক্ষক দিবস বাংলাদেশে ২৭ অক্টোবর পালিত হয়। তবে সরকারিভাবে ২০২২ সালে প্রথমবারের আনুষ্ঠানিকভাবে এই দিবস মতো পালিত হবে।