আব্দুর রাকিব পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ৪১তম বিসিএসে পররাষ্ট্র ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। এটা ছিল তাঁর প্রথম ভাইভা। ভাইভা বোর্ডে ছিলেন ২৫ মিনিটের মতো। তাঁর চাকরি পাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা শুনেছেন আব্দুন নুর নাহিদ
আমি : আসসালামু আলাইকুম।
এক্সটার্নাল-১ : ওয়ালাইকুম আসসালাম।
কেমিস্ট্রিতে পড়েছেন। কোন ইনস্টিটিউশন?
আমি: স্যার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
এক্সটার্নাল-১ : বই পড়েন? সাহিত্যে কোন কোন লেখকের বই বেশি পছন্দ করেন?
আমি : জি স্যার। আমার প্রিয় লেখক শরত্চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। এ ছাড়া বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা খুবই ভালো লাগে।
এক্সটার্নাল-১ : আধুনিক যুগের মানে হাল আমলের কোনো লেখকের বই পড়েন না?
আমি : জি স্যার, চেষ্টা করি পড়ার।
এক্সটার্নাল-১ : শওকত আলীর বই পড়েছেন?
আমি : জি স্যার, পড়েছি।
এক্সটার্নাল-১ : তাই নাকি। এই বইয়ের কোন দিকটি ভালো লেগেছে? কাহিনিটি একটু আমাদের শোনান।
(আমি বিস্তারিত বলেছি)
এক্সটার্নাল-১ : মার্কেসের বই পড়েন?
আমি : না স্যার, তবে উনার “One Hundred Years Of Solitude” বইটির বাংলা রিভিউ বা সমালোচনা পড়েছি।
এক্সটার্নাল-১ : বিদেশি কোন কোন সাহিত্যিকের বই পড়েছেন?
আমি : খুব বেশি পড়িনি স্যার। মার্ক টোয়েনের ‘হাকলবেরি ফিন’, পাওলো কোয়েলহোর ‘দ্য আলকেমিস্ট’, জর্জ এলিয়টের ‘সাইলাস মারনার’সহ উইলিয়াম শেকসপিয়ারের কিছু বই পড়েছি স্যার।
এক্সটার্নাল-১ : আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসবিষয়ক কোনো বই পড়েছেন?
আমি : জি স্যার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা তিনটি বই পড়েছি…
এক্সটার্নাল-১ : আমাদের জিডিপির কী অবস্থা?
আমি : স্যার, আমরা এখন একটি মধ্যম আয়ের দেশ। আমাদের মোট জিডিপি প্রায় ৪৪৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার (তখন এটিই ছিল)।
এক্সটার্নাল-১ : আপনার তো প্রথম পছন্দ বিসিএস পররাষ্ট্র। এশিয়ার পাঁচটি ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দেশের নাম বলুন?
আমি : স্যার, পিপলস রিপাবলিক অব চায়না, জাপান, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব।
এক্সটার্নাল-১ : শেষেরটি তো হয়নি।
আমি : দুঃখিত স্যার।
এক্সটার্নাল-১ : আফ্রিকার একটি ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দেশের নাম বলুন।
আমি : স্যরি স্যার, এটি আমার জানা নেই।
এক্সটার্নাল-১ : বাংলাদেশে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব কী? (আমি বিস্তারিত বলেছি)
এক্সটার্নাল-১ : আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণ কী কী?
(আমি বিস্তারিত বলেছি)
এক্সটার্নাল-১ : আমাদের দেশ তো জনবহুল দেশ, জনসংখ্যা কমানো দরকার কি না?
আমি : জি স্যার, অবশ্যই। কমানো দরকার। এ ক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। পাশাপাশি আমরা এই বিপুল জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করছি।
এক্সটার্নাল-১ : নিরাপদ খাদ্যের ব্যাপারে জনগণকে কিভাবে সচেতন করবেন?
(ওই দিন ওয়ার্ল্ড ফুড সেফটি ডে ছিল। আমি বিস্তারিত বলেছি।)
এক্সটার্নাল-২ : এআই কী? এর উপাদানগুলো কী কী?
আমি : স্যার, এআই মানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এর উপাদানগুলো হলো রোবটিকস, ব্লকচেইন, ক্লাউড কম্পিউটিং, মেশিন লার্নিং ইত্যাদি।
এক্সটার্নাল-২ : চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করেছেন কি না।
আমি : জি স্যার। আমি ভাইভা প্রস্তুতির সময় বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর সংগ্রহে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করেছি।
এক্সটার্নাল-২ : রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্রে জ্বালানি হিসেবে কী ব্যবহার করা হবে?
আমি : স্যার, ইউরেনিয়াম ২৩৫।
চেয়ারম্যান : নৈতিক অবক্ষয় কী?
আমি : স্যার, মানুষের মাঝে সামাজিক ও চারিত্রিক মূল্যবোধের অভাব বা অনুপস্থিতিকে নৈতিক অবক্ষয় বলে।
চেয়ারম্যান : সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান কী?
আমি : দুঃখিত স্যার (ওই মুহূর্তে এটা একদমই মাথায় আসছিল না)।
চেয়ারম্যান : বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উত্সগুলো কী কী? সৌরশক্তি ও উইন্ডমিলে বাংলাদেশে প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনাগুলো কী কী?
(আমি বিস্তারিত বলেছি। ভাইভা শেষে ধন্যবাদ ও সালাম দিয়ে বের হয়েছি)।
সূত্র: কালের কণ্ঠ