তাজবীউল ইসলাম ইসকেম পড়াশোনা করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ৪১তম বিসিএসে তিনি প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। ভাইভা বোর্ডে ছিলেন ১৮ মিনিট। তাঁর ভাইভার অভিজ্ঞতা শুনেছেন আব্দুন নুর নাহিদ
চেয়ারম্যান : আপনার নাম দেখছি, তাজবীউল ইসলাম ইসকেম, বেশ আনকমন নাম। এই ইসকেম নামের অর্থ কী?
আমি : (নাম নিয়ে প্রশ্ন করতে পারে এ রকম ধারণা ছিল) স্যার, ইসকেম নামটা ইংরেজি Scheme শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা।
চেয়ারম্যান : বাহ, চমত্কার অর্থ। আপনি তো ইঞ্জিনিয়ার। আপনি কিভাবে ‘স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান’ কাজে লাগাবেন আপনার সার্ভিসের ক্ষেত্রে? ইঞ্জিনিয়ারিং পারসপেক্টিভ থেকে বলুন।
আমি : স্যার, ইঞ্জিনিয়ারিং সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা মূলত তিনটি ধাপে পরিকল্পনা সাজাই।
প্রথমত, সমস্যাবিষয়ক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা।
দ্বিতীয়ত, সম্ভাব্য সমাধানগুলোর তালিকা তৈরি করা।
তৃতীয়ত, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও উপযুক্ত সমাধানটি বেছে নেওয়া।
আমি বিশ্বাস করি, এভাবে সার্ভিসের সময় প্রশাসনিক ক্ষেত্রে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ধাপে ধাপে কৌশল সাজিয়ে নিলে সব সময় সময়োপযোগী সমাধান ও বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হবে।
চেয়ারম্যান : বাহ, সুন্দর উত্তর। বাস্তবে আসলেই এভাবে করবেন তো?
আমি : ইনশা আল্লাহ স্যার। সার্ভিসে যোগদানের সুযোগ পেলে অবশ্যই সর্বোচ্চ চেষ্টা করব প্রতিটি কাজ বিচক্ষণতার সঙ্গে করার।
চেয়ারম্যান : আপনার প্রথম পছন্দ তো প্রশাসন। ধরুন, আপনার পোস্টিং উপকূলবর্তী কোনো এলাকায়। এদিকে ঘূর্ণিঝড় আসন্ন। আপনি কিভাবে আপনার এলাকার মানুষদের মনোবল জোগাতেন এবং নিরাপদ আশ্রয়স্থলে যেতে অনুপ্রাণিত করতেন?
আমি : গুছিয়ে এলাকাবাসীর উদ্দেশে একটা ভাষণের মতো করে উত্তর করলাম। দুই মিনিট বলার পর থামতে বললেন।
চেয়ারম্যান : আচ্ছা আপনি সরকারের প্ল্যান বাস্তবায়নের কথা বললেন। আপনি কি জানেন সরকারের ২০৪১ সালের মধ্যে একটা পরিকল্পনা আছে?
আমি : জানি স্যার। ভিশন ২০৪১।
চেয়ারম্যান : আপনি কি মনে করেন ২০৪১ সালের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব?
আমি : জি স্যার। আমি অবশ্যই বিশ্বাস করি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের প্রতিশ্রুতি যেভাবে সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করেছেন, তারই ধারাবাহিকতায় এবং তার দক্ষ নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশও গড়ে তুলতে সক্ষম হব।
চেয়ারম্যান : আপনি কি জানেন বাংলাদেশে এখনো বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে? কেন?
আমি : স্যার, এশিয়ার বিভিন্ন দেশ যেমন থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম আমাদের তুলনায় অনেক বিদেশি বিনিয়োগ লাভ করে। কারণ আমাদের দেশে ক্ষেত্র বিশেষে বিনিয়োগকারীরা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, দক্ষ মানবসম্পদের অভাব, লাল ফিতার দৌরাত্ম্য প্রভৃতির সম্মুখীন হয়। এ কারণে বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয় না।
চেয়ারম্যান : সরকার কী কী উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমানে এসব নিরসনে?
আমি : স্যার, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার শুল্ক ও মূসকে বড় অঙ্কের ছাড় দিচ্ছে বিনিয়োগকারীদের জন্য। দীর্ঘমেয়াদি লভ্যাংশ স্থানান্তরের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। ইকোনমিক জোন এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক হচ্ছে, যেখানে এক ছাতার নিচে সব সুযোগ-সুবিধা বিনিয়োগকারীরা সহজেই পাবেন।
চেয়ারম্যান : একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আপনি পলিসি মেকিংয়ে আসতে চান। এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আরো পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে।
আমি : জি স্যার।
চেয়ারম্যান : বিনিয়োগকারীরা কোন সূচক দেখে বিনিয়োগ করে? সূচকগুলো কী?
আমি : Ease of Doing Business Index, Economic Vulnerability Index.
চেয়ারম্যান : এই সূচকগুলোতে বাংলাদেশের অবস্থান বলতে পারবেন?
আমি : দুঃখিত স্যার।
প্রথম এক্সটার্নাল : বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে লোন নিয়েছে সেটা তো জানেন? শর্তগুলো বলতে পারবেন?
আমি : জি স্যার।
- ব্যাংকঋণের সীমা, সুদহারের সীমা তুলে দেওয়া
- ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া
- মোট দেশজ উত্পাদনের (জিডিপি) তুলনায় রাজস্ব সংগ্রহের অনুপাত বৃদ্ধি করা।
(চেয়ারম্যান স্যার আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন)
চেয়ারম্যান : বাংলাদেশের বর্তমান ট্যাক্স জিডিপি রেশিও কত?
আমি : স্যার, ৭.৮ শতাংশ।
চেয়ারম্যান : এটা কত হওয়া উচিত?
আমি : স্যার, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অন্তত ১৫ শতাংশ হওয়া উচিত।
প্রথম এক্সটার্নাল : বাংলাদেশের ট্যাক্স জিডিপি রেশিও এত কম হওয়ার প্রধান কারণগুলো কী বলে মনে করেন?
আমি : স্যার, আমাদের দেশে এখন প্রায় ৮৭ লাখের বেশি ই-টিন নাম্বারধারী নাগরিক আছে। কিন্তু মাত্র ২৯ লাখ করদাতা তাঁদের আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করেন বছর শেষে। এখানে একটা বড় গ্যাপ আছে। এ ছাড়া আমাদের শুল্ক আদায় ও হিসাবের পদ্ধতি এখনো অনেকাংশে ম্যানুয়াল হওয়ায় এখানে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থেকে যায়।
প্রথম এক্সটার্নাল : আপনি সুন্দর একটি পয়েন্ট বললেন, ই-টিনধারী করদাতার রিটার্ন জমা দেওয়ার সংখ্যা বাড়াতে হবে। এটি কিভাবে করা যায়?
আমি : স্যার, সরকারি বিভিন্ন সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সর্বশেষ ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের কাগজ প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে করদাতারা বাধ্য হবেন উপযুক্ত সময়ে আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করতে।
আমি : সরকার পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল গার্মেন্টস সেক্টরের জন্য।
- দ্রুত টিকা আমদানির ব্যবস্থা।
- সুরক্ষা অ্যাপ তৈরি, যার সাহায্যে বিশাল জনগোষ্ঠীর টিকাদান কর্মসূচি সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছিল।
প্রথম এক্সটার্নাল: ঠিক আছে, আপনি এবার আসতে পারেন।
সূত্র: কালের কণ্ঠ
ভাইভা প্রশ্ন : বিনিয়োগকারীরা কোন সূচক দেখে বিনিয়োগ করে?
Content Freshness & Accuracy
Last updated: Sep 22, 2025
Verified
Published
Aug 7, 2025
Updated
Sep 22, 2025
Next Review
Mar 23, 2026
Our Freshness Pledge
We commit to regularly reviewing and updating our content to ensure it remains accurate, relevant, and trustworthy.
Learn About Our Review Process
Advertisement
Our Editorial Standards
We are committed to providing accurate, well-researched, and trustworthy content.
Fact-Checked
This article has been thoroughly fact-checked by our editorial team.
Expert Review
Reviewed by subject matter experts for accuracy and completeness.
Regularly Updated
We regularly update our content to ensure it remains current and relevant.
Unbiased Coverage
We strive to present balanced and unbiased information.