মৈত্রী রায় পড়াশোনা করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ৪১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে তিনি সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। এটা ছিল তাঁর প্রথম বিসিএস। ভাইভা বোর্ডে ছিলেন ৩০ মিনিটের মতো। মেধাক্রমে ছিলেন ২৬তম। তাঁর ভাইভার অভিজ্ঞতা শুনেছেন আব্দুন নুর নাহিদ আমি : স্যার, আমি আসতে পারি? চেয়ারম্যান : হ্যাঁ, ভেতরে আসো। আমি : প্রবেশ করে নমস্কার দিই। চেয়ারম্যান : তুমি কি এই প্রথম কোনো চাকরির ভাইভা দিচ্ছ? আমি : জি স্যার। চেয়ারম্যান : বলো তো আমি কিভাবে বুঝলাম—তুমি প্রথমবার ভাইভা দিচ্ছ? আমি : আমি তাড়াতাড়ি পেছনে একবার তাকিয়ে নিয়ে বললাম, স্যার নমস্কারটা আসলে আমার জন্য যে চেয়ার রাখা হয়েছে তার পাশে দাঁড়িয়ে দেওয়া উচিত ছিল, কিন্তু আমি অনেকটাই সামনে চলে এসেছি। চেয়ারম্যান : তোমার বুদ্ধি ভালো। অল্পতেই ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছ। তোমার ভাইভা শুরু করব একটা শতাংশ জিজ্ঞেস করে। তোমার বিশ্ববিদ্যালয়ের কত শতাংশ মেয়ে অ্যাডমিন প্রথম পছন্দ দেয়? আমি : স্যার, আমি সঠিক শতাংশটা বলতে পারব না। কারণ এটার ওপর কখনো কোনো সার্ভে করা হয়নি। তবে শুধু টেকনিক্যাল পরীক্ষা যারা দেয়, তারা ব্যতীত প্রায় সব মেয়েরই প্রথম পছন্দ অ্যাডমিন। সে ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা ৮৭ থেকে ৯৫ শতাংশও হতে পারে। চেয়ারম্যান : অ্যাডমিন প্রথম পছন্দ দেওয়ার কারণটা কী? আমি : প্রশাসন ক্যাডারে মেধাতালিকায় ১ থেকে ৭৭ জনের মধ্যে থাকলে সেক্রেটারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর যিনি মুখ্যসচিব, তিনি শুধু প্রশাসন ক্যাডার থেকেই হয়ে থাকেন। প্রশাসনিক কাজে বৈচিত্র্য রয়েছে, বিভিন্ন ডেপুটেশনে কাজ করা যায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে এই চাকরিটার মাধ্যমে সামাজিক অবস্থান আরো শক্তিশালী হয়। চেয়ারম্যান : তুমি কেন ক্যাডার হতে চাও? ক্যাডার মানেই তো জনসেবা। তোমার জনসেবার দরকার কী? আমি : স্যার, আমি সরকারি স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছি। সরকার অর্থাত্ জনগণের টাকায় পড়াশোনা করেছি। জনগণ আমার প্রতি উনাদের দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন আমার সময় হয়েছে উনাদের প্রতি আমার কর্তব্য পালনের। চেয়ারম্যান : তাহলে শিক্ষা ক্যাডার শেষে দিয়েছ কেন? এটা তো জনসেবা করার বড় উপায়। আমি : আমার বিষয়ে শিক্ষা ক্যাডারে পোস্ট সংখ্যা খুব কম, তাই শেষে দিয়েছি। চেয়ারম্যান : তুমি তো কথা বলো নেতাদের মতো। ভার্সিটিতে পলিটিকস করতে নাকি? আমি : না স্যার। চেয়ারম্যান : না কেন? পলিটিকস করা কি খারাপ? আমি : পলিটিকস করা মোটেও খারাপ নয়, কিন্তু সুষ্ঠু রাজনৈতিক জ্ঞানার্জন করার মতো আমার পারিবারিক কিংবা পারিপার্শ্বিক অবস্থা ছিল না। চেয়ারম্যান : তোমার প্রথম পছন্দ কী? আমি : বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার। চেয়ারম্যান : ধরো, এটা ১৯৭৪ সাল। তুমি কিউবায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। তোমার সামনে বসে আছেন কিউবার প্রেসিডেন্ট এবং প্রাইম মিনিস্টার। Now represent your country. আমি : Your excellency of honorable president and your excellency of honorable prime minister, good morning. Hope you all are doing well. This is me, Maitry Roy, newly appointed Bangladeshi diplomat in Cuba... এক্সটার্নাল-১ : স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য কত সাল? আমি : ২০৪১ সাল। এক্সটার্নাল-১ : স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি ভিত্তি আছে। সেগুলো কী কী? আমি : স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি। এক্সটার্নাল-১ : স্মার্ট সিটিজেন বলতে কী বোঝায়? আমি : যে যে বিষয়ে কাজ করে, তাকে সেই বিষয়ে আরো দক্ষ করে তোলা; একই সঙ্গে প্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার নামই স্মার্ট নাগরিক। এক্সটার্নাল-১ : একজন কৃষককে কিভাবে স্মার্ট বানাবে? আমি : ম্যানুয়াল কৃষিব্যবস্থার পরিবর্তে মেকানাইজেশন কৃষিব্যবস্থা চালু করতে হবে। কৃষিক্ষেত্রে ট্রাক্টর, সিড ড্রিলার, জাপানিজ রাইস ওয়েডার, ক্রপ কাটারের মতো যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হবে। ড্রোন, থিংস অব রোবটিকস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো উন্নত প্রযুক্তি এবং ধীরে ধীরে ইনকরপোরেট করতে হবে। এক্সটার্নাল-১ : যে মহিলা পাতা দিয়ে রান্না করে তাকে তুমি কিভাবে স্মার্ট বানাবে? আমি : পাতার পরিবর্তে বায়োগ্যাস এবং সোলার এনার্জি ব্যবহার করা যেতে পারে। চেয়ারম্যান : তুমি বললেই ওই মহিলা শুনবে কেন? আমি : আমি বললে হয়তো উনি শুনবেন না। সে ক্ষেত্রে মাঠকর্মী নিয়োগের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে বায়োগ্যাসের উপকারিতা সম্পর্কে ট্রেনিং দিতে হবে। পাতা দিয়ে রান্না করা পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ সেই বিষয়ে ডকুমেন্টস তৈরি করে গণমাধ্যমে প্রচার করা যেতে পারে। এক্সটার্নাল-২ : একজন সরকারি কর্মচারীর কী কী গুণ থাকা প্রয়োজন? আমি : নিষ্ঠা, সততা, সময়ানুবর্তিতা, বিচক্ষণতা, নেতৃত্বদানের ক্ষমতা, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়া। এক্সটার্নাল-২ : তুমি এনআইএস সম্পর্কে জানো? আমি : জি, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলপত্র। এক্সটার্নাল-২ : কত সালে এটা গৃহীত হয়? আমি : ২০১২ সালে। এক্সটার্নাল-২ : সরকারি কর্মচারীর গুণাবলি সত্, নিষ্ঠাবান হতে হবে, তাহলে সরকার এ ধরনের কৌশলপত্র কেন গ্রহণ করল? সত্-অসত্ ব্যাপারটা তো যার যার ইথিক্যাল ব্যাপার। কিন্তু সরকার তো জোর করে তার কর্মচারীদের সত্ বানাতে চাচ্ছে। এনআইএসের মতো জিনিস ইম্পোজ করছে। সরকার কি কাজটা ঠিক করছে? আমি : বেশির ভাগ সরকারি কর্মচারীই সত্ ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কিন্তু গুটিকয়েক অসত্ কর্মচারীর জন্য সম্পূর্ণ সেক্টরের বদনাম হয়। সরকারি কর্মচারী মানেই তাঁরা সরকারের বেতনভুক্ত এবং সরকারি অনেক সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। তাই সরকার যদি জনকল্যাণে এবং দেশের কল্যাণে তার কর্মচারীদের সত্ করার উদ্দেশ্যে কোনো কিছু ইম্পোজ করেও থাকে, তবে সরকার ঠিক কাজই করছে। চেয়ারম্যান : ঠিক আছে, তোমার ভাইভা শেষ। এবার আসতে পারো। সূত্র: কালের কণ্ঠ
ভাইভা প্রশ্ন : তুমি কি এই প্রথম চাকরির ভাইভা দিচ্ছ?
Content Freshness & Accuracy
Last updated: Sep 22, 2025
Verified
Published
Aug 7, 2025
Updated
Sep 22, 2025
Next Review
Mar 23, 2026
Our Freshness Pledge
We commit to regularly reviewing and updating our content to ensure it remains accurate, relevant, and trustworthy.
Learn About Our Review Process
Advertisement
Our Editorial Standards
We are committed to providing accurate, well-researched, and trustworthy content.
Fact-Checked
This article has been thoroughly fact-checked by our editorial team.
Expert Review
Reviewed by subject matter experts for accuracy and completeness.
Regularly Updated
We regularly update our content to ensure it remains current and relevant.
Unbiased Coverage
We strive to present balanced and unbiased information.