এ এইচ সবুজ, গাজীপুর: গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক দম্পতিসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শুক্রবার (৮ আগষ্ট ) রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) তাহেরুল হক চৌহান।
আলোচিত এ ঘটনার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। ফুটেজে দা, ছুড়ি ও চাপাতি হাতের যাদের দেখা গেছে, গ্রেফতারকৃত তিনজন তাদের মধ্যে ছিল।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছে, ঘটনার শুরুতে ভিডিওতে যে নারীকে দেখা গেছে, যে নারীকে কেন্দ্র হামলার ঘটনা গোলাপি নামের সেই নারী। এছাড়াও ফুটেজে চাপাতি হাতে (দাড়িওয়ালা এবং মাথায় ক্যাপ পড়া) কোপানোর জন্য যাকে দৌড়াতে দেখা যায় সেই ব্যক্তি ফয়সাল ওরফে কেটু মিজান।
অপরজন ফুটেজে যাকে সাদা সার্ট ও জিনসের প্যান্ট পড়া চাপাতি হাতে দাড়ানো সে যুবক স্বাধীন। এছাড়াও আল-আমিন নামের আরো একজনকে গ্রেফতার করেছে বাসন থানা পুলিশ। আসামিদের মধ্যে ফয়সাল ওরফে কেটু মিজান ও গোলাপী স্বামী- স্ত্রী।
তাদেরকে শুক্রবার (৮ আগষ্ট) আলাদা সময়ে মহানগরের সদর থানা মেট্রো থানাধীন সালনা এলাকা এবং তুরাগ থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ জনকে আটক করা হয়েছিল।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) তাহেরুল হক চৌহান।
তিনি বলেন, সাংবাদিক তুহিন হত্যার পর থেকেই পুলিশের একাধিক টিম বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছিল। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করার পর আসামিরদের সনাক্ত করা এবং তাদের অবস্থান জানার জন্য চেষ্টা অব্যাহত ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় আজ ওই চারজনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, তদন্তের সাথে আরো অনেক কিছু এখন বলা যাচ্ছে না। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করা যায় জড়িত সকলকে দ্রুতই গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত, গাজীপুর মহানগরীর ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত ৮টা দিকে একটি মার্কেটের ভিতর প্রকাশ্যে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। নিহত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮) দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন।
তিনি ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া থানার ভাটিপাড়া গ্রামের হাসান জামালের ছেলে তিনি। তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
জিএমপির বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্কমর্তা (ওসি) শাহীন খান জানান, সাংবাদিক তুহিন হত্যার ঘটনায় বাসন থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এর একটি মামলার বাদী হয়েছেন, নিহত সাংবাদিক তুহিনের বড় ভাই মো: সেলিম। অপর একটি মামলার বাদী, তুহিন হত্যার আগে সংগঠিত আরেকটি হামলার ঘটনায় আহত বাদশা মিয়ার ভাই। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় জিগ্যাসাবাদের জন্য ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে যাচাই করা হচ্ছে। উক্ত ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদেরকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হতে পারে। তদন্তের প্রয়োজনে এখনই তাদের নাম পরিচয় দিতে পারছি না।
তবে, পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃতরা সকলেই ছিনতাইকারী। তাদের ঘটনার পর রাতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা স্থানীয়ভাবে ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত।