আনসার ব্যাটালিয়ন বিল ২০২৩ : কী কী আছে বিলে
জাতীয় সংসদে আনসার ব্যাটালিয়ন বিল ২০২৩ উত্থাপন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আজ জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপনের প্রস্তাব করেন। বিলে বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের সংঘটিত অপরাধের বিচার করার জন্য সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ন আদালত গঠন করা যাবে এবং বিদ্রোহের মতো অপরাধের বিচার করার জন্য বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আদালত গঠন করা যাবে।
এই বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আদালতে বিদ্রোহের মতো অপরাধসমূহের জন্য মৃত্যুদন্ড, যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড বা অন্যূন ৫ বৎসর সশ্রম কারাদন্ড আরোপ করা যাবে। বিলে বলা হয়েছে মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ড কার্যকর করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্য ৯০ দিনের অধিক কারাদন্ডে দন্ডিত হলে তিনি সয়ংক্রিয়ভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত হবেন।
বিলটির উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, ১৯৯৫ সালে ব্যাটালিয়ন আনসার আইন (১৯৯৫ সালের ৪ নম্বর আইন) প্রণয়ন করা হয় । বিদ্যমান ব্যাটালিয়ন আনসার আইন, ১৯৯৫ এ বিদ্রোহ ও তদ্সংশ্লিষ্ট গুরুতর অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান নেই।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ জননিরাপত্তা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তাকরণসহ এতদ্সংশ্লিষ্ট কার্যাবলি সম্পাদনে আনসার ব্যাটালিয়নকে আরও দক্ষ করার আবশ্যকতা রয়েছে। এ ছাড়াও বিদ্রোহ সংঘটন সংক্রান্ত অপরাধ বিচারের বিধান অন্তর্ভুক্তকরণ এবং কর্মপরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাটালিয়ন আনসার আইন, ১৯৯৫-এর অধিক সংশোধনকল্পে যুগোপযোগী একটি নতুন আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা থাকায় আনসার ব্যাটালিয়ন আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করা হচ্ছে।
এই উদ্দেশ্য ও কারণে আনসার ব্যাটালিয়ন আইন, ২০২৩ বিল আকারে জাতীয় সংসদের বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলটি অধিকতর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করেন।
আনসার ব্যাটালিয়ন বিল ২০২৩ প্রত্যাহারের দাবি বিএনপির
আনসার বাহিনীকে অপরাধী আটক, তল্লাশি ও মালামাল জব্দ করার ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করে সোমবার জাতীয় সংসদে একটি বিল আনা হয়েছে। ‘আনসার ব্যাটালিয়ন বিল-২০২৩’ নামের এ বিলটি উপস্থাপনের বিরোধিতা করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সংসদে একটা বিল এসেছে, এটা শুধু দুশ্চিন্তার নয়, আতঙ্কের বিষয়। গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে এরা ধ্বংস করে দিচ্ছে, ইনস্টিটিউশনগুলো ধ্বংস করে দিচ্ছে। এখন সারা পৃথিবীতে পুলিশ একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যাদের গ্রেফতার করার ক্ষমতা দেওয়া হয়। এখানে আনসারকে গ্রেফতার করার ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। যাদের বেসিক ট্রেনিং পর্যন্ত নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, পুলিশের কিছু বিষয় আছে, এটা কিন্তু আলাদা জিনিস। এটা কোড অব কনডাক্ট (আচরণবিধি), আলাদা আইন- সবকিছু দ্বারা পরিচালিত হয়। আনসারের কাজটা আলাদা। তারা ভিন্ন প্রতিষ্ঠান, তাদের সেভাবে তৈরি করেছে। এ প্রতিষ্ঠানের যে আধুনিকীকরণ, এটা জিয়াউর রহমানই করেছেন। এখন এটাকে রাজনীতিকীকরণ করার নতুন ব্যবস্থা তারা নিতে যাচ্ছে আইন করে। আমরা এর নিন্দা জানাই। কোনোমতেই যাতে আইনটা না করা হয়, সে দাবি জানাচ্ছি।