২০২৪ সালে কর্মক্ষেত্রের দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২০২০ সালের চেয়ে ২৮ শতাংশ কমেছে চীনে। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের রাষ্ট্রীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী ওয়াং সিয়াংসি জানালেন এ তথ্য। তিনি আরও জানান, চতুর্দশ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২১-২০২৫) চলাকালীন উৎপাদন নিরাপত্তা ও দুর্যোগ মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে চীনে।
মন্ত্রী বলেন, ২০২৪ সালে ভয়াবহ ধরনের দুর্ঘটনার সংখ্যা প্রথমবারের মতো এক অঙ্কের ঘরে নেমে এসেছে, যা ২০২০ সালের তুলনায় ৪৪ শতাংশ কম। এ বছরও দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পাচ্ছে।
২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা আগের পাঁচ বছরের তুলনায় ৩১ শতাংশ কমেছে। একই সময়ে দুর্যোগে মৃত বা নিখোঁজ মানুষের সংখ্যাও ২৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ওয়াং শিয়াংসি জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় এখন জোর দেওয়া হচ্ছে সংকট ঘটার আগেই প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপে।
তিনি আরও বলেন, চীন ইতিমধ্যে একটি জাতীয় জরুরি কমান্ড সদরদপ্তর গড়ে তুলেছে, যা দিনরাত ২৪ ঘণ্টা অডিও ও ভিডিওর মাধ্যমে প্রদেশ, শহর ও জেলার কমান্ড সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত। এর ফলে একটি সমন্বিত, বহুস্তরীয় ও কার্যকর প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে।
চলমান পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা সময়ে চীন ৮৫টি জাতীয় পর্যায়ের জরুরি প্রতিক্রিয়া পরিচালনা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—২০২২ সালে সিছুয়ানে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প, একই বছরে ছোংছিংয়ের দাবানল এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেইজিং-থিয়েনচিন-হবেই অঞ্চলের বড় বন্যা।
এ সময় চায়না আর্থকোয়েক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মহাপরিচালক ওয়াং খুন জানান, গত পাঁচ বছরে ভূমিকম্প মোকাবিলায় প্রতিরোধমূলক ও ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। চীন পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ মহাদেশীয় দেশ। তাই গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে ভূমিকম্পের ঝুঁকি মূল্যায়ন ও সম্ভাব্য ক্ষতির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যাতে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিরোধ ও সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
শুধু ভূমিকম্পই নয়, চতুর্দশ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা সময়ে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে এক হাজারেরও বেশি জরুরি প্রতিক্রিয়া কার্যক্রম চালানো হয়েছে।
২০২৪ সালে চীন বিশ্বের বৃহত্তম ভূমিকম্প আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছে বলেও জানান ওয়াং খুন।
ফয়সল আবদুল্লাহ
সূত্র: সিএমজি বাংলা